শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


দুই মুসলিম নারীর নকশায় নান্দনিক মসজিদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মসজিদ মুসলিমসমাজের প্রাণকেন্দ্র। তাই মসজিদের নান্দনিকতাকে সমাজের গৌরব মনে করে মুসলিমরা। যুগে যুগে মুসলিম শাসক, শাসক পরিবারের সদস্য, ধনী ব্যক্তিরা দৃষ্টিনন্দন কালজয়ী মসজিদ নির্মাণ করে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

মুসলিম স্থপতিরা মনের মাধুরী মিশিয়ে গড়ে তুলেছেন সেসব মসজিদ। মসজিদ নির্মাণে অর্থদানে মুসলিম নারীদের নাম শোনা গেলেও স্থপতি হিসেবে নারীদের তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে দেখা যায় না। যেমন—৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে মরক্কোর ফেজ শহরে ফাতিমা আল-ফিহরির অর্থায়নে মসজিদ ও মাদরাসা স্থাপিত হয়েছিল মসজিদ ও মাদরাসা এবং ১৫৯৭ খ্রিস্টাব্দে সুলতান তৃতীয় মেহমুদের মায়ের অর্থায়নে স্থাপিত ইস্তাম্বুলের ইয়েনি ওয়ালিদ কমপ্লেক্স। কিন্তু প্রধান প্রধান মুসলিম অঞ্চলে মসজিদের স্থপতি হিসেবে নারীদের নাম শোনা যায় না।

সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি চীনের হেনান, সাংচি ও হিবেই প্রদেশে হুই জনজাতির মধ্যে ইসলাম খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর তখনই মসজিদের নকশা কেমন হবে তার দায়িত্ব মেয়েরা নিতে শুরু করে। মসজিদের নকশা থেকে দেখাশোনা সব কিছুতে হুই সম্প্রদায়ের মুসলমান নারীরা। আজও ওই অঞ্চলের ইমামের স্ত্রীরা সামলান মসজিদের দায়িত্ব।

আধুনিক যুগের মুসলিম নারীরা ক্রমেই পূর্বের প্রথা ভেঙে দিচ্ছে। প্রথা ভেঙে তারা মসজিদের মতো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থপতি হিসেবে কাজ করছে। এমন দুজন মুসলিম নারী-প্রতিভার নাম জয়নব ফাদিলি ওগলু ও জেহা হাদিদ। অপূর্ব সুন্দর ও আধুনিক মসজিদের নকশার জন্য তাঁরা পেয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্মান।

জয়নব ফাদিলি: তুর্কি নাগরিক জয়নব ফাদিলি ওগলু একাধিক মসজিদের নকশা করেছেন। তাঁর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো ইস্তাম্বুলের উস্কুদুর প্রদেশের শাকিরিন মসজিদ। এই মসজিদের নকশা করে তিনি দেশ-বিদেশের একাধিক পুরস্কার লাভ করেছেন। কারাখামেত সমাধিক্ষেত্রের প্রবেশপথের ঠিক সামনে অবস্থিত এই মসজিদটিকে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের মিশেল বলা যায়।

২০০৯ সালে স্থপিত এই মসজিদে ১২০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের বাইরের অংশ উজ্জ্বল রঙের, সমগ্র গম্বুজের ওপর মাছের আঁশের কারুকাজ করা এবং আছে দুটি উঁচু মিনার। মসজিদের গায়ের কায়সারি পাথরের কারুকাজ অত্যন্ত মনোগ্রাহী। জয়নব মনে করেন, মসজিদের মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর প্রতি মানুষকে নিয়োজিত করা। তাই নকশা এমন হওয়া উচিত, যা মানুষকে ধার্মিক ও বিশ্বাসী করে তোলে। প্রতিনিয়ত আরো উন্নতি করার মাধ্যমে সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছেন তুরস্কের এই বিখ্যাত মহিলা স্থপতি।

জেহা হাদিদ : ইরাকের স্থপতি জেহা নকশা তৈরিতে অসীম সাহসী। তাঁকে ‘কুইন অব কার্লস’ বলা হয়। কেননা তিনিই প্রথম স্থাপত্যে যুক্ত করেছেন ফ্রি ফ্লোয়িং জ্যামিতিক নকশা। ২০১২ সালে ব্রিটিশ অর্ডার অব কুইন সেকেন্ড এলিজাবেথ পেয়ে তিনি সম্মানিত হয়েছিলেন। তাঁর বেশির ভাগ কাজই অত্যন্ত আধুনিক ধাঁচের। জেহা হাদিদ বিভিন্ন শহরে নানাবিধ আধুনিক মসজিদের নকশা করেছেন।

তাঁর মতে, শহরে কত কম জায়গার মধ্যে আধুনিক মসজিদ স্থাপন করা যায় সেটাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। তাঁর নকশার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রিস্টিনা, কসোভোতে একটি মসজিদ ও সংগ্রহশালা। এ ছাড়া ফ্রান্সের স্ট্র্যাটাসবার্গে একটি মসজিদ। জেহা হাদিদ কিছুদিন আগে মারা যান।

সূত্র: সালাম ওয়েব অবলম্বনে ইকনা

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ