মুফতি জুবায়ের বিন আব্দুল কুদ্দুস
কুরবানী মূলত দুটি প্রকারে বিভক্ত: একটি হজ্বের কুরবানী বা দমে শুকুর, এবং অপরটি ঈদুল আযহার কুরবানী। অনেক হাজী সাহেব এই বিষয়টি জানেন না, ফলে তারা শুধুমাত্র হজ্বের কুরবানী (দমে শুকুর) করে থাকেন, কিন্তু ঈদুল আযহার কুরবানী করেন না। অথচ কিছু হাজী সাহেবের উপর ঈদুল আযহার কুরবানীও ওয়াজিব হয়। আজকের আলোচনা হবে এই দুটি কুরবানী সম্পর্কে।
১) হজ্বের কুরবানী বা দমে শুকুর
যে ব্যক্তি কিরান বা তামাত্তু হজ্ব (অর্থাৎ একই সফরে ওমরা ও হজ্ব করা) পালন করেন, তাদের জন্য শুকরিয়া হিসেবে একটি কুরবানী করা ওয়াজিব। এই কুরবানীটি “দমে শুকুর” বা “হজ্বের কুরবানী” নামে পরিচিত। এটি ঈদুল আযহার কুরবানীর অন্তর্ভুক্ত নয় এবং আলাদা হিসেবেই করা হয়।
২) ঈদুল আযহার কুরবানী
যে ব্যক্তি মক্কা মুকাররমা, মীনা, আরাফা, মুজদালিফা—এই স্থানগুলোতে কুরবানীর দিনগুলোসহ ১৫ দিন অথবা তার বেশি সময় অবস্থান করবেন, তাদের উপর ঈদুল আযহার কুরবানী ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ, তাদেরকে দুটি কুরবানী করতে হবে: একটি দমে শুকুর বা হজ্বের কুরবানী, এবং অপরটি ঈদুল আযহার কুরবানী।
কুরবানীর স্থান:
দমে শুকুর বা হজ্বের কুরবানী অবশ্যই হেরেমের সীমানার ভিতরে করতে হবে, অন্যত্র করার কোনো সুযোগ নেই।
ঈদুল আযহার কুরবানী যেকোনো স্থানে করা যেতে পারে, এমনকি নিজ দেশে করানোও সম্ভব।
মুসাফির হাজীদের বিধান:
যদি মক্কা, মিনা, আরাফা বা মুজদালিফা-য় কুরবানীর দিনগুলোসহ ১৫ দিন অবস্থান না করে, তাহলে সে মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে এবং মুসাফিরের উপর ঈদুল আযহার কুরবানী ওয়াজিব নয়। এ ক্ষেত্রে, দমে শুকুর বা হজ্বের কুরবানী করাই যথেষ্ট। তবে, ইচ্ছেমতো নফল কুরবানী হিসেবে ঈদুল আযহার কুরবানী করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র:
সহীহ মুসলিম ১/৪২১, ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৯/২৯৪, ফতোয়ায়ে শামী ৯/৪৯৭, বাদায়ে সানায়ে ৪/২০২, আদদুররুল মুহতার ৯/৪৬৩
লেখক: শিক্ষক, লালবাগ মাদ্রাসা ঢাকা
খতিব, আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ ঢাকা
পরিচালক, দাওয়াতুস সুন্নাহ বাংলাদেশ
এমএইচ/