টানা ১৩ বছর ধরে বেফাকের মেধা তালিকায় শীর্ষে মাদারীপুরের জামিয়াতুস সুন্নাহ
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল, ২০২৪, ০৭:০৬ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

|| হাসান আল মাহমুদ ||

গত ১৩ বছর যাবত কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল আরাবিয়া বাংলদেশ’র অধীন কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় মেধা তালিকার গৌরব স্থান ধরে রেখেছে মাদারীপুর শিবচরে অবস্থিত জামিয়াতুস সুন্নাহ

সাফল্যের এই ধারা বেফাকের ৪৭তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষাতেও বজায় রয়েছে। গত ৪ এপ্রিল ২৪ শে রমজান প্রকাশিত বেফাকের ফলাফলে দেখা যায়, মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে জামিয়াতুস সুন্নাহ প্রতিষ্ঠানটির ৫০৩ জন শিক্ষার্থী।

ফযীলত শ্রেণিতে ৮ জন, সানাবিয়া উলইয়াহ শ্রেণিতে ৩৫ জন, মুতাওয়াসসিতাহ শ্রেণিতে ১৫১ জন, ইবতিদাইয়াহ শ্রেণিতে ২৭৬ জন এবং হিফযুল কুরআন বিভাগে ৩৩ জন শিক্ষার্থী মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।

এর আগে ৪৪তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় জামিয়াতুস সুন্নাহ শিবচর মাদরাসা মোট মেধাস্থান পেয়েছে ২৬৫টি। এর মাঝে ফজিলত মারহালায় আবদুল আজীজ সারা দেশে প্রথম স্থান লাভ করে।

২০১৯ সালের বেফাক পরীক্ষায়ও ২৬৫ জন মেধাতালিকা পেয়ে জামিয়াতুস সুন্নাহ শিবচর প্রথম হয়েছিলো।

সে বছরের ফলাফলে দেখা যায়,  ‘ফজিলত’ (স্নাতক) বিভাগে ৭ জন, ‘সানাবিয়া উলইয়া’ (উচ্চ মাধ্যমিক) বিভাগে ১৭ জন, ‘মুতাওয়াসসিতাহ’ (নিম্ম মাধ্যমিক) এ ৯১ জন, ‘ইবতিদাইয়াহ’ (প্রাইমারী) তে ১৪২ জন ও ‘হিফজুল কুরআন’ এর ৮ জন ছাত্র রয়েছে।

বেফাকের মেধাতালিকায় জামিয়াতুস সুন্নাহ প্রথম স্থান লাভ করেছে। এবার নিয়ে মোট নয়বার প্রতিষ্ঠানটি প্রথমস্থান অধিকার করলো।

এভাবে গত ১৩ বছরে সফলতার ধারা বজায় ছিল মাদারীপুর শিপচরের এই জামিয়াতুস সুন্নাহ’র।

মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা এ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ আল ফরিদী বলেন, ‘সফলতার জন্য সর্বপ্রথম মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করছি। কারণ তিনিই সফলতার প্রথম রহস্য। তার তাওফিক ও বদৌলতেই সবকিছু হয়। এজন্য তার কৃতজ্ঞতা আদায় করছি সর্বপ্রথম’।

সফলতার রহমস্য সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের মাদরাসার শিক্ষকগণ শতভাগ আবাসিক। তারা ছাত্রদের সার্বক্ষণিক নেগরানি করেন। শিক্ষকদের নিবিড় পরিচর্যা ও তত্ত্বাবধানই ভালো ফলাফলের অন্যতম রহস্য। সকল শিক্ষক-ছাত্র নিজ নিজ রুটিন ভালো করে পালন করেন। অনুশীলনী, লেখাপড়ার নিয়মতান্ত্রিকতা, সমহারে লেখাপড়া- এমন নয় যে পরীক্ষার সময় খুব পড়লো আর সারা বছর ঘুমিয়ে থাকলো। বরং প্রতিটি দিনই পূর্ণ সময়ে লেখাপড়ার পরিবেশ বজায় থাকে আমাদের প্রতিষ্ঠানে।

এসময় তিনি  ‘ভবিষ্যতে যেনো সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেন’ এর জন্য বিশেষ দোয়া চেয়েছেন সবার কাছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ছিলো জামিয়া মোহাম্মাদিয়া ফয়জুল উলুম। ২০০০ সালে আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বৃহৎ পরিসরে জামিয়ার বর্তমান ঠিকানায় স্থানান্তরিত হয়। এরপর আল্লামা মাহমুদুল হাসানের তত্ত্বাবধান ও শিল্পপতি আলহাজ্জ বাদশাহ মিয়ার উদার সহযোগিতায় জামিয়ার আজকের মহীরূহ অবকাঠামো গড়ে উঠে।

প্রতিষ্ঠাকাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি বেফাকে ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আসছে। ফলাফলে দেখা যায় অন্যান্য বছরের মতো এবারও তারা আছেন শীর্ষে। এ নিয়ে টানা ১৩ বছর বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় নিজেদের গৌরবময় স্থান ধরে রেখেছে মাদারীপুর জেলার জামিয়াতুস সুন্নাহ শিবচর মাদরাসা।

হাআমা/