নানা আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে পুলিশ–বিজিবি
প্রকাশ: ২৬ মার্চ, ২০২৪, ০৭:০৮ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে পুলিশ, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য সংস্থা। মঙ্গলবার তারা বীর শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো ও পতাকা উত্তোলনসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করে।

দিবসটি উপলক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সকাল ৮টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় একটি সুসজ্জিত পুলিশ দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিউগলে বেজে উঠে করুণ সুর। তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) কামরুল আহসান, র‍্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর জানান, পরে আইজিপি স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এসবি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামসহ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের (বিপিউব্লিউএন)সভাপতি ও এসবির ডিআইজি আমেনা বেগমের নেতৃত্বে বিপিউব্লিউএন নেতৃবৃন্দ পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানান, সকালে বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারাদেশে বিজিবির সকল ইউনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী অংশ নেন। এরপর মহাপরিচালক পিলখানায় ‘সীমান্ত গৌরব’-এ ফুল দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় বিজিবির একটি সুসজ্জিত চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।

বিজিবি সূত্র জানায়, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সারাদেশে বিজিবির বিভিন্ন স্থাপনায় ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সকলের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।  দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল যোহরের নামাজের পর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারাদেশে বিজিবির সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের মসজিদে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, উন্নয়ন ও অগ্রগতি, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শাহাদতবরণকারী সদস্যসহ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মার শান্তি এবং বিজিবি’র উত্তরোত্তর অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া। সেইসঙ্গে বিজিবি’র সকল রিজিয়িন, সেক্টর ও ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ১৮ হাজার ৭০ জন দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শিশুদের জন্য বিজিবি জাদুঘর উন্মুক্ত রাখা হয় এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজিবি বাদকদল বাদ্য পরিবেশন করে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বেনাপোল-পেট্রাপোল, বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী ও আখাউড়া-আগরতলা আইসিপিতে বিজিবি-বিএসএফের জমকালো ‘জয়েন্ট রিট্রিট সিরিমনি’ প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাধীনতা দিবসে দেশের সকল ফায়ার স্টেশন এবং অফিসসমূহে জাতীয় ও বিভাগীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিভাগীয় দপ্তরসমূহে জাতির পিতার ছবি সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এ দিন সকালে ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন।

সকাল ১০ টায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের অংশগ্রহণে মিরপুর ট্রেনিং কমপ্লেক্স ও অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ বিষয়ে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় ট্রেনিং কমপ্লেক্সসহ সকল বিভাগীয় অফিসে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাদ আসর ফায়ার সার্ভিসের সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয় এবং সেহরিতে ভালো খাবারের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরীর নেতৃত্বে পুনাক নেতৃবৃন্দ সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

হাআমা/