শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


পাঁচশো পরিবারে কুরবানির গোশত বিতরণ করেছে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মানজুম উমায়ের: পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম বিশ্বের প্রধান একটি আনন্দ-বিনোদন ও দ্বীনী ভাব-গাম্ভীর্যপূর্ণ বড় উপলক্ষ। এ দিনে নিজের ত্যাগের উম্মেষ ঘটাতেই মুসলমানগণ কুরবানি দেন পশু। মূলত পশু কুরবানি নয়, মনের পশুত্বকেই কুরবানি করবার উদ্দেশ্য থাকে মোমিনের। প্রতিবছরের মতো এবারও পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে কুরবানি অনুষ্ঠান।

বিশ্বের এমন দেশ নেই যেখানে আল্লাহর জন্য কুরবানি দেয়া হয়নি। কুরবানি ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর একটি জনবান্ধব অনুষ্ঠান। মানুষ ও মানবতার এ শিক্ষা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সময় থেকেই এসেছে। হযরত আদম আলাইহিমুস সালামের জামানা থেকেই কুরবানি প্রথা চালু ছিল।

তবে তখনকার কুরবানির পশু সাধারণ মানুষ খেতে পারতো না। শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতের জন্য বিশেষ সুযোগ- কুরবানির গোশত ভক্ষণ করতে পারা। এটি মানবতাবোধের একটি বড় অংশও বটে।

ঈদে সব পরিবারের শিশুরা আনন্দ পেতে চায়। একটু ভালো খাবার পেতে চায়। হতদরিদ্র পরিবারে অনেক সময় দিনের খাবার সংগ্রহ করতেই কষ্ট হয়। ঈদের দিন ভালো কিছু করার সামর্থ্য থাকে না। তবে তাদের শিশুরা চেয়ে থাকে আকাশের দিকে, ধনী পরিবারের কুরবানির দিকে।

সামর্থ্যবানদের কুরবানিতে এ কারণেই মহান আল্লাহ রেখেছেন গরিবের ভাগ। স্বজনের ভাগ। পাড়া-পড়শির ভাগ। এ ভাগ যেনো যথাযথভাবে হয় নবীজী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনভাগের একটি প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। তবে মানবতাবাদী অনেকেই পুরো কুরবানিই দিয়ে থাকেন দরিদ্র মানুষের জন্য। এবার সত্যিই সাদাকাহ ফাউন্ডেশন পবিত্র ঈদুল আজহায় অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে চমক দেখিয়েছে।

পাঁচশো পরিবারের মুখে কুরবানির গোশত তুলে দিয়ে অনন্য নজির স্থঅপন করেছে। দেশের ১৪টি স্থানে কুরবানির গোশত বিতরণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সাহায্য সংস্থা সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের।

এ সংস্থার স্বেচ্ছাসেবিরা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১৪টি প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় ৫০০ শতাধিক পরিবারে কুরবানির পশুর গোশত বিতরণ করেন। স্বভাবতই করোনা মহামারির দুর্যোগে আর্থিক সংকটে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ। এমন অদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাদের দুর্দশায় পাশে দাঁড়াতে আবারো এগিয়ে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এই সাহায্য সংস্থা সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্যই সাদাকাহ ফাউন্ডেশন। সাদাকার মাধ্যমে আমরা অনেক সাধারণ মানুষের কাছে এবারও কুরবানির ঈদে পৌঁছুতে পেরেছি। মহান আল্লাহর অনেক বড় মেহেরবানী। সামান্য হাসি ফুটানোর চেষ্টা আমরা সবসময় করি। তবে পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে হাসি ফুটানোর চেষ্টা একটি বড় উদ্যোগ বলে আমি মনে করি।

যারা সাদাকার কাজে সহযোগিতা করেছেন আমি তাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আপনারা নিজের মূল্যবান সময়কে দিয়েছেন। আপনাদের হৃদয়ের ভালোবাসা দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটা সবাই পারে না। আপনাদের এই ত্যাগ সাদাকা ফাউন্ডেশন কখনো ভুলবে না। আগামী দিনগুলোতেও সাদাকা ফাউন্ডেশন আপনাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা আশা করে।

প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, প্রবাসী ভাই-বোনদের জন্য আমরা সবসময় দুআ করি। আল্লাহ আপনাদের জানে মালে বরকত দান করুন। একজন মুসলমান আরেকজনের অঙ্গের মতো। নবীজীর এই হাদিসের মতো করেই আপনারা অভাবি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশে চাই। আল্লাহ আপনাদের চেষ্টাকে কবুল করুন।

দেশের ১৪টি স্থানে কুরবানির গোশত বিতরণ করেছে মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্র ভিত্তিক সাহায্য সংস্থা সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের। এ সংস্থার স্বেচ্ছাসেবিরা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১৪টি প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় ৫০০ শতাধিক পরিবারের মধ্যে কুরবানির পশুর গোশত বিতরণ করেন। কারণ করোনা মহামারির দুর্যোগে আর্থিক সংকটে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে তাদের দুর্দশায় পাশে দাঁড়াতে আবারো এগিয়ে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এই সাহায্য সংস্থা সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ।

পিরোজপুর, হবিগঞ্জ (মাধবপুর), বরগুনা, নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি), ঢাকার আফতাবনগর, তেজকুনিপাড়া (তেজগাঁও), বরিশালের চরমোনাই, ঢাকার মুগদা, চাঁদপুর, পটুয়াখালী, নরসিংদি, লালমনিরহাট ও নেত্রোকোনায় কুরবানির আয়োজন করে গোশত বিতরণ সম্পন্ন হয়।

ঈদের দিন সকালে পশু জবাইয়ের পরে গোশত প্রস্তুত করে প্রত্যেক এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষ ও অসহায় আলেম পরিবারে পৌঁছে দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে সংস্থা প্রধান বলেন, প্রতিবছরের মত এবারও আমরা কুরবানির মাংশ বিতরণ কার্যক্রম আয়োজন করতে পেরেছি। মানুষের কাছে সামর্থ্য অনুযায়ী কুরবানির গোশত পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগকে সফল করতে প্রবাসী যে সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী।

No description available.

এদিকে, সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের এমন সামাজিক উদ্যোগে শামিল হতে পেরে স্বেচ্ছাসেবী রুহুল আমীন জানান, ভাল কাজে সব সময় এগিয়ে থাকে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন। তাই ব্যবসা বানিজ্যের ব্যস্ততার পরেও যখনই সাদাকাহর কোন কাজের দাওয়াত পাই নিজেকে সেই কাজে সম্পৃক্ত করার জন্য এগিয়ে আসি। মনে করি এই উদ্যোগতো দেশে থেকে আ,মাদেরই নেয়া দরকার ছিল। কিন্তু প্রবাসে থেকে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের এ ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে আমাদের সর্বস্ব চেষ্টা থাকবে সব সময়।

আরেক স্বেচ্ছাসেবী তানভীর হাসান জানান, যখন নিম্ন আয়ের মানুষের হাতে এই কুরবানির গোশত তুলে দেয়া হয়, তাদের প্রাণখোলা হাসি দেখলে আয়োজনের সব কায়িক পরিশ্রমের কষ্ট মুহূর্তেই মিলিয়ে যায়। মনে হয় প্রশান্তিতে ভয়ে যায় মন। সাদাকাহ’র এমন আয়োজন আগামী দিনগুলোতে আরো বেশি বেশি হোক-সেই প্রত্যাশাও করেছেন উপকারভোগী নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষেরা।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের কুরবানির সময়েও দেশের ১৯ জেলায় মাংস বিতরণ করে মার্কিন এ সাহায্য সংস্থা।

মাধবপুরে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের গোশত বিতরণ: হবিগঞ্জের মাধবপুরে পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে কুরবানির গোশত বিতরণ করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ। ঈদুল আজহার দিনে সকালে ঈদের নামাজের পর কুরবানির জন্য নির্ধারিত পশু জবাই করা হয়। পরে তা প্যাকেটজাত করে দুস্থ ও অসহায় পরিবারের ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়।

গত ২১ জুলাই ২০২১ বুধবার দুপুরে দুস্থ ও অসহায় মানুষদের হাতে কুরবানির গোশত তুলে দেন সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ-এর প্রতিনিধি ও শীলন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাংবাদিক মাসউদুল কাদির।

ছড়াকার মাসউদুল কাদির বলেন, শিক্ষাবিদ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ দেশের অহংকার। তিনি আমেরিকায় থাকলেও তার মন পড়ে থাকে লালসবুজের এই বাংলাদেশে। এ দেশের আলেম উলামা ও অসহায় মানুষের কথা ভেবেই তার প্রতিষ্ঠিত সাদাকা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবার হবিগঞ্জের মাধবপুরে কুরবানির গোশত বণ্টনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

No description available.

আলেম সাংবাদিক মাওলানা মাসউদুল কাদির সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের প্রশংসা করে বলেন, সাদাকাহ ফাউন্ডেশন মানুষ ও মানবতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বসীরাই মানবসেবায় এগিয়ে আসে। সাদাকার উদ্যোগ ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ কবুল করবেন। সাদাকাহ বড় সাহায্য সংস্থায় রূপ নিক- এটাই আমাদের কামনা।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’এর গোশত পেয়ে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার অধিবাসী মুনীরুল ইসলাম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমি অনেক খুশি। সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র সঙ্গে যুক্ত সব ভাইদের প্রতি আমার দ্বীনী সালাম। আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুন। আমরা অসহায় মানুষ তাদের ভালোবাসা পেয়েছি। অনেক দূরে থেকেও আমাদের কথা, এ দেশের অসহায় মানুষদের কথা তারা মনে রেখেছেন। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় আশির্বাদ।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র গোশত বিতরণকালে হবিগঞ্জ ইকরা বাংলাদেশ-এর শিক্ষা সচিব মুফতী আনোয়ার আমীর বলেন, ঈদুল আজহা মূলত ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর একটি দিন। যাদের সামর্থ্য আছে, সুযোগ আছে তাদের উচিত এ দিনে নিজের ত্যাগের পরিচয়কে আবার শাণিত করা। সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ সে কাজটিই করেছে। আমরা এই সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র সঙ্গে যুক্ত সবার দীর্ঘায়ু কামনা করি।

গোশত বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন, সমাজসেবক শাহ আলম, কবি ও শিশুসাহিত্যিক শরীফ হাসানাত, মাওলানা আমিনুল হক সেলিমপ্রমুখ।

হবিগঞ্জের মাধবপুরে সাদাকা ফাউন্ডেশনের কুরবানির গোশত বিতরণের সবধরনের সহযোগিতা করে স্থানীয় হাজী আমির হোসাইন রহ. ফাউন্ডেশন ও হবিগঞ্জ উন্নয়ন সোসাইটি।

চরমোনাইয়ে সাদাকাহ’র গোশত বিতরণ: নিউইয়র্ক ভিত্তিক সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ বছরও চরমোনাইয়ে গরুর গোশত বিতরণ করা হয়েছে। সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএস কর্তৃপক্ষের সর্বোত দিক নির্দেশনায় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান দপ্তরের সচিব মাওলানা মুহাম্মাদ শামসুদদোহা তালুকদার। তাঁকে সহযোগিতা করেন সহকারী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সচিব মাওলানা আবদুর রাজ্জাক জিহাদী।

No description available.

বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্ট যারা কুরবানি দিতে অক্ষম ও স্থানীয় অসহায় দরিদ্রদের জন্য একটি গরু জবেহ করে অন্ততঃ সত্তর জনের মধ্যে গোশতের প্যাকেট বিতরণ করা হয়। সুবিধাপ্রাপ্তরা দাতাদের জন্য আন্তরিকভাবে দোয়া ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের এ কর্মসূচি আগামিতেও যেন অব্যাহত থাকে সে ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুফতী মুহাম্মাদ নূরুল কারীম। তিনি বলেন, যেকোনো উপায়ে সাধারণ ও অসহায় মানুষের পাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত। সাদাকাহ ফাউন্ডেশন এগিয়ে এসেছে। আমাদের বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য তৎপর রয়েছে। আমরা আগামী দিনগুলোতেও এমন কার্যক্রমের আশা রাখি।

বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান দপ্তরের সচিব মাওলানা মুহাম্মাদ শামসুদদোহা তালুকদার কুরবানির গোশত বিতরণ করে নিজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের কুরবানির গোশত বিতরণ কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত থেকে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। ঈদের সময় শত শত পরিবারে হাসি ফোটাতে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন সফল হয়েছে। আশা করবো তাদের এমন মানবিক কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত রাখবে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে গোশত পেয়ে হাফেজ তোবারক আলী জানান, আমরা গ্রামে থাকি। আয় কম। করোনার তা-বে আমরাও অসহায়ত্ববোধ করছি। এমন সময় নিউইয়র্ক ভিত্তিক সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আয়োজনে গোশত পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি। আল্লাহ তাদেরকে উত্তম জাযা দান করুন।

গোশত বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সচিব মাওলানা আবদুস সাত্তার, পরিদর্শন বিভাগের ইনচার্জ মাওলানা খাইরুল আলম সিদ্দীকি, সিনিয়র প্রশিক্ষক মাওলানা মিজানুর রহমান প্রমুখ।

রাজধানীর মুগদায় সাদাকার গোশত বিতরণ: ঈদের দিন সকালেই কুরবানি দেয়া হয় সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের নির্ধারিত পশু। কুরবানিটি সাধারণ মানুষদের জন্য দেয়া হচ্ছে জেনে অনেকেই ভিড় জমায়। পরে বেশ ক’জন শিশুকে একত্র করা হয় কুরবানির গোশতের প্যাকেট তাদের হাতে দিয়ে।

রাজধানীর মুগদায় শিশুদের হাতে কুরবানির গোশত তুলে দিয়েছেন আওয়ার ইসলাম সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব। তিনি বলেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। রাজধানী ঢাকার মুগদা এলাকায় সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি গরু কুরবানি হয়েছে। এলাকার সুবিধা বঞ্চিত শিশু, বিধবা নারীসহ ২৫টি পরিবারে কুরবানির গোশত পৌঁছানো হয়েছে।

মুগদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুর রহিম জনান, আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি-এত বড় একটা গোশতের প্যাকেট আমি পেয়ে। আমি আমার আম্মারে নিয়া এ গোশত রান্না করে খাব ইনশাআল্লাহ।

No description available.

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র কুরবানি করা গোশত বিতরণের দায়িত্বশীল মাওলানা কাউসার বলেন, কুরবানির মধ্যে যে তাকওয়া রয়েছে তা মূলত নিজের নামে কুরবানি দিলে তা ভালোভাবে পরখ করা যায়। তবে যে কুরবানি একান্তই অসহায় মানুষের জন্য, দুস্থ পরিবারের শিশুদের মুখে হাসি ফুটাবার জন্য-এতে কাজের মধ্যে একটা প্রশান্তি আছে। এখানে অন্য কারও কোনো ভাগ নেই।

শুধুই দরিদ্র মানুষের ঘরে পৌঁছাবার জন্য এ কুরবানির কাজে যারাই যুক্ত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন স্বানন্দে। খুশি মনে। আল্লাহ তাআলা সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র চেয়ারম্যান, দায়িত্বশীল ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে কবুল করুন। কোভিড ১৯-এর এই দুঃস্বময়ে সবাইকে সুস্থ রাখুন।

মাওলানা আবু আফ্ফান বলেন, মূলত আমরা ঈদের দিনে শিশুদের দাওয়াত করেছিলাম। তাদের হাতে কুরবানির গোশত পৌঁছে দিয়েছি। সাদাকা ফাউন্ডেশনের কুরবানি অনুষ্ঠান আমরা সফল করতে পেরেছি-এটাই আমাদের আনন্দ ও সার্থকতা।

বরগুনায় সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে সাদাকার গোশত বিতরণ : করোনাকালে বাংলাদেশের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ। প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে কুরবানির গোশত। অন্যান্য এলাকার মতো এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায়।

সেখানে ২৩ জন দুস্থ মানুষের হাতে কুরবানির গোশত তুলে দেওয়া হয়েছে। বিতরণ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেছে স্থানীয় মাসর ফাউন্ডেশন। সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন শহিদুল ইসলাম কবির।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, এটা অসাধারণ একটা উদ্যোগ। বিশেষকরে, করোনাকালে উপার্জন হারিয়ে সমাজের গরিব শ্রেণি যখন আরও শোচনীয় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে তখন এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।

আশাকরি, সাদাকাহ ফাউন্ডেশন তাদের এই আয়োজন অব্যাহত রাখবে। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে মানুষের মতো মানুষ হই, নবীজীর উম্মত হতে পারি, আল্লাহর খালেস বান্দা হতে পারি-তাহলে তো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজকেই সবচেয়ে বড় মনে করবো।

তিনি বলেন, অভাবি একজন মানুষ যখন বাইরে সামান্য সহযোগিতা পেলে তাদের আনন্দ বেড়ে যায়। আর এটা যদি ঈদের দিন হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। একটি দরিদ্র পরিবারে আনন্দ পৌঁছে দেয়াটা সামর্থ্যবান মানুষের দায়িত্বও।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র গোশত পেয়ে খুশি হয়ে উম্মে কুলসুম জানান, সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ আমাদের এলাকায় কুরবানি দিয়েছে। আমরা গোশত পেয়েছি। অনেক অনেক খুশি। আল্লাহ সবাইকে জানে-মালে বরকত দান করুন।

পিরোজপুরে দুস্থদের ঘরে গোশত পৌঁছে দিয়েছেন সাদাকাহ’র স্বেচ্ছাসেবীরা: বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশের পিরোজপুরে কুরবানির গোশত বিতরণ করেছে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ। পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার স্বরূপকাঠি পৌর এলাকায় বিতরণ করা হয় গরুর গোশত। ঈদের দিন সকালে ওই এলাকায় পশু জবাইয়ের পর করোনার কারণে গোশত নি¤œ আয়ের মানুষের ঘরে পৌঁছে দিয়েছে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রতিবছরের মতো এবারও পিরোজপুরে দুস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ।

No description available.

গোশত পেয়ে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের হতদরিদ্র শাহিনুর বেগম বলেন, কুরবানি দূরের কথা, করোনার কারণে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছি। সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের কল্যাণে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে কুরবানির গোশত খেতে পারব। সংশ্লিষ্ট সবাইকে অইেশ ধন্যবাদ।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীল বরাবরই মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। তারা বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা কুরবানির গোশত বিতরণ কার্যক্রম আয়োজন করতে পেরেছি। এজন্য আল্লাহর কাছে অনেক অনেক শুকরিয়া। একই সাথে এই উদ্যোগকে সফল করতে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

No description available.

সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের পিরোজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পিরোজপুর জেলার দুর্গাপুর গ্রামের মৃধাবড়ী জামে মসজিদ সমাজের ৪৬টি গরিব পরিবারের মধ্যে গোশত বিতরণ করা হয়। আমানতের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা মো. জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে সব সদস্যবৃন্দ এতে সতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে।

আলহাজ্ব মাওলানা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, মুসলমানের কাজই হলো অন্যের সঙ্গে ভালোবাসার সঙ্গে থাকা। পরের ভালো ও কল্যাণ কামনা করা। পবিত্র ঈদুল আজহায় গোশত বিতরণের চেয়ে আর ভালো কাজ আর কী হতে পারে? মহান আল্লাহ তাআলা ফাউন্ডেশনের সবার কৃতজ্ঞতা জানাই।

ময়মনসিংহে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের কুরবানির গোশত বিতরণ: সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ দেশের ময়মনসিংহেও কুরবানির আয়োজন করে। ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার বেতবাড়ী এলাকার অসহায় মানুষদের মধ্যে কুরবানির গোশত বিতরণ করা হয়।

ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার বেতবাড়ী এলাকার ২৫ জন দুস্থ মানুষের হাতে কুরবানির গোশত তুলে দেওয়া হয়। বিতরণ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেছে ফুলবাড়িয়া উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এবং বেতবাড়ী প্রগতি সংঘ নামের দুটি সংগঠন। সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন মোহাম্মদ তানভীর হোসাইন।

No description available.

সাদাকাহ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাওলানা তানভীর হোসাইন বলেন, আমি অনেক খুশি। এটা দারুণ একটা উদ্যোগ। বিশেষকরে, করোনাকালে উপার্জন হারিয়ে সমাজের গরিব শ্রেণি যখন আরও শোচনীয় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে তখন এই কার্যক্রম প্রশংসার দাবি রাখে।

আশাকরি, সাদাকাহ ফাউন্ডেশন তাদের এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে। পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে গোশত পেয়ে আবদুর রহিম বলেন, আমরা সাধারণ মানুষ। সবসময় বঞ্চিত হই। সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ঈদুল আজহায় আমাদের খোঁজ নিয়েছে। গোশত দিয়েছে। খুবই খুশি আমি।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র কুরবানি করা গোশত পেয়ে ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার বেতবাড়ী এলাকার দিনমজুর শামসুল আলম জানান, একপ্যাকেট গোশত পেয়ে ঘরে যেনো আনন্দ কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম। আগের মতো দুস্থরা ঘরের গোশত পায় না। বাজারে মাংসের দাম বেশি হওয়ায় কুরবানি দাতারাই এখন গোশত রেখে দেন।

সাধারণ আমরা যারা গরিব এক বেলা রান্নার গোশতও এখন পাই না। আর যারা হাত পাততে পারে না, তাদের আত্মীয়স্বজন কুরবানি না দিলে এক টুকরো গোশতও জুটে না। আল্লাহ তাআলা সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র দায়িত্বশীলদের কবুল করুন।

চাঁদপুরে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের গোশত পেয়ে আনন্দিত দুস্থরা: চাঁদপুরের হাইমচরে পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে কুরবানির পশুর গোশত বিতরণ করেছে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ। সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র স্থানীয় প্রতিনিধি সাঈদ রহমান কুরবানির পশুর গোশত প্রস্তুত হয়ে গেলে দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করেন।

No description available.

তিনি বলেন, মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা আনন্দের। যেকোনো উপায়ে কাউকে কিছু দিতে পারার মধ্যে যে আনন্দ তা অন্য কিছুতে নেই। পবিত্র দিন ঈদে আমাদের নবীজীও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাদাকাহ ফাউন্ডেশন সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই এমন সুন্দর আয়োজন করার জন্য।

রাজধানীর ফার্মগেটে সাদাকাহর কুরবানি: সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র পক্ষে ঢাকার ব্যস্ত এলাকা ফার্মগেটে দুস্থদের জন্য একটি কুরবানি ব্যবস্থা করা হয়। পরে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র প্রতিনিধি ঈদুল আজহার দিন দুপুরে দুস্থ ও অসহায় মানুষদের মধ্যে কুরবানির গোশত বিতরণ করা হয়।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র তেজগাঁও প্রতিনিধি বলেন, ঈদুল আজহার দিন খুব দ্রুতই গোশত বানানোর কাজটা শেষ করতে পেরেছিলাম। আগে থেকে কিছু অভাবি মানুষকে বলে রেখেছিলাম। রাজধানীতে ছিন্নমূল মানুষের অভাব নেই।

তবে গোশত সংগ্রহ করে একটা শ্রেণি আবার তা নিয়ে বাজারে বিক্রি করে দেয়। আমরা এমন মানুষকে গোশত না দেয়ার চেষ্টা করেছি। প্রকৃত দুস্থ-অভাবি দেখে পবিত্র আমানত কুরবানির গোশত বিতরণের চেষ্টা করেছি। এতে আমাদের প্রাথমিকভাবে একটু কষ্ট হয়েছে বটে তবে আমরা আলহামদুলিল্লাহ, সক্ষম হয়েছি।

ঢাকার আফতাবনগরে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের কুরবানি: রাজধানীর আফতাবনগরে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষে কুরবানি আয়োজন করেন ইসলাম প্রতিদিন সম্পাদক মিরাজ রহমান। পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে ঈদের নামাজের পরই দ্রুততার সঙ্গে কুরবানি দেয়া হয়। পরে হতদরিদ্র মানুষের হাতে কুরবানির গোশত তুলে দেয়া হয়।

মিরাজ রহমান জানান, প্রতি প্যাকেটে এক কেজি করে মোট ২৪ প্যাকেটে গোশত বিতরণ করা হয়েছে। আফতাব নগর ঢাকায় যাদেরকে বিতরণ করা হয়েছে গত বছর বা এর আগেরর বছর এদের অনেকেই কুরবানী দিয়েছিলেন।

দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোটা আনন্দের জানিয়ে সাংবাদিক-উপস্থাপক মিরাজ রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকে প্রতি বছর দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে কুরবানীর গোশত বিতরণসহ বাংলাদেশের যে কোনো দুর্যোগ-দুর্দিনে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকাভিত্তিক সাহায্য সংস্থা সাদাকাহ ফাউন্ডেশন। দারিদ্রপীরিত অসহায় মানুষের সহযোগিতায় এ সংস্থার ব্যতিক্রমী ধারার আয়োজন-প্লানিংগুলো বরাবরই আমাকে আকর্ষিত করে।

এবারও প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারে কুরবানীর গোশত বিতরণ করেছে সাদাকাহ। এমন একটি সাহায্য সংস্থার সজ্ঞে প্রতিষ্ঠার সূচনা থেকে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত। আশা করি সাদাকাহ ফাউন্ডেশন একদিন সাহায্য সংস্থার রোল মডেল হবে ইনশাআল্লাহ।

আফতাব নগরের মো. ফেরদৌস সেলিম বলেন, করোনায় আমাদের অবস্থা খুব করুন। এমন পরিস্থিতিতে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের উসিলায় বউ-বচ্চা নিয়ে ২ দিন দুইবেলা কুরবানীর গোশত খাওয়া ভাগ্য হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ এ ফাউন্ডেশনকে কবুল করুন। এ প্রতিষ্ঠানের মালিকদের জন্য মন থেকে দোয়া করি। আমার মতো লাখ লাখ মানুষকে যেন সাদাকাহ সাহায্য করতে পারে আল্লাহ সেই তাওফিক দিউক। আমিন।

লালনিরহাটে কুরবানির গোশত বিতরণ: সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষে উপস্থাপন ও প্রখ্যাত দাঈ খালিদ সাইফুল্লাহ বকসীর নেতৃত্ব দুস্থদের পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে গোশত বিতরণ করা হয়। সীমান্ত জেলা লালনিরহাটের তুষভান্ডারে সাধারণ অসহায় মানুষকে টার্গেট করে এ কুরবানির ব্যবস্থা করা হয়। অসহায় গরিবরা কুরবানির গোশত পেয়ে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের প্রশংসা করেন।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষে খালিদ সাইফুল্লাহ বকসী বলেন, আল্লাহর মেহেরবানী, আমরা পবিত্র ঈদে সাদাকাহর সহযোগিতায় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি। আল্লাহ তাআলা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কবুল করুন। যারা এসব কুরবানির জন্য অর্থায়ন করেছেন সবাইকে আল্লাহ কবুল করুন।

কুরবানির গোশত পেয়েছেন সীমান্ত জেলা লালনিরহাটের তুষভান্ডার এলকার দরিদ্র পরিবারের প্রধান আমেনা খাতুন। তিনি বলেন, আমাদের খোঁজ কেউ নেয় না। সাদাকাহ নামের ফাউন্ডেশন আমাদের খোঁজ নিয়েছে। আল্লাহ তাগোরে ভালো করুক।

পিরোজপুর, হবিগঞ্জ, বরগুনা, নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি), ঢাকার আফতাবনগর, ফার্মগেট, তেজকুনিপাড়া (তেজগাঁও), বরিশালের চরমোনাই, ঢাকার মুগদা, চাঁদপুর, পটুয়াখালী, নরসিংদি, লালমনিরহাট ও নেত্রোকোনায় সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষে কুরবানি প্রদান করা হয়।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ প্রকৃত দেশ ও মানবপ্রেমিকদের প্রতিনিধি বানানোর কারণে কুরবানি ২০২১ কর্মসূচি বাস্তবায়নে বেগ পেতে হয়নি। সাদাকাহ’র প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রত্যেই স্ব স্ব স্থানে উজ্জ্বল ও সফল ব্যক্তি। দেশের যেকোনো খ্যাতনামা সংগঠন বা সংস্থার তুলনায় সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ অত্যন্ত সফলভাবে কুরবানি কর্মসূচি ২০২১ সম্পাদন করতে পেরেছে। প্রতিনিধি সক্ষম না হলে, স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী না হলে সামাজিক কাজে সাধারণত সমস্যা হয়।

এ সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ছিলো সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ। কারণ, গণমাধ্যমে প্রভাব রাখেন, সামাজিকভাবেও খ্যাতি রয়েছে এমন ব্যক্তিরা প্রতিনির্ধিত্ব করেন। ফলে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ বরাবরের মতো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজটি যথাযথভাবে করতে পেরেছে।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন কেবল ইদুল আজহায় নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই, মানুষের পাশে থাকছে সংস্থাটি। যেকোনো দুর্যোগে, অতিমারি বা মহামারিতেও তৎপর সংগঠনটি। তথ্য- যোগাযোগের ক্ষেত্রে সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ অদ্বিতীয়।

দাওয়াতের ক্ষেত্রে, দাঈ গঠনের ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে সংস্থাটি। এর আগে করোনা ভাইরাসের কারণে নিউইয়র্কসহ আমেরিকায় মানুষ চরম সংকটে পড়লে মানুষের পাশে দাঁড়ায় সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ। আমেরিকায় বিপদাপন্ন যেকোনো মানুষ সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের ৭১৮ ২০০ ৯২২২ এই হটলাইনে যোগাযোগ করে সমস্যার কথা জানালে প্রতিষ্ঠানটি সহযোগিতায় এগিয়ে যায়।

এ বিষয়ে সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা বলেন, আমেরিকায় কেউই ত্রাণ নিয়ে জীবনযাপন করার অবস্থানে নেই। কেউ কেউ সাময়িক সমস্যায় পড়েছেন। আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছি সামর্থ্য অনুযায়ী। অনেকে বাসায় থেকে থেকে অসুস্থবোধ করছেন। তাদের আমরা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিই।

তিনি বলেন, অনেকে জানেন না কেউ মারা যাওয়ার পরে কোথায় কীভাবে শেষকৃত্য বা কাফন দাফন করতে হয়। কোন ফিনারেলে গেলে দ্রুত কাজ হয়। আমরা এসব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করি। একটি লাশ দাফনে অন্তত পাঁচ হাজার ডলার খরচ হয়। অনেকের সেই সামর্থ্য থাকে না। এ বিষয়ে যারা অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে তাদের সাথে আমারা যোগাযোগ করিয়ে দেই।

প্রসঙ্গত, সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমকে বেগবান করতে, আরও মানুষের কাছাকাছি উপকার পৌঁছে দিতে চাইলে যে কেউ দান করতে পারবেন। সাধারণ দ্বীন ও মানবদরদি মানুষের অনুদানেই মূলত এগিয়ে চলেছে এ সংগঠন। সেচ্ছাসেবী হিসেবে ঘরে বসে বা স্বশরীরে অংশগ্রহণও করতে পারেন আপনি। সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের সেবা নিতে বা সেবা কাজে যুক্ত হওয়ার জন্য sadaqahusa.org এই ওয়েবসাইটে বিস্তারিত জানার সুযোগ আছে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর