শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


হজযাত্রীদের বয়স নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়ে ইসলাম কী বলে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাঈয়েদা হাবিবা: হজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। নামাজ রোজার মত কেউ অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে থাকলে তার ওপর হজ ফরজ হয়। কোভিড মহামারির কারণে গত দুই বছর সীমিত আকারে হজ পালন করার সুযোগ পেয়েছে মুসলিম উম্মাহ।

২০২০ সালে সারা বিশ্বে কোভিড মহামারি ছড়িয়ে পড়ায় সে বছর মাত্র এক হাজার মানুষ হজ আদয় করার সুযোগ পেয়েছেন। ২০২১ সালে পবিত্র হজে অংশ নিয়েছেন ১০ হাজার মানুষ। অবশ্য কোভিড মহামারির আগে ২০১৯ সালে হজ করেছেন ২৫ লাখের বেশি মর্ধপ্রাণ মুসলিম।

চলতি বছর বিশ্বের ১০ লাখ মানুষ পবিত্র হজ পালন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এই দশ লাখ মানুষকে মানতে হচ্ছে বিভিন্ন কঠোর নিয়ম ও নীতিমালা। এবারের হজে ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক ব্যক্তিরা যেতে পারছেন না। সৌদি আরব সব দেশের জন্যই নতুন এই নিয়ম জারি করেছে।

এ নিয়ম মেনেই বিশ্বের সকল দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরবে আসতে শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মুসলিমরা হজের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়লেও তাদেরও প্রথম ব্যাচ গত শনিবার (২৫ জুন ২০২২) সৌদি আরব এসে পৌঁছেছে।

এ বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক হজ করার সুযোগ পাচ্ছেন ইন্দোনেশিয়ার মুসলিমরা। দেশটি থেকে হজ করার সুযোগ পাবেন এক লাখ ৫১ জন। বাংলাদেশ থেকে চলতি বছর হজে যাচ্ছেন প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। বাংলাদেশ থেকে সাধারণত বয়স্ক লোকেরা হজ করতে যান। এ বছর হজযাত্রীদের ৬৫ বছর নির্ধারণ করে দেওয়ায় অনেক মানুষ হজ পালন করতে পারছেন না।

হজ হচ্ছে আল্লাহপাকের প্রদত্ত ফরজ বিধান। সৌদি সরকার কি পারে এই ক্ষেত্রে বয়স নির্ধারণ করে দিতে? এমন প্রশ্নের উত্তরে শাইখ যাকারিয়্যা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, বয়স নির্ধারণের বিষয়ে এক কথায় উত্তর দেওয়া যাবে না।

করোনা মহামারির কারণে সৌদি সরকার হজযাত্রীদের বয়স ৬৫ বছর নির্ধারণ করে দিয়েছে। এটা তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শেই দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে মানুষের বয়স বেশি হয়ে গেলে তাদের অনেক বেশি রোগ-ব্যাধি হয়। তাদের থেকে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারেন।

তাই সৌদি সরকার যে বয়স নির্ধারণ করে দিয়েছে এটা তারা করতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি সাময়িক সময়ের জন্য প্রযোজ্য। করোনার প্রাদূর্ভাব কমে গেলে হয়তো বয়সের এই বিধান উঠে যাবে। আমরা দেখেছি কোভিডের সময় সৌদি সরকার অনেক বিধি-নিষেধ দিয়েছিলো। কোভিড কমে যাওয়ার সাথে সাথে সেই সব বিধি-নিষেধ তুলে নিয়েছে।

বয়স নিয়ে সৌদি সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার সময় যদি করো উপর হজ ফরজ হয় তাহলে তার জন্য করণীয় কি? এ বিষয়ে মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশের মানুষের হজ ফরজ হয় অনেক আগেই। তবে অনেকেই শেষ বয়সে গিয়ে হজ আদায় করেন। হ্যাঁ, তারপরও যদি ৬৫ বছর বয়সের পর কারো উপর হজ ফরজ হয় তাহলে তিনি এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। বয়সের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে হজ পালন করবেন।

এ নিষেধাজ্ঞার সময়ের মধ্যে পরিবারের লোকদের ওসিয়ত করবেন। আর ওসিয়ত করার পর যদি কেউ ওসিয়তকারির পক্ষ থেকে হজ আদায় করে ফেলেন।

এরপর ওসিয়তকারি বেঁচে থাকেন ও সুস্থ্য থাকেন আর সৌদি সরকার যদি বয়সের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন তাহলে ওসিয়ত বাতিল হয়ে যাবে। ওসিয়তকারির ওপর হজ পালন করা ওয়াজিব হয়ে যাবে।

অনেক ইসলামিক বিশেষজ্ঞরাই মনে করছেন অল্প সময়ের মধ্যেই সৌদি আরব বয়স নির্ধারণের বিষয়টি তুলে নিবেন। তখন সবাই আবার আগের মত হজ আদায় করতে পারবেন। এ ছাড়া সৌদি সরকার ইতোমধ্যে ওমরাহর ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ এক মাসের পরিবর্তে তিন মাস করেছে। সেই সঙ্গে ওমরাহর ভিসায় পুরো সৌদি আরব ভ্রমণের সুযোগ থাকছে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর