শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


দেশে টিকটক বন্ধের সুপারিশ : কীভাবে দেখছেন আলেমরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| কাউসার লাবীব ||

রাতারাতি সেলিব্রিটি হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় এখন টিকটক। অল্প সময়ে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে অ্যাপটি। বিশ্বের প্রায় ৭৫টি ভাষায় এই অ্যাপটি বানানো হয়েছে। ১ বিলিয়নবারেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে অ্যাপটি। এপটির রিভিউ রয়েছে ৫০ মিলিয়নেরও বেশি। বর্তমানে ফানি ও শর্ট ভিডিওর সর্ববৃহৎ অ্যাপ এটি।

এদিকে দেশে টিকটক বন্ধের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বলা হয়, টিকটক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এই অ্যাপটি নেতিবাচকভাবে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। বিভিন্ন হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড, গুজব ও অপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। পরে তিনি এই অ্যাপটি বন্ধের সুপারিশ করেন।

এদিকে এনটিএমসি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের তরুণ সমাজের মধ্যে ব্যবহৃত ইন্টারনেটের ৮০ শতাংশ ব্যয় হয় টিকটক অ্যাপের পেছনে।

এই অ্যাপ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যেই নিষিদ্ধ হয়েছে। এই অঞ্চলে প্রথম টিকটক নিষিদ্ধ করে ভারত। পর্যায়ক্রমে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানও একই পথে হাঁটে। বাংলাদেশে টিকটক বন্ধের আলোচনা বারবার সামনে এলেও ফলপ্রসূ কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। এদিকে তরুণরা এই অ্যাপ ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছেন নানা উদ্ভট কর্মকাণ্ড। টিকটকে অনেক ছেলেকে দেখা যায় মেয়েদের পোশাক পরতে। আবার অনেক মেয়েও এখানে ছেলে সাজে নৃত্য পরিবেশন ও অভিনয়ের ভিডিও আপলোড করে। এসবের তালিকা অনেক দীর্ঘ।

‘টিকটকে ফাঁসির অভিনয় করতে গিয়ে নোয়াখালীর চাটখিলে অসাবধানতাবশত গলায় ফাঁস লেগে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত কিশোরীর নাম সানজিদা আক্তার (১১)। সানজিদা শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।’

‘ভাইরাল হতে ছাগলকে ‘বিয়ে’ করলেন ইন্দোনেশিয়ান টিকটকার।’

‘পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে টিকটক ভিডিও বানানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাহাদি হাসান (২৭) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি)।’

‘টিকটক ভিডিও তৈরির অভিযোগে নাটোরে একটি বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা টিকটক ভিডিও তৈরি করে। তারা শিক্ষকদের অবাধ্য, কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা মানে না। এর আগে অভিভাবকরা নানা বিষয়ে মুচলেকা দিলেও তারা সংশোধন হয়নি। তাই তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।’

‘টিকটক বানাতে নদীতে লাফ, ২ ঘণ্টা পর মিলল লাশ। নীলফামারীর সৈয়দপুরে খড়খড়িয়া নদীতে মোস্তাকিম ইসলাম নামের এক কিশোর টিকটক বানানোর জন্যই নদীতে ঝাঁপ দিলে বালুর সঙ্গে গেঁথে গিয়ে তলিয়ে যেতে থাকে। পরে তাকে সেখান থেকে কিছু দূরে ভাটি থেকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

‘ট্রেনের ছাদে টিকটক করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেলো যুবকের।’

টিকটকারদের এসব কাজের উদাহরণ একটি দুইটি নয়, হাজার হাজার। এর পাশাপাশি টিকটক হয়ে গিয়েছে মানব পাচারের অন্যতম মাধ্যম। বিশেষ করে মহামারি করোনাকালে এই প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পায়। গত ৩০ জুলাই বিশ্ব মানবপাচার প্রতিরোধ দিবসে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানায়, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মানবপাচার বৃদ্ধি হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে বিশ্বব্যাপী।

এসব তথ্য-উপাথ্য হাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সচেতনতা বৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ পদক্ষেপ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে মানবপাচারকারীদের সনাক্ত ও অভিযান পরিচালনা করার পরামর্শ দেন।

এরই প্রেক্ষিতে জানা যায়, টিকটক ব্যবহারকারীরা কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পর চাইলেই এখন আর নিজেদের লুকাতে পারবে না। এখন থেকে টিকটক ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পদ্মাসেতুসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় টিকটকারদের অপরাধমূলক কাজের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার প্রমাণও দিয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। তবে এসব কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না।

টিকটকারদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না, ইসলামী আলোচক, ওয়ায়েজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, অভিনেতা, শিল্পী, আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য, সাংসদ, মন্ত্রী কিংবা খোদ প্রধানমন্ত্রী। এসব ঘটনায় আটকের ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু তরুণদের ভাইরাল হওয়ার নেশায় লাগাম টানতে পারছে না কেউই।

ইতোমধ্যে টিকটক ব্যবহার হারাম জানিয়ে ফতোয়া প্রকাশ করেছে বেশকিছু ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠান। গবেষণামূলক ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়, কিশোর গ্যাং তৈরি, নারী পাচার, মাদক আশক্তি, অশ্লীলতা প্রসার, নাচ ও গানের প্রসার, যিনা বৃদ্ধি, মানুষের সম্মানহানী, সাইবার বুলিং, গোনাহের ভয় হ্রাস, অহেতুক কাজে সময় নষ্টসহ বেশকিছু কারণ বিদ্যমান পাওয়া যায় টিকটকে।

অ্যাপটিতে ব্যবহারকারীরা প্রধানত মিউজিক এবং ড্যান্সের তালে তালে মিল রেখে ভিডিও নৃত্য ও অভিনয়ের ভিডিও আপলোড করে থাকেন। একদিকে মিউজিক এবং ড্যান্স উভয়টিই ইসলামে হারাম বা নিষিদ্ধ। অন্যদিকে নৃত্য ও অভিনয়ের আপলোড করা ভিডিও মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ। ইসলামী বিধানমতে, যাদের সঙ্গে দেখা করা বৈধ নয় এমন ব্যাবহারকারীদের এই নৃত্য ও অভিনয়ের ভিডিও দেখছে। যার ফলে পর্দার বিধান লঙ্ঘনের মতো ভয়াবহ পাপ সংঘটিত হচ্ছে। সুতরাং নৃত্য পরিবেশনার ও অভিনয়ের ভিডিও আপলোড করার মানসে টিকটক ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম।

যেকোনো বিষয় সেটা যখন আপনাকে আসক্ত করে তুলবে সেটি তখন ইসলামে অগ্রহণযোগ্য। আর যে জিনিসে আসক্তি রয়েছে সেটি আজ হোক কাল হোক আপনার ক্ষতি করবেই। ইতিমধ্যেই দেখা গেছে টিকটিক ব্যবহারকারীদের অনেকই টিকটক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে মারা গেছে। বলা যায়, যে আসক্তি মানুষকে মৃত্যু পর্যন্ত ঠেলে দেয় সেটা আসলে বৈধ হতে পারে না। আর ইসলাম সব ধরনের আসক্তিকে হারাম ঘোষণা করেছে।

টিকটকে অনেক ছেলেকে দেখা যায় মেয়েদের পোশাক পরতে। আবার অনেক মেয়েও এখানে ছেলে সাজে নৃত্য পরিবেশন ও অভিনয়ের ভিডিও আপলোড করে। এর মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টিতে একধরনের বিকৃতি সাধিত হয়, যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। এ ছাড়া ইসলামী বিধানমতে, ছেলেদের মেয়ের আকৃতি গ্রহণ করা এবং মেয়েদের ছেলের আকৃতি গ্রহণ করা নিষিদ্ধ।

ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর ফতোয়ার সারমর্ম অনেকটা এরকম, টিকটকে যা কিছু হয় তার অধিকাংশই সরাসরি ইসলামের নীতিবিরোধী। ইসলামী বিধান পরিপন্থী। সুতরাং ইসলামের দৃষ্টিতে টিকটক ব্যবহার ও ভিডিও আপলোড করা হারাম। তবে হ্যাঁ, যদি কেউ এখানে কোনো ইসলামী বিধানের আলোচনা, মানুষের জন্য কল্যাণকর কোনো বিষয় মিউজিক ছাড়া আপলোড করেন এবং তার প্রচার করেন তাহলে সেটা বৈধ হবে।

এদিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই অ্যাপটি নিয়ে ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা ড. মুশতাক আহমদ বলছেন, ‘উঠতি বয়সী তরুণরা এর অপব্যবহার বেশি করছে। বিশেষত তারা এটাকে মুক্তমিডিয়া হিসেবে প্রতিনিয়ত এর অপব্যবহার করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে তাদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। তাছাড়া প্রচলিত স্যোশাল মিডিয়ার কারণে পরিবারের ভেতরেও নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’

লেখক তরুণ আলেম আলী হাসান তৈয়ব বলেন, বিভিন্ন ওলামায়ে কেরাম ও গবেষকগণ দীর্ঘদিন ধরেই টিকটক, লাইকিসহ বিপজ্জনক অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট বন্ধের দাবি করে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও এসব এপস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দ্রুতই বাংলাদেশেও এগুলো নিষিদ্ধ করা দরকার। পাশাপাশি তরুণদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা প্রণয়ন সময়ের দাবি।

রাহবার মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার মুফতি সাইফুল ইসলাম বলছেন, ‘টিকটক অ্যাপ মানুষকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিশেষত এই ভাইরাল এ্যাপগুলোর মাধ্যমে বর্তমানে যুব সমাজ ক্ষতির চূড়ান্ত স্তর একেবারে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়ে গেছে। চোখের সামনেই তো মাঝে মাঝে হঠাৎ এ বিষয়গুলো চলে আসে। তখন হতবাক হয়ে যাই এই ভেবে, আমাদের বাংলাদেশের ছেলেদের এই অধঃপতন, যুব সমাজ কিংবা মেয়েদের এই অধঃপতন কবে থেকে শুরু হল? এসবের লাগাম টানা দরকার।’

তিনি মনে করেন, ‘এসব এপ বন্ধ করা কোনো সমাধান নয় বরং বন্ধ না করে চাইলে যুব সমাজকে বুঝিয়ে ইসলামের পক্ষে কাজ করানো যেতে পারে। কারণ আজকে টিকটক চলে গেলে আগামীকাল আরেকটা আসবে। এরপর আরেকটা আসবে। এভাবে আসতেই থাকবে। বন্ধ না করে যদি তাদের বুঝানো যায়, তাহলে তারা এসবের মাঝেও ইসলাম প্রচার করবে এবং অপসংস্কৃতিকে প্রমোট করা থেকে বিরত থাকবে। টিকটকের মাঝে অনেকে ইসলামিক ক্লিপও ছাড়েন। যেগুলো অনেকেই দেখে। আসলে ডিভাইসের তো কোন দোষ নেই। সে সাথে এপের তো কোন দোষ নেই। দোষটা হচ্ছে ব্যবহারকারীদের।’

দেশের প্রথিতযশা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, উপস্থাপক শাহ ইফতেখার তারিক মনে করেন, ‘টিকটক বন্ধ করলেই সমাধান বেরিয়ে আসবে বিষয়টা এমন নয়। এসব বন্ধের পাশাপাশি তাদেরকে ভালো কন্টেন্ট তুলে দিতে হবে। যদি তাদের কাছে ভালো কন্টেন্ট তুলে দেয়া যায়, তাহলে তারা এ সব অশ্লীল জিনিস থেকে ফিরে আসবে।’

নাশিদ শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, কোন প্রযুক্তি বন্ধ করে সুনির্দিষ্ট কোন সমাধান সম্ভব নয়। যারা ব্যবহার করার তারা ব্যবহার করবেই। বিভিন্ন উপায়ে তারা ব্যবহার করবে। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা তৈরি করা। নতুন যে প্রযুক্তিগুলো আসে সেগুলো যেন আমরা সচেতন ভাবে ব্যবহার করি সে বিষয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, এখন সময়টা দ্রুত লয়ের। মানুষ সহজ ও অল্প সময়ে সব পেতে চায়। ইউটিউব খুবই জনপ্রিয় ভিডিও প্লাটফর্ম। তবে টিকটক যখন শর্ট ভিডিও নিয়ে এলো তখন মানুষ দলে দলে সেদিকেই ঝুকছে। এক সময় আমরা ভাবতাম এ থেকে তাদেরকে কীভাবে বিরত রাখা যায়। কিন্তু দেখা গেল নতুন প্রযুক্তির এ স্রোত থেকে মানুষকে পুরোপুরি বিরত রাখা প্রায় অসম্ভব। তাই এসব প্লাটফর্মকে যদি ইসলামের জন্য ব্যবহার করা যায়, সচেতনতার সঙ্গে ভাল ভাল কন্টেন্ট দেয়া যায় তাহলে এর মাধ্যমে ভালকিছু সম্ভব।

এদিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক জরিপ থেকে জানা যায়, ‘ইনস্টাগ্রাম, টিকটক বা ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যম শুধু মানুষের পকেট হালকা করতেই ভূমিকা রাখছে না; মানুষের সুখ-সুখের অনুভূতিকেও একটা গণ্ডিতে আটকে ফেলছে। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহারকারী তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন, যা কিনা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও বেশ বাজে প্রভাব ফেলে।’

জরিপে বলা হয়, ‘৪৭ শতাংশ জেন-জি এবং ৪৬ শতাংশ মিলেনিয়াল প্রজন্ম নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কেননা তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টে অন্যদের জীবনযাত্রার চাকচিক্য দেখে নিজেদের সঙ্গে তুলনা করে বসেন। প্রজন্মান্তরের কারণে আধিক্যটা কম হলেও এর মধ্যে আছেন ৩১ শতাংশ জেন-এক্স ও ২২ শতাংশ বেবি বুমার প্রজন্ম। আর এই তুলনার মানসিকতাটা আসে নিরলসভাবে সারাক্ষণ নিউজফিডের পর্দায় অন্যের বিভিন্ন কার্যক্রম দেখে যাওয়ার মধ্য দিয়ে।’

আসলে প্রযুক্তির জয়জয়কারের এই সময়ে প্রযুক্তি থেকে একেবারে পিছিয়ে থাকার কাজটা বেশ কঠিন। ফেইসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, স্কাইপ, টুইটার, টিকটক, ইমু, স্ন্যাপচ্যাটসহ বিভিন্ন ধরণের সোসাল মিডিয়া বর্তমানে জনপ্রিয়। প্রচলিত সোসাল মিডিয়াগুলোকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলা- বলা যায় এখন প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। দৈনন্দিন জীবনের নানাবিদ কারণে এবং প্রয়োজনে স্যোশাল মিডিয়া এখন অনেককেই ব্যবহার করতে হয়। তবে এসব ব্যবহার যেন হয় নিয়ন্ত্রিতভাবে ও প্রয়োজনের তাগিদে। না হয় উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হবে। ছন্দ হারাবে প্রিয় জীবন।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর