বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


‘হাফেজদের কৃতিত্বে দেশের মানুষ খুশী হলেও কিছু মানুষের মন খারাপ’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা উবায়েদুর রহমান খান

১. কুকুর ঘেউ ঘেউ করলে একটা হাড্ডি দিন। হাড্ডির ব্যবস্থা না থাকলে, এড়িয়ে যান। বেশী বাড়লে কুকুর অনুপাতে মুগুর মারুন। তাই বলে, তার ঘেউয়ের জবাবে আপনি সময় মেধা ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন, এটা কি ঠিক?

২. মানুষ যারপরনাই আনন্দিত। বাদশাহ ফয়সালের সুযোগ্য পুত্র, মক্কার গভর্নর প্রবীণ প্রিন্স খালিদ আল ফয়সাল দা. বা. পুরষ্কৃত করলেন বাংলাদেশের গৌরব হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরীমকে।

এবার সউদি পৌঁছেই তার ঠাণ্ডায় গলা বসে যাওয়ায় সারাটা সময় সবাই উদ্বিগ্ন ছিলাম। টাওয়ারে গিয়ে সতীর্থরা তার খোঁজ খবর নিয়েছেন। কাবার পাশে বিশ্বের ১১১টি দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করে এক লাখ রিয়াল, সম্মান ও দোয়া নিয়ে আসছে তাকরীম।

২. কোরআনের হাফেজদের এসব কৃতিত্বে দেশের মানুষ খুশী হলেও কুকুরদের মন খারাপ। কারণ কুকুরের পেটে ঘি ভাত সয় না। শুয়োরের গলায় মুক্তার হার মানায় না। ওদের গতকাল থেকে পেটও খারাপ। তারা তাকরীমকে কী সংবর্ধনা দিবে! তাদের মতো অসভ্য সংবর্ধনা তো কোনো ভদ্রলোক নিবেও না। ময়লার ভাগাড় সংলগ্ন বস্তি থেকে বের হওয়া এক খবিস আর তার সঙ্গী বদের হাড্ডি গ্রুপ নিজেদের কুকীর্তির জবাব পেয়ে যাচ্ছে।

৩. কিছু মানুষ খামাখাই ব্যাপক হায় হুতাশ করছে। বলছে, আহারে, বিশ্বজয়ী হাফেজদের কেউ সংবর্ধনা দেয়না। সম্মান ও লক্ষ কোটি টাকা, গাড়ি, বাড়ি, ফ্ল্যাট দেয়না। উদোম ছাদের বাসে করে শহর ঘোরায় না।

রাজধানীতে মারাত্মক যানজট সৃষ্টি করে মানুষের গালি খাওয়ায় না। আসলে এরা না বুঝেই এসব বলে। তারা যদি সারাবছর সারাদেশে হাফেজদের সংবর্ধনা সম্মাননা ও মানুষের ভালোবাসা সম্পর্কে জানতো, তাহলে এধরনের ফালতু সংবর্ধনার কথা বলতো না। যা তাদের দেওয়া হলেও হাফেজ সাহেবরা তাদের শান ও সংস্কৃতির সাথে অশোভনীয় মনে করে নেবেননা।

আচ্ছা, কেউ বলবেন কি, বাংলাদেশের কৃতি হাফেজরা সরকারের মন্ত্রী এমপি থেকে শুরু করে কোন্ ভিআইপি পর্যায়ের আদর স্নেহ মমতা স্বীকৃতি সম্মাননা পাননি? আর বিদেশে যে আদর আপ্যায়নটুকু তারা উপভোগ করেন, এতো উন্নত ব্যবস্থা কি বাংলাদেশে আদৌ আছে?
৪. হাফেজদের সম্মাননা ও সংবর্ধনা হবে তাদের শান শ্রেষ্ঠত্ব এবং পবিত্রতা অনুযায়ী।

দেশের শত কোটি টাকার শ্রাদ্ধ করে ঘোড়ার আণ্ডা পর্যায়ে চলে যাওয়া ক্রিকেট ফুটবলের পর পেটেভাতে মেয়েদের সাফ জয়ের ওসিলা ধরে বীর পুঙ্গবরা তাদের সব হেডাম নিয়ে মাঠে নেমে গেছে। অদ্ভুত দেশীয় সংস্কৃতি, ক্রেডিট নেওয়ার মানুষের ঠ্যালায় দলনেত্রী আর কোচের পর্যন্ত বসার জায়গা হয়নি।

মালিক আর আমলাদের সম্মেলনে তাদের চাকর আর কামলা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। রাতারাতি মাথাকাটা বাসে বিলবোর্ডের বাড়ি খেয়ে এক মেয়ের তো কপাল ফেটে তিনটি সেলাই লেগেছে। বাকি সেলাই ছাড়াদেরও কপাল খুলতে শুরু হলো বলে। নিতান্ত দরিদ্র এক পাহাড়ি মেয়েকে একটি দানের বাড়ি করে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

হালাল হারাম জানা নেই, কেউ লাখ লাখ টাকার ঘোষণা দিচ্ছেন। তা দিন। পাহাড়ি, চাকমা, হিন্দু, সামাজিক মুসলিম মিশ্র এ মেহনতি টিমের পরহেজগারি নিয়ে যারা হয়রান হচ্ছেন, তাদেরও বোঝা উচিত যে, তারা কাদের নিয়ে এতো মাথা ঘামাচ্ছেন।

৫. হারাম বিষয়ের সাথে ইবাদতের তুলনা করা একটি বড় ভুল। ঘেউ এর বুদ্ধিবৃত্তিক জবাব দিয়ে কুকুরকে জাতে তোলা বিশাল বোকামি।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ