আস-সুন্নাহর মাধ্যমে আবদুর রশিদের ভাগ্য ফেরার গল্প
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:২১ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

করোনায় চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। জমানো অর্থে ইজিবাইক কিনে টিকে থাকার চেষ্টা করছিলেন। এক রাতে ইজিবাইকটি ছিনতাই হয়ে গেলে পৃথিবী আঁধারে ছেয়ে যায় তার।

বলছি আবদুল রশিদের কথা। ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুরে তার বাড়ি। শৈশব থেকেই তীব্র অর্থসংকটের ভেতর বড় হয়েছেন। 

এসএসসি পাস করেই যোগ দিতে হয় কাজে। গ্রাম ছেড়ে পাড়ি জমান ঢাকায়। কাজ নেন গার্মেন্টসে।
প্রথম দিকে কাজ ছিল কঠিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিশ্রম করতে হতো। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। 

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষতা অর্জন করেন। প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি, বাচ্চাদের পোশাক—সবই বানাতে পারেন। শুধু তাই নয়, স্কুল ব্যাগ, মানিব্যাগ তৈরির কাজেও হয়ে ওঠেন দক্ষ। চার বছর গার্মেন্টসে কাজ করার পর হঠ্যাৎ মহামারি করোনা আসলে চাকরিচ্যুত হন তিনি। 

জমানো সামান্য পুঁজি নিয়ে ফিরে আসেন গ্রামে। ইজিবাইক কেনেন। কিন্তু এক রাতে ইজিবাইকটিও ছিনতাই হয়ে যায়। 

একমাত্র আয়ের পথ বন্ধ, হাতে টাকা নেই, সংসারে বৃদ্ধ বাবা, স্ত্রী ও সন্তান। দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েন আবদুর রশিদ। কিন্তু হাল ছাড়েন না। 

নতুন করে বাঁচতে হবে—এই বিশ্বাস নিয়ে বাজারে বসে ব্যাগ বানানো শুরু করেন। দিনরাত খাটেন; কিন্তু আয় বাড়ে না।

এই সীমাহীন দুর্ভোগের মাঝেও উঁকি মারে স্বপ্ন—ছোট্ট করে হলেও যদি একটা কাপড়ের কারখানা দিতে পারতেন! যেখানে তৈরি হবে শিশুদের জামা, পাঞ্জাবি, ব্যাগ, মানিব্যাগ! 

আবদুর রশিদের অধরা স্বপ্ন সত্যি হতেই যেন এ সময় আমাদের (আস-সুন্নাহ) উদ্যোক্তা তৈরি প্রকল্পের ঘোষণা দেওয়া হয়। আশান্বিত হয়ে ওঠেন তিনি। একটি কাপড়ের কারখানার আবেদন করেন।

কয়েক স্তরের যাচাই-বাছাইয়ের পর আবেদন গৃহীত হয় তার। কারখানার জন্য দুই ধাপে তাকে প্রদান করা হয় দুই লক্ষ টাকা। 

কারখানার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮০ হাজার টাকা (টিন, পিলার, কাঠ, বাঁশ, সিমেন্ট, বালু, মিস্ত্রি ব্যয় ইত্যাদি)। মেশিন বাবদ খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা (ইলেকট্রিক সেলাই মেশিন, লক মেশিন, কানসাই মেশিন, কাপড় কাটার মেশিন, আয়রন মেশিন ইত্যাদি)। ব্যাগের কাপড় ও অন্যান্য উপকরণ ক্রয় বাবদ খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। 
আবদুর রশিদ স্থানীয় মার্কেটে নিজের বানানো ব্যাগ বিক্রি করেন। ১০০ পিস ব্যাগ বিক্রি করলে তার লাভ হয় ৭/৮ হাজার টাকা। 

ঈদে, কারখানা চালুর ১৫ দিনের মধ্যে, এক মাদরাসা থেকে ১৫০ পিস পাঞ্জাবির অর্ডার পান। সেখান থেকে লাভ করেন ১২ হাজার টাকা। 

আবদুর রশিদের আশা—আল্লাহর রহমতে দিন যত যাবে, তার আয় ততই বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ।

[আস-সুন্নাহর প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমাদুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে গল্পটি তুলে ধরেন]

এমএইচ/