বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


বালিয়া মাদরাসায় আল্লামা মাহমুদুল হাসানের মনোমুগ্ধকর স্মৃতিচারণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুসাইন আহমাদ খান।।

ময়মনসিংহের ফুলপুরের ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে শেষ হলো বালিয়া মাদরাসার বড় সভা। এ সভা ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষ জেগে ওঠে এক নতুন উদ্যমতায়। অত্মীয়-স্বজনেরা ছুটি আসে দূর-দূরান্ত থেকে। উত্তর ময়মনসিংহের সেরা ও ঐতিহ্যবাহী কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফুলপুুরের জামিয়া আরাবিয়া আশরাফুল উলূম বালিয়া। প্রতি বছরের মত এবারো আয়োজন করেছিলো খতমে কুরআন ও খতমে বুখারি উপলক্ষে দুইদিনব্যাপী ১০৪তম বড়সভা।

এ বড় সভায় বালিয়া মাদরাসা নিয়ে মনোমুগ্ধকর স্মৃতিচারণ করেছেন বেফাকের চেয়ারম্যান গুলশান আজাদ মসজিদের খতিব মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, বালিয়া মাদরাসা এক সময় বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ট ও নামকরা মাদরাসা ছিলো। সারাদেশের ছয়-সাতটা মাদরাসার মধ্যে অন্যতম বড় মাদরাসা ছিলো এটা। দূরদূরান্ত থেকে ছাত্ররা এখানে এসে ভর্তি হতো, ঢাকায় যেতো না। এই মাদরাসা সারাদেশের জন্য উসওয়া ও নমুনা। বাংলাদেশের যেপ্রান্তেই যাওয়া যায়-ময়মনসিংহ তো বটেই-বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, রংপুর, পুরশাহ ইত্যাদি জেলার বড় বড় মাদরাসার মুহতামিম, শাইখুল হাদিস ও নাযিমে তালিমাত এখনো যারা আছেন তারা বালিয়া মাদরাসার ছাত্র।

আমার সৌভাগ্য, আমি এখনকারই ছাত্র। আমি এখানে মিজান জামাত পড়েছি। নাহবেমীর জামাতে ভর্তি হয়ে চলে গেছি। মোট এক-দেড় বছর থেকেছি এখানে। তখন যাদেরকে দেখেছি তাদের মধ্যে মাওলানা মুজিবুর রহমান বেঁচে আছেন। তিনি আমার সাথী। আমি তাকে নিজের উস্তাদ মনে করি এজন্য যে, তিনি জানতেন সেসময় আমার মা-বাবা জীবিত ছিলেন না। তখন তিনি আমাকে স্নেহ করতেন, এখনও করেন।

এই মাদরাসায় এখন মাওলানা ইমদাদুল হক আছেন। আল্লাহ তাআলা তাকে নেক হায়াত দান করুন। সেসময় দেখেছি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম রহ.কে। তাকে অল্প দেখেছি। তখন তিনি জীবনের শেষ বয়সে ছিলেন। আরো দেখেছি, বড় মসজিদের ইমাম মাওলানা ফয়জুর রহমান রহ.কে। তারা এই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা। আরো ছিলেন, মাওলানা লোকমান রহ. ও মুফতি আবদুল ওয়াহেদ রহ.। জীর্ণশীর্ণ একজন মানুষ ছিলেন মাওলানা দৌলত আলী রহ.। তিনি এখানে ৫৫ বছর যাবত মুহতামিম ছিলেন। এখানে আমার পড়াশোনার শেষ দিকে তার বাসায় থেকে পড়ালেখা করেছি আমি।

আমার সরাসরি উস্তাদ ছিলেন দাদরা হুজুর রহ.। কত নেক মানুষ ছিলেন তিনি! আরো ছিলেন কোণাবাড়ির হুজুর ও মাওলানা ফয়জুদ্দিন রহ.।তারা আজ কেউ নেই। তারা এমন উস্তাদ ছিলেন যে, সারাদেশের ছাত্ররা তাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো। হাজার হাজার ছাত্র ছিলো তখন। সবচেয়ে বেশি ছাত্র ছিলো এখানে। আমিও এখানের ছাত্র। যেখানেই থাকি, মাঝে মাঝে আসি এখানে। মানুষে বলে এবং আমিও বলি, এটা তো আমার বাড়ি!

গত শুক্রবার বাদ জুমা শুরু হয়েছিলো এ সভা। ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত চলে। এতে দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরাম ওয়াজ করেন। সভায় প্রতি বছর লাখ লাখ মুসল্লির আগমন ঘটে। নিরাপত্তা বিধানে ফুলপুর ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে কাজ একদল চৌকস পুলিশ অফিসার মোতায়েন ছিলো। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি। সভায় সভাপতিত্ব করেন বালিয়া মাদরাসার শিক্ষা উপদেষ্টা প্রবীণ আলেম শায়খুল হাদিস আল্লামা এমদাদুল হক ও মজলিসে আমেলার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুজিবুর রহমান।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ