শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ঈদুল আজহা থেকে কী পেলাম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে গোটা মুসলিম বিশ্বে পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। এটি ইসলাম ধর্মের অন্যতম নিদর্শন। মুসলমানদের দুটি মহা উৎসবের একটি। এ দিনটি ত্যাগ ও বিসর্জনের। আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপনের। এদিন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শ্রেণি-পেশা-বয়স নির্বিশেষে ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য ঈদগাহ ও মসজিদে সমবেত হয়। এদিন সামর্থ্যবানেরা মহান প্রভুর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি করেন।

এর মাধ্যমে মানুষ তার হৃদয়ের গহিনে থাকা আল্লাহর প্রতি অসীম ভালোবাসা প্রমাণ করে। কোরবানি কার কবুল হয়েছে এবং কার হয়নি তা একমাত্র আল্লাহই জানেন। তবে ভাবনার বিষয় হলো, মহান প্রভু ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাদের পক্ষ থেকে কবুল করেন, যারা আল্লাহকে ভয় করে।’ (সুরা মায়িদাহ, আয়াত ২৭)

কোরবানির মূল শিক্ষা তাকওয়া অর্জন এবং ধর্মভীরু হওয়ার লক্ষ্যে ত্যাগ ও বিসর্জন। কার অন্তরে এ তাকওয়া স্থান পেয়েছে এবং কার মধ্যে তা নেই, বাহ্যিক অবস্থা থেকে বোঝার কোনো উপায় নেই। এটা যার যার অন্তরের ব্যাপার। কার অন্তর কতটা স্বচ্ছ ও নির্মল তা আল্লাহর কাছে পরীক্ষা হয়ে যাবে কোরবানির মাধ্যমে।

কোরবানির ঈদ প্রতি বছর আসে যায়। কিন্তু আমাদের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে এর ফলাফল কী? আমাদের আচার-আচরণ ও ইবাদতে কী পরিমাণ তাকওয়া অর্জন হয়েছে তা হিসাব করার প্রয়োজন আছে। আমরা জীবনে বহুবার পশু কোরবানি করেছি। আমার কোরবানি কবুল হয়েছে কী? কেন হয়নি তা কি ভেবে দেখেছি? পশু বিসর্জন দিয়েছি, বিসর্জন দিয়েছি মালসম্পদ।

তাকওয়া পরিপন্থী আচার-আচরণ বিসর্জন দিয়েছি কী পরিমাণ? কী পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করেছি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগিতে? তা-ও হিসাব করা প্রয়োজন। এখানে আমাদের মনে রাখতে হবে, পশু কোরবানির পাশাপাশি এর শিক্ষণীয় দিকগুলো জীবনের সব ক্ষেত্রে বাস্তবায়নে আন্তরিক থাকতে হবে। হতে হবে সর্বাবস্থায় একনিষ্ঠ ও খোদাভীরু। আল্লাহর ঘোষণা : ‘এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে কখনো পৌঁছে না; কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের অন্তরের তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত ৩৭)

কোরবানি আমাদের ত্যাগ, বিসর্জন, উৎসর্গ এবং নিষ্ঠা ও ইখলাস শিক্ষা দেয়। তাই আমাদের ইসলামের যাবতীয় বিধান পালনের ক্ষেত্রে এভাবেই নিবেদিত থাকতে হবে। ইসলামের যাবতীয় বিধান ব্যক্তি এবং সামাজিক অঙ্গনে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, বিসর্জন দিতে হবে। ইখলাসের মাধ্যমে যাবতীয় আমল একমাত্র আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করতে হবে। শিরকমুক্ত করতে হবে সব আমল, আকিদা ও যাবতীয় ইবাদত।

ঈদের মাঠে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সমবেত হওয়ার মাধ্যমে কোরবানি আমাদের সাম্য ও আদর্শ সামাজিকতার উপদেশ প্রদান করে। পরস্পর সর্বস্তরের মানুষ মিলেমিশে সৌভ্রাতৃত্বের আনন্দ উপভোগ করার অনুপ্রেরণা জাগ্রত করে। মুসলিম হিসেবে সবাই ভাই ভাই, হিংসা-বিদ্বেষ, ভেদাভেদ ভুলে যাই।

আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গড়ে তোলার দৃপ্ত শপথ নিই। এটাই হলো ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা, কোরবানির মহান ঐতিহ্য।

লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ