শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


দেশে বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ: কিভাবে দেখছে ইসলামি সাংস্কৃতিক অঙ্গন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

দেশে বিজ্ঞাপনসহ বিদেশী চ্যানেল সম্প্রচার না করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এর ফলে অপারেটররা শর্তভঙ্গ করায় গত ১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে বন্ধ রয়েছে বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার। বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে দেশব্যাপী। সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনার মূলে ছিল ভারতীয় টিভি সিরিয়াল প্রচার করে এমন চ্যানেলগুলো। বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ, পেইজ ও অনলাইন পত্রিকার কমেন্ট বক্সে বিষয়টি নিয়ে মিম তৈরি করতেও দেখা গেছে নেটিজেনদের।

গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের দর্শকদের মাঝে এক রকম প্রভাব বিস্তার করে আছে ভারতীয় টিভি সিরিয়াল প্রচার করা চ্যানেলগুলো। এতে করে দেশের সমাজ-সংস্কৃতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে শুরু থেকেই মতামত দিয়ে আসছেন সচেতন মহল।

ভারতীয় টিভি টিভি সিরিয়াল দেখতে না পারায় আত্মহত্যা, ঈদের সময় সিরিয়ালের বিশেষ চরিত্রের কাপড় কিনে না দেওয়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা, বিভিন্ন ক্রাইম সিরিজ দেখে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি- এমন খবরে প্রায়  আঁতকে ওঠেন দেশের মানুষ। এসব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা প্রায় এক দশক ধরেই চলে আসছে। এর মধ্যে হঠাৎ কয়েকদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বিদেশি চ্যানেল বন্ধ হওয়ার খবর। বিষয়টি নিয়ে দর্শক সমাজে বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে, যা ইতোমধ্যেই দেখা গেছে বিভিন্ন নেটমাধ্যমে।

যদিওবা  তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা কোনো চ্যানেল বন্ধ করিনি, বন্ধ করার জন্যও বলিনি। বাংলাদেশের আকাশ উন্মুক্ত। এখানে যে কোনো চ্যানেল সম্প্রচার করতে পারে কিন্তু সেটি দেশের আইন মেনে করতে হয়।’

তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে আরোপ করার শর্ত মানলে সারা দেশে আবারও চালু হতে পারে বিদেশি চ্যানেলগুলো। এদিকে শর্ত রক্ষা করায় ইতোমধ্যে সম্প্রচারের অনুমোদন পেয়েছে আল জাজিরা এইচডি, বিবিসি, সিএনএন, ডিডাব্লিউসহ ২৪ টি বিদেশি চ্যানেল। তবে এ তালিকায় এখনো নেই কোন ভারতীয় সিরিয়াল চ্যানেলের নাম।

এরপরও সাময়িক সময়ের জন্য হলেও দেশ ও দেশীয় স্বার্থ-সংস্কৃতি রক্ষায় বিষয়টিকে ইতিবাচক বলতে দেখা গেছে দেশের অধিকাংশ নেটনাগরিকদের।

বিদেশী চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ নিয়ে পুরো দেশে যখন তোলপাড় ঠিক এই সময়ে বিষয়টি কিভাবে দেখছেন ইসলামী সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষজন। তা জানতে আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরবের যুগ্ন নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদরুজ্জামানের সাথে।

তিনি বলেছেন, গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে মানুষ চাইলেই মুহূর্তে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গার খবর দেখতে পাচ্ছেন। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা, জার্মানি, তুরস্কের বিভিন্ন বিষয় জানতে পারছেন।

তার ভাষায়, ‘ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমের কারণে এখন সবকিছু সহজ। তাই বিদেশি চ্যানেল বন্ধের মাধ্যমে ভিনদেশী সংস্কৃতির প্রচার একেবারই বন্ধ হবে তা বলা যায় না, তবে এতে কিছুটা হলেও উপকার হবে বলা যেতে পরে’।

তবে মুহাম্মদ বদরুজ্জামানের মতে, দেশের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ রক্ষা করতে এসবের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হলো নৈতিক বিষয়গুলো গুরুত্ব দেওয়া, ভালো জিনিসের প্রচার করা, নৈতিক বিষয়ের দিকে মানুষকে দাওয়াত দেওয়া। ভালো কাজের প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা-এসবের মাধ্যমে মূলত অপসংস্কৃতির সয়লাব বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরবের যুগ্ন নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদরুজ্জামান।

এদিকে আওয়ার ইসলামের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় বি-বাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়ার শাইখুল হাদিস আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেছেন, দেশে বিদেশি প্রচার মাধ্যম বন্ধ হওয়া স্বস্তিদায়ক ও ইতিবাচক।

তিনি বলেছেন, পুরোপুরি না হলেও অনেকাংশেই দেশের সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়তে চলেছে ভিনদেশী মিডিয়ার অপসংস্কৃতির ফলে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ