পৃথিবীরও হয় হার্টবিট?
প্রকাশ: ১৮ মে, ২০২৫, ১০:০৮ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান

হৃদযন্ত্র বা হার্ট হচ্ছে মানুষের শরীরের অন্যতম অঙ্গ। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গ রক্তকে পাম্প করে। হৃদপিন্ড রক্তকে পাম্প করে বলেই শরীরের প্রতিটি অংশে রক্ত পৌঁছে যায়। বিভিন্ন বয়েসি মানুষের   নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় পরপর হার্টবিট হয়। মানুষের যেমন হার্টবিট হয় তেমনি কি হার্টবিট হয় পৃথিবীরও?  সঙ্গত কারণে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিজ্ঞানীদের মনে। কারণ পৃথিবীর একটি রহস্যময় কম্পন আক্ষরিক অর্থেই চমকে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের। পৃথিবীর গভীরে প্রতি ২৬ সেকেন্ডে একবার এমনই এক রহস্যময় কম্পন ঘটে যাচ্ছে যা অনেকটা মানুষের হার্টবিটের মতো! এসময় পৃথিবী খুব অল্পমাত্রায় কেঁপে উঠে! নির্দিষ্ট একটি জায়গা থেকে এ কম্পন শুরু হয় অতপর ছড়িয়ে পড়ে ভূপৃষ্ঠ জুড়ে।

কম্পনের মাত্রাটি আমরা না ধরতে পারলেও সিসমোমিটার যন্ত্রটি তা ঠিকই ধরতে পারে। ছোট ছোট তরঙ্গের এই পালস বিজ্ঞানীদের প্রথম নজরে আসে ১৯৬০ সালে। যদিও উৎসটি কোথায় সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত  হওয়া যায়নি। তবে টেক্সাসের উপকূলে সবচেয়ে পরিষ্কার রেকর্ড করা যায় এই কম্পন!

আশ্চর্যজনক এই ঘটনাটি বহু দশক ধরেই চমকে দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের। বিজ্ঞানের ভাষায় এই ক্ষীণ কম্পনকে বলা হচ্ছে ‘২৬ সেকেন্ড মাইক্রোসিসমিক ব্যান্ড’। ধারণা করা হচ্ছে এটি মহাসাগর থেকে উৎপন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে পৃথিবী জুড়ে।

কেন হচ্ছে এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। কেউ বলছেন, মহাসাগরীয় ঢেউ যখন উপকূলে আঘাত হানে তখন ছন্দময় ঢেউ কম্পনটি সৃষ্টি করে। কারও ধারণা, সমুদ্রের তলদেশে থাকা আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত কিংবা টেকটোনিক প্লেটের চলাচলের কারণেও এই কম্পন সৃষ্টি হতে পারে।

বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত এই রহস্যময় কম্পনের যথাযথ ব্যাখ্যা না দিতে পারলেও গবেষণা কিন্তু থেমে নেই। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো উন্মোচিত হবে এই কম্পনের রহস্য! সেই পর্যন্ত অপেক্ষা আমাদের করতেই হবে! তবে পৃথিবীর এই হার্টবিট আমাদের জানান দিচ্ছে, পৃথিবীর ভেতরেও চলছে বিস্ময়কর কিছু। আসলেই পৃথিবী রহস্যের আধার।

এনএইচ/