শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে একটি মডেল মসজিদ প্রয়োজন!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রফিকুল ইসলাম জসিম,
লাওয়াছড়া থেকে ফিরে এসে,

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত জীববৈচিত্র্যে ভরপুর জাতীয় লাওয়াছড়া উদ্যান। চায়ের শহর শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ (কমলগঞ্জ) সড়কের পশ্চিম পাশে জাতীয় এ উদ্যানের প্রবেশপথ। মূল ফটক দিয়া সারি সারি বিশাল গাছের ভেতর দিয়ে কিছু দূর এগিয়ে গেলেই বাম পাশে এই মসজিদটির অবস্থান।

বাংলাদেশের সাতটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও দশটি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে লাউয়াছড়া অন্যতম। চিরহরিৎ এ বনাঞ্চল বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের নিরাপদ আবাসস্থল। এছাড়াও নানান দুর্লভ জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ আর গাছপালার জন্য এ অরণ্য বিখ্যাত। সুন্দরবনের পরপরই পর্যটকদের কাছে বেশি জনপ্রিয় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।

সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে মসজিদটিতে সবুজ ছাদ দিয়ে নীল রঙ করা হয়েছে। প্রধান প্রবেশদ্বারে তিনটি কাঠের দরজা রয়েছে। মহিলাদের জন্য পৃথক এবাদতের জায়গা আছে এই মসজিদে। মসজিদের ডান পাশে ওজুখানা সাথে রয়েছে ছাদে ওঠার সিড়ি৷ গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে লাউয়াছড়া জামে মসজিদে ভিতরে জায়গা না পেয়ে মসজিদটি ছাদে নামাজ কয়েকজন মুসল্লী।

ঢাকা থেকে সপরিবারে লাওয়াছড়া দেখতে আসা আব্দুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই ঐ স্থানের নাম শুনে আসছি। এখন নিজের চোখে পুশু প্রাণীগুলো দেখে খুব ভালো লাগল। এর ফাঁকে জুম্মার নামাজ আদায় করতে পারে খুব খুশি হলাম৷

ঝালকাঠির রাজাপুর এলাকা থেকে পরিবার নিয়ে আসা আহমদ হোসেন বলেন, মসজিদের সৌন্দয নামাজের ব্যবস্থা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। ছেলেমেয়েরাও এখানে এসে আনন্দ পেয়েছে
উল্লুক, হরিণ ও বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী।

বিষয়টি স্বীকার করে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান জামে মসজিদের ইমাম ইমাম ইমরানুজ্জামান জানান, চার বছর ধরে এখানে ইমামতি করি। এমন একটি জাতীয় জায়গায় আধুনিক মডেল মসজিদের প্রয়োজন।

লাওয়াছড়ার নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে মার্চ পযর্ন্ত পযর্টকদের ভিড় থাকে বেশি। তিনি আরো বলেন, আমরা সবসময় দশর্নাথীের্দর সাবির্ক নিরাপত্তার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। ফলে দশর্নাথী মুসল্লীরা ছাদে কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই নামাজ আদায় করতে পারেন।

স্থানীয় লাওয়াছড়া পুঞ্জির হাতেম আলী বলেন, লাওয়াছড়া মসজিদটি থাকার করণে পযর্টকরা পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসছেন। নামাজের সময় মসজিদে আদায় সম্ভব হচ্ছে। বর্তমান পযর্টকদের আনাগোনা যে পরিমান বেড়েছে তাতে এই মসজিদটি বড় করা।

এই মসজিদটিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে নির্মিত প্রথম এবং একমাত্র মসজিদ বলা হয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৬৭ সালের ১২ ডিসেম্বরে এটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদের পাশে থাকা কালভার্টের দেয়ালটি ২০১৭ সালের মে মাসে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে পড়ে, যা পরিবহন চলাচলকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল। ২৮ মার্চ ২০১৮ সালে মসজিদের ইমাম গোবিন্দপুরের মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান মাছুম নিখোঁজ হন।

উল্লেখ্য, লাওয়াছড়া উদ্যানটি ১২৫০ হেক্টর আয়তনের বন জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে এই বনকে 'জাতীয় উদ্যান' হিসেবে ঘোষণা করে। বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের জন্য বন বিখ্যাত। উল্লূক ছাড়াও এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ এবং উদ্ভিদ।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ