মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :

দারুল উলূম হাটহাজারীতে বেফাক সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মাদ ইশতিয়াক সিদ্দিকী,
হাটহাজারী প্রতিনিধি।।

উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসা সফর করেছেন আল হাইআতুল উলইয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ি মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

সফরকালে তিনি জামিয়া মহাপরিচালক হযরত আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া-এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন এবং জামিয়ার দারুল হাদীস মিলনায়তনে দাওরায়ে হাদীস শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপদেশমূলক বয়ান করেন।

আজ (৮ আগস্ট) সোমবার বেলা ৩টায় তিনি জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারী মহাপরিচালকের কার্যালয়ে গেলে আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া তাঁকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান। উভয় শীর্ষ আলেম সালাম-মুসাফাহা শেষে পরস্পর কুশল বিনিময় এবং দ্বীনি বিষয়ে কথা বলেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর সহযোগী পরিচালক আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন, শায়েখে সানী আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ শোয়াইব জমিরী , মুহাদ্দিস মুফতি কিফায়াতুল্লাহ , মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, শিক্ষক মাওলানা হাফেজ মুঈনুদ্দীন এবং মাসিক মুঈনুল ইসলামের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা মুনির আহমদ প্রমুখ।

এর আগে বেফাক সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষাভবনে দাওরায়ে হাদীসের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপদেশমূলক বয়ান করেন।

তিনি বলেন, উম্মুল মাদারিস জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারী ইসলামী অঙ্গনে বহুমুখী দ্বীনি খিদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানের খ্যাতি সারা বিশ্বময়। এই প্রতিষ্ঠানের ফারেগ উলামায়ে কেরাম দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়াও বিশ্বের নানা প্রান্তে দ্বীনি খিদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।

এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িয়ে আছেন পূর্বসুরী বাযূর্গ আকাবির হযরতগণ। আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করবো আল্লামা হাবীবুল্লাহ কুরাইশী (রহ.), আল্লামা আবদুল ওয়াহেদ (রহ.), আল্লামা সুফী আযিযুর রহমান (রহ.), আল্লামা আবদুল হামিদ (রহ.), আল্লামা জমিরুদ্দীন (রহ.), আল্লামা আব্দুল ওয়াহহাব (রহ.), আল্লামা আব্দুল আযিয (রহ.), আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.), আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (রহ.), আল্লামা আবদুচ্ছালাম চাটগামী (রহ.) প্রমুখ হযরাতগণের নাম। মনে রাখবেন, এমন উঁচুমাপের খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানে আপনারা ইলম অর্জন করছেন। এর মর্যাদা বজায় রেখে চলবেন।

বয়ানে আল্লামা মাহমুদুল হাসান আরো বলেন, দ্বীনি ইলম অর্জন করতে হলে অহংকার পরিত্যাগ করতে হবে। সবসময় ও সব কাজে বিনয়ী, নম্র ও ভদ্র হতে হবে। সবসময় অযূ করে দুই রাকআত নামায পড়ে তারপর দরসে বসবেন। আমি নিজেও এই আমল করি। সবসময় সুন্নাত ও তাকওয়ার উপর চলবেন। পরস্পর কোন বিভেদে জড়াবেন না, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রেখে চলবেন।

তিনি বলেন, আজকাল কেউ কেউ থানভী (রহ.) ও মাদানী (রহ.)এর সিলসিলাকে পার্থক্য করে থাকেন। অথচ তাঁরা দুই জনের পরস্পরের সম্পর্ক মুহাব্বতপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ ছিল। এ বিষয়ে আল্লামা ইউসুফ বান্নুরী (রহ.) বলেছেন, ‘আমার কাছে তাঁরা দুই জন হলেন আমার দুই চোখের মতো’। সুতরাং আমাদের সকল পূর্বসুরী আকাবির হযরতগণের প্রতি সম্মান ও মর্যাদা বজায় রাখবেন।

বেফাক সভাপতি আরো বলেন, মাদ্রাসাসমূহের নিজস্ব পরিভাষা ব্যবহার করবেন। কথায় ও লেখায় কখনো বিজাতীয় ও অন্যদের পরিভাষা ও শব্দ ব্যবহার করবেন না। নিজেদের আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ অটূট রাখবেন। মাদ্রাসা পড়ুয়া কেউ কেউ কলেজ, ইউনিভার্সিটি, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিন্সিপাল, অধ্যক্ষ, ক্যাডেট মাদ্রাসা ইত্যাদি পরিভাষা ব্যবহার করে থাকেন। অথচ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ তো মাদ্রাসার পরিভাষা মুহতামিম, জামাত, জামিয়া ও দরস বলে না। তাই নিজেদের পরিভাষার উপর নিজেদের আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

বেফাক সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান (দা.বা.) বাদ আসর মাকবারায়ে জামিয়ায় আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.), আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (রহ.), আল্লামা আবদুচ্ছালাম চাটগামী (রহ.)সহ এখানে শায়িত উলামায়ে কেরামের কবর যিয়ারত করে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে বিদায় নেন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ