তাকমিল শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি পরামর্শ-১
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর, ২০২৩, ০৪:৫৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক আল-হোসাইনী


২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যারা দাওরায়ে হাদিস পড়ছেন, তাদের ২য় সাময়িক পরীক্ষার প্রস্তুতি বিষয়ে জরুরি পরামর্শ:

দাওরায়ে হাদিসের নেসাব নিয়ে একদিকে চিন্তা করলে বড় কিতাব এবং পরিমাণ ও পৃষ্ঠা অনেক। এদিক থেকে এ বিষয়টা অত্যন্ত কঠিন ধাপ মনে হয়। কিন্তু আরেক দিকে চিন্তা করলে দেখা যায়, দাওরায়ে হাদিসের সাবজেক্ট একটাই, আর সেটা হলো ইলমুল হাদিস। যদিও কিতাব প্রায় দশটির উর্ধ্বে, কিন্তু সাবজেক্ট একটা। হ্যাঁ, তবে বুখারী কিতাবের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, মুসলিমের কিছু বৈশিষ্ট আছে, তিরমিযি-আবু দাউদের কিছু বৈশিষ্ট আছে। এ বৈশিষ্টগুলো যদি আমরা হল করি, তাহলে ফিকহি মাসয়ালার দিক থেকে সব কিতাব প্রায় একই ধরণের। 

■ সহীহুল বুখারী আওয়াল-
এ কিতাবের দুটি অংশ। প্রথম অংশের কিতাবুল ওহী,কিতাবুল ঈমান এবং কিতাবুুল ইলম পড়া হয়ে গেছে প্রথম সাময়িক পরীক্ষায়। ইলমের পরে কয়েকটা বিষয় লক্ষণীয়। 

১। তরজমাতুল বাব : 
তরজমাতুল বাবের উদ্দেশ্য কী। যদি আয়াত উল্লেখ থাকে, তাহলে আয়াতের সাথে তরজমাতুল বাবের মুনাসাবাত-সামঞ্জস্যতা কিভাবে। আর যদি হাদিস উল্লেখ থাকে, তাহলে হাদিসের সাথে তরজমাতুল বারে মুনাসাবাতটা কী। অনেক সময় হাদিস দীর্ঘ হয়। হাদিসের কোন্ অংশের সাথে তরজমাতুল বাবের মুনাসাবাত। বিষয়টা ভালো করে হল করতে হবে। 

২। হাদিসের অনুবাদ :
পরীক্ষায় হাদিসের অনুবাদ চাওয়া হয়, এজন্য হাদিসের অর্থ- অনুবাদ সুন্দরভাবে হল করা। 

৩। কঠিন শব্দের হল করা।

৪। ইখতিলাফ হল করা :
হাদিস অনেক সময় ইখতিলাফপূর্ণ হয়ে থাকে। ইখতিলাফের বিষয়ে যদি তিরমিযি শরীফ হল করা হয়ে থাকে, তাহলে এ কিতাবের হল করার দ্বারা বুখারীতেও হল হয়ে যাবে। 

■ বুখারী সানী-

সাধারণত ২য় সাময়িক পরীক্ষা কিতাবুত তাফসীর থেকে হয়ে থাকে। কিতাবুল মাগাযিরও কিছু অংশ থাকে। মাগাযির মধ্যেও তরজমাতুল বাব থাকে। উল্লেখিত আয়াত, হাদিস থাকলে তরজমাতুল বাবের সাথে মুনাসাবাত কী এবং হাদিসের কোন্ অংশের সাথে তরজমাতুল বাবের মুনাসাবাত তা বিশষেভাবে লিখতে হবে। আর হাদিসটা যদি কোনো যুদ্ধ সংক্রান্ত হয়, তাহলে যুদ্ধ সম্পর্কে কয়েকটি মা’লুমাত অর্জন করতে হবে। যেমন- 
১। যুদ্ধ কবে সংঘটিত হয়েছে। 
২। কেন সংঘটিত হয়েছে। 
৩। এ যুদ্ধে মুসলিম সৈন্য সংখ্যা কত ও প্রতিপক্ষ কফেরদের সৈন্যসংখ্যা কত।
৪। যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও তা থেকে আমাদের শিক্ষা কী।
 
এভাবে যদি উত্তর দেয়া যায়, তাহলে আশা করি ভভভালো নম্বর পাওয়া যাবে। 

■ কিতাবুত তাফসীর-

এখানে তিনটা জিনিস হল করতে হবে। যথা-
এক- অনেক আয়াত আছে, যার শানে নুযুল বুখারীর কিতাবুত তাফসীর অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। আবার অনেক আয়াতের শানে নুযুল উল্লেখ করা হয়নি। এজন্য শানে নুযুলটা ভালো করে শিখতে হবে।  
দুই- অনেক জায়গায় কঠিন শব্দ আছে, সে শব্দগুলো হল করতে হবে। 
তিন- অনেক সময় শুধু শব্দ বলা হয়ে থাকে কিন্তু এটা কোন্ সূরা বা কোন্ পারার, তা বুখারীতে অনেক জায়গাতে উল্লেখ নেই। এর জন্য বুখারীর শরাহ কাশফুল বারী, ফতহুল বারী, আরো অন্যান্য উর্দু শরাহ আছে, এগুলোর সহযোগিতায় আয়াতটির কোন্ সূরা, তার পুরো আয়াত কী ্এবং আয়াতসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি হল করা সহজ করা হয়ে যায়। (চলবে)।

লেখক: মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস , জামিয়া সওতুল হেরা বাসাবো, ঢাকা।

এনএ/