শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪ ।। ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিরোনাম :

জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে যাদের চাচ্ছে আলেমরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে যাদের চাচ্ছে আলেমরা। ছবি ডিজাইন: আওয়ার ইসলাম।

|| হাসান আল মাহমুদ ||
চিফ রিপোর্টার

জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন-পরিমার্জন বিষয়ে করা গঠিত পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি বাতিল করা হয়েছে গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর)। কমিটিতে বিজ্ঞ আলেম না রাখায় আগের মতো বিতর্কে পড়ার আশংকার কথা বলে এসেছে ইসলামিক সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও আলেমরা।

এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপিত জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটিতে কোনো আলেম না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করে আলেমবিহীন এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে আলেম অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ খেলফাত মজলিসসহ ধর্ম ভিত্তিক নানা সংগঠন ও ইসলামি ব্যক্তিবর্গ।

বাতিল ঘোষণার পরে পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন বিষয়ে করা একটি তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তালিকায় নাম থাকা আবু সাঈদ খানের মতাদর্শ নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়। আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ থেকে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, ‘অনতিবিলম্বে আবু সাঈদ খানকে পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে। তাকে কারা কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করেছে, তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। আবু সাঈদ খানরা বই পরিমার্জন এবং সংশোধন করে ফেললে ছাপানোর পূর্বে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্যই রিভিউ করাতে হবে।

অন্য দিকে আলেম লেখক-বুদ্ধিজীবি ডা. শামসুল আরেফীন শক্তি বলেছেন, ধর্ম উপদেষ্টার তত্ত্বাবধানে ইসলামপন্থীদের একটা টিম বইগুলো রিভিও করবে, এবং ইসলামের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক কিছু থাকলে সেটা বাদ দেবার সুপারিশ করবে।

তিনি বলেন, জানা গেছে, শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন: এখন আর কিছু করার নেই। বই প্রেসে চলে গেছে। না, থামতে হবে।

যে যে প্রেস বইয়ের টেন্ডার পেয়েছেন তারা ছাপা অবিলম্বে স্থগিত করেন। জনগণের শত্রু হবেন না। সরকারের ব্যর্থতার দায় নিজেরা নেবেন না। নষ্ট ভ্রষ্ট বই দেখে জনগণ যখন ফুঁসে উঠবে, তখন নিজেরা সেই তোপে পড়ে যাবেন।

বাংলার মুসলমানের সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুরাহা না হওয়া অব্দি বই ছাপা বন্ধ রাখুন। আপনার ঘরেও বাচ্চা আছে। আমরা আপনার সন্তানের জন্যই লড়ছি। আলেম-ওলামা এসব বই দেখবে তারপর ছাপবেন। আপনারাই ছাপবেন, আপাতত বন্ধ রাখুন সরকারের সাথে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত।

এদিকে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন-পরিমার্জন বিষয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে কমিটিতে কাদের রাখা যায় এ বিষয়ে কয়েকজনের নাম প্রস্তাবে আসে।  

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানান, আমরা শীর্য পর্যায়ের কয়েকজন আলেমদের নাম প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবে রেখেছি। চূড়ান্ত তালিকা করে প্রস্তাবনায় রাখবো ইনশাআল্লাহ। তন্মধ্যে মারকাযুদ দাওয়া আল-ইসলামিয়া ঢাকার পরিচালক গবেষক শিক্ষাবিদ মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, বিশিষ্ট লেখক-সাংবাদিক মাওলানা লিয়াকত আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাওলানা মাহমুদুল হাসান অন্যতম।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিডিয়া এন্ড জার্নালিজমে অনার্স-মাস্টার্স করা বিশিষ্ট আলেম শিক্ষাবিদ সাংবাদিক গবেষক মাওলানা লিয়াকত আলীকে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে রাখার প্রস্তাব করেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমাদ গতকাল (২৯ সেপ্টেম্বর) মুঠোফোনে প্রতবিদেককে জানিয়েছেন, আমরা একটি তালিকা করে পরে জানাব।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শিক্ষাবিদ আলেম মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া গতকাল (২৯ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়ে দল বৈঠক করে নাম জানাবে। 

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (একাংশের)-এর মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম আজ (৩০ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছেন, এ বিষয়ে সামনে আমাদের একটি মিটিং হবে, সেখানে তালিকা চূড়ান্ত করে জানানো হবে।   

ইসলামি আলোচক ও কলামিস্ট মাওলানা যুবায়ের আহমাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (চেয়ারম্যান, আরবি বিভাগ) ড. যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক, মদীনা বিশ্ববিদ্যলয় পড়ুয়া মোহাম্মদপুরের মারকাযুল লুগাহ বাংলাদেশ’র পরিচালক শাইখ মুহিউদ্দীন ফারুকীকে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে রাখার প্রস্তাব করেন।

আলেম সাংবাদিক ইজাজুল হক পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে তিন জনের নাম প্রস্তাব করে জানান, ড. আবু বকর রফিক আইআইইউসি চট্টগ্রামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তার সিলেবাস রচনায় অভিজ্ঞতা আছে। ড. যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক, চেয়ারম্যান, আরবী ঢাবি। ধীমান গবেষক ও রচনা সম্পাদনায় অভিজ্ঞ স্কলার। মাদানি নেসাবের (সিলেবাস) প্রবর্তক মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ।

এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় জাতীয় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও সংশোধন কমিটিতে প্রবীণ শিক্ষাবিদ মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দীন, শায়খ আহমাদুল্লাহ, জনাব আসিফ মাহতাব, ড.আহমদ আলী, ড. এ বি এম হিজবুল্লাহসহ কয়েকজনের নাম উচ্চারিত হতে দেখা যায়।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ