নৈশ মাদরাসা যাত্রাবাড়ী ঢাকা'র সবক উদ্বোধন অনুষ্ঠান
প্রকাশ:
১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:৩৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. মাদরাসা কর্তৃক পরিচালিত নৈশ মাদরাসা, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-এর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের সবক উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) মাগরিবের নামাজের পর শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান শেষ হয় রাত ১০টার দিকে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষক, আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরূ রহ. মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুরব্বি হাফেজ মাওলানা কারী সায়ীদুর রহমান। সবক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ার নাজেমে দারুল ইকামা হযরত মাওলানা মুফতী আব্দুর রাজ্জাক, জামিয়া ইসলামিয়া বায়তুন নূর, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-এর মুহতামিম মুফতী মনিরুজ্জামান, মদীনা মারকায মসজিদ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-এর ইমাম ও খতিব মাওলানা আনোয়ার প্রমুখ। মুফতী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এক সময় বয়স্কদের জন্য ইলম অর্জনের তেমন কোনো সুযোগ ছিল না। শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. মাদরাসা সেই ঘাটতি পূরণ করেছে—আলহামদুলিল্লাহ। নৈশ শাখা চালু করায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘ইলম অর্জনের পথে মৃত্যু হলে শহীদের মর্যাদা লাভ হয়। তাই সবাই ইলম অর্জনে মনোযোগী হোন এবং অন্যদেরও এতে উৎসাহিত করুন। আপনারা যারা নৈশ মাদরাসায় ভর্তি হয়ে ইলম শেখার চেষ্টা করছেন, আপনাদের এই প্রচেষ্টাকে আমি আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানাই। মুফতী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এখানে আসমানি ইলম অর্জনের উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছি, তাই আমাদের প্রতিটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হওয়া উচিত। আল্লাহ সন্তুষ্ট হলে ছোট কাজও বড় হয়ে যায়, আর যদি সন্তুষ্টি না থাকে, বড় কাজও তুচ্ছ হয়ে পড়ে। নিয়ত শুদ্ধ করা—এটাই মানুষের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। আমাদের সব কিছু আল্লাহর জন্য করতে হবে। আল্লাহর জন্যই আমল করতে হবে, এমনকি প্রয়োজনে কোনো আমল ত্যাগও করতে হবে। লোক দেখানোর জন্য কোনো কাজ করলে তার কোনো মূল্য থাকবে না, কারণ আমাদের সবারই মৃত্যু অবধারিত—তখন এসব কাজে কিছুই আসবে না। মাওলানা আনোয়ার বলেন, ‘আমরা যারা ইলম অর্জন করছি, আমাদের উচিত ইলমের যথাযথ কদর করা। কারণ, ইলম একটি অমূল্য সম্পদ। যার অন্তরে ইলমের আজমত নেই, সে কখনো প্রকৃত ইলম অর্জন করতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, ‘ইলমের পাশাপাশি আমলের গুরুত্ব অপরিসীম। আমল ছাড়া ইলমের কোনো উপকার নেই। নোংরা হৃদয়ে ইলম জমে না। তাই হৃদয়কে পবিত্র করে আল্লাহর কাছে ইলম প্রার্থনা করতে হবে। চোখের পানি ফেলে ইলম চাইতে হবে। যখন কোনো বান্দা আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে—তায়াল্লুক মাআল্লাহ সৃষ্টি করে—তখন চাওয়ার সাথেই ইলমের দরজা খুলে যায়।’ অনুষ্ঠানে নৈশ মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও তাদের হৃদয়ছোঁয়া অনুভূতি তুলে ধরেন। তারা মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান বড়দের জন্য দ্বীন শেখানোর এমন মহৎ উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। প্রসঙ্গত, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও কর্মব্যস্ত ভাইদের জন্য ইলমে দ্বীন শিক্ষার লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয়েছে এই নৈশ মাদরাসা। এক কথায়, যারা আলেম নন কিন্তু ইলমে দ্বীন শিখতে আগ্রহী—তাদের জন্যই এ বিশেষ উদ্যোগ। নৈশ বিভাগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো—যারা শৈশবে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পাননি, তাদেরকে খোদাভীরু, দ্বীনদার, পরহেজগার বানানো এবং ফরজ পরিমাণ দ্বীনি ইলম শিক্ষা দেওয়া, প্রয়োজনে যোগ্য আলেম হিসেবে গড়ে তোলাই এই প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য। এনএইচ/ |