শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


৭০ ভাগ বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছেন নারীরা: ‘অর্থনৈতিক সঙ্কট’ এর পেছনে কতটা দায়ী?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহমুদুল হাসান
বিশেষ প্রতিনিধি

করোনা মহামারিতে পারিবারিক সহিংসতার পাশাপাশি বিবাহ বিচ্ছেদের হারও বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের চেয়ারম্যান ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেছেন, ‘এ সময়ের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনার মধ্যে ৭০ শতাংই ঘটেছে নারী কর্তৃক।’

সুখী-সুন্দর সৌহার্দ্যপূর্ণ দাম্পত্য জীবন সকলেরই কাম্য। ইসলাম বিয়ের মাধ্যমে প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসার একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে সকলকে উৎসাহ প্রদান করে। দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যখন ভারসাম্যহীন, পারস্পরিক মনোমলিন্যতা ও সাংসারিক তিক্ততা দেখা দেয়, তখন একত্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য বিবাহ চুক্তির অবসান ঘটানোর সুযোগ ইসলাম রেখেছে। ইসলামে তালাকের ব্যবস্থা রাখলেও তালাক প্রদানে উৎসাহিত করা হয়নি। এটা নিরুপায়ের মাঝে উপায় হিসেবে গণ্য।

তবুও কেনো অপ্রত্যাশীতভাবে বাড়ছে এই বিবাহ বিচ্ছেদ? এর মূলত অর্থনৈতিক সঙ্গটই কি মূল কারন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ার ইসলামকে এক বিশেষ আলাপচারিতায় দেশের অন্যতম ফিকহ বিশেষজ্ঞ, রাজধানীর শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, বর্তমানে নারীদের থেকে অধিকহারে বিবাহ বিচ্ছেদের মূল কারণ হলো, নারীরা বিয়ের পর ইসলাম না মানা ইসলাম নারীদেরকে যে অনুশাসন দিয়েছে তার উপর না চলা।

দেশের অন্যতম এ ফিকহ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘স্বামীর অর্থনৈতিক সংকট নারীদের বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ বলে আমি মনে করি না। তবে এটাও কারণ হতে পারে। কিন্তু সেটা খুবই ছোট একটা কারণ। অর্থনৈতিক কারনেই যে নারীদের বিচ্ছেদ বাড়ছে বিষয়টি এমন নয়।’

তিনি আরো যুক্ত করেন, ‘বিচ্ছেদের কারণ খুঁজতে গেলে বর্তমানে দেখা যায় বিয়ের ক্ষেত্রে ইসলাম যে নীতিমালা দিয়েছে, তা মানা হয় না। হাদীসের ভাষ্যমতে বিয়ে যে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে মানা হয় না। কেননা হাদিসে বলা হয়েছে বিয়ের সময় পুরুষরা যেন মেয়ের দ্বীনদারিতাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেন, সৌন্দর্য্য বা অর্থ থাকবে প্রাসঙ্গিক। নবী করিম সা. বলেন, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদের বিয়ে করা হয়- সম্পদ, বংশমর্যাদা, সৌন্দর্য ও দ্বীনদারি। সুতরাং তুমি দ্বীনদারিকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে (সহিহ বুখারি)। কিন্তু বর্তমানে এ হাদিসের প্রতি খুবই কম দৃষ্টি দেয়া হচ্ছে।

এছাড়া বিয়ের আগেই অবৈধ প্রেম ও ছেলে মেয়ের পছন্দকে প্রধান্য দিয়ে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়। ফলে সেই সংসার সাধারণত খুব বেশি টেকে না। পাশাপাশি নারীদের বেপর্দা এবং বেগানা পুরুষের সাথে চলা ফেরা উঠা-বসা তাকে অন্য পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। অন্য পুরুষকে ভালো লাগতে শুরু করে। যার ফলে নারীরা বিচ্ছেদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে অজানা সুখের আশায়’- বলেন মুফতি মিযানুর রহমান সাইদ।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ