মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :

কোরবানি না করে সেই টাকা দান করার বিষয়ে কী বলছেন আলেমরা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কোরবানি সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য৷ তিন দিনে কোরবানি দেওয়ার মতো অর্থ বা সম্পদ থাকলে ইসলামে কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব৷ তবে এ বিষয়ে মানুষের মাঝে একটি ধারণা আছে, কোরবানি না দিয়ে সে টাকা দান করে দিলে মানুষের আরো বেশি উপকার হবে? আসলে বাস্তবতা কী? ইসলাম এ বিষয়ে কী ভাবছে? এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি দেশের বিজ্ঞ আলেমে দীনের সাথে।


বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ শোলাকিয়া ঈদ জামাতের খতিব, ইকরা বাংলাদেশের মহাপরিচালক মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের মতে সামর্থ্যবানরা অর্থনৈতিক সমস্যার সময়েও কোরবানি বাদ দিতে পারবেন না৷ এই ওয়াজিব বাদ দিলে গুনাহ হবে৷ যদি কোনো মুসলামান কোরবানি না করে সেই টাকা দান করে দেন?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না তা-ও করা যাবে না৷ নামাজ বাদ দিয়ে শুধু রোজা রাখলে তাতে নামাজের ফরজ আদায় হয় না৷ নামাজও পড়তে হবে৷

তার মতে, অফিস, হাট-বাজার সবই চলছে৷ তাহলে কোরবানি কেন হবে না৷ ইসলামের ইতিহাসে কোরবানি বাদ দেয়ার কোনো নজির নাই৷

তবে তিনটি পরিস্থিতিতে ব্যাক্তিগতভাবে কোনো মুসলমান কোরবানির সময় কোরবানি না-ও দিতে পারেন৷ কিন্তু পরে তাকে কাফফারা আদায় করতে হবে৷ সুবিধামতো সময়ে কোরবানির টাকা দিয়ে একটি পশু কিনে গরিবের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ভারপ্রাপ্ত খতিব, সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, কিছু দিন থেকে আমরা শুনছি বিভিন্ন মিডিয়াতে কিছু আলোচনাও হচ্ছে যে, পশু কোরবানি না দিয়ে দান করা। এটা করা যাবে কি?নাকি কোনো বিকল্প কিছু করা যাবে?

অনেকে এটাও বলছেন যে, কোরবানি না করে অর্থ গরিবদের দিয়ে দিলেতো আরও ভালো হয়- এরকম চিন্তাভাবনার কথা কেউ কেউ পেশ করছেন। আসলে এখানে শরিয়ত কী বলেছে? ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা একটি সুনির্দিষ্ট ইবাদত ও বিধান। এটি পালন করতে হয় নির্দিষ্ট সময় ১০ থেকে ১২ জিলহজের মধ্যে। এটা ওয়াজিব বিধান ও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।

তিনি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে আরো বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো- ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোরবানি জিনিসটা কী? জবাবে হজরত রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, এটা হচ্ছে তোমাদের পিতা হজরত ইবরাহিম আ.-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।

এ গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব বিধানটি অবশ্যই আমরা পালন করব। যার ওয়াজিব তাকেই এটি পালন করতে হবে। জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত এই তিন দিন যে ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক (সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার যেকোনো একটির সমপরিমাণ সম্পত্তি) তার জন্য গরু, মহিষ, উট এগুলোর একটা অংশ অথবা ছাগল, দুম্বা এসব পশুর একটি কোরবানি করা ওয়াজিব।

তিনি আরো বলেন, অন্য সময়ে যারা বেশি পরিমাণে কোরবানি করতেন, বেশি টাকা দিয়ে পশু কিনতেন- এবার তা না করে অতিরিক্ত অর্থ বিলিয়ে দিতে পারেন। কোরবানির সময় এটাও খেয়াল রাখতে হবে, কোরবানির পশুর গোশত ও চামড়ায় গরিবের হক রয়েছে। চামড়ার ন্যায্য মূল্য থেকে গরিবরা যেন বঞ্চিত হয়ে না যায়- সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- এখন করোনা চলছে। এ সময়ে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কোরবানির হাটে ও কোরবানির সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

সরকারিভাবে কোরবানির জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হলে; শৃঙ্খলার জন্য, পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার জন্য নির্দেশ দিলে সেটাও মেনে চলা উচিত।

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ