বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


ক্ষমা চাইলো এস.এন্ড.পি বাংলা লিমিটিড: বেরিয়ে এলো আরেক নতুন তথ্য

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।কাউসার লাবীব।।

তোপের মুখে অবশেষে ক্ষমা চেয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলো খ্রিষ্টান মালিকানাধীন গার্মেন্টস ‘এস.এন্ড.পি বাংলা লিমিটেড’। প্রতিষ্ঠানটির জিএম মাহবুব আলম আওয়ার ইসলামকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, টঙ্গীর সাতাইস, দাড়াইলে অবস্থিত ‘এস.এন্ড.পি বাংলা লিমিটেড’ এক গামেন্টেস কর্তৃপক্ষ শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের ধর্মী পোশাক ও নামাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাদের এ সিদ্ধান্তের ফলে সেখানে কাজ করা প্রায় কয়েক হাজার কর্মী নামাজ আদায় নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। পরে বিষয়টি স্থানীয় জনগণ ও প্রসাশনের নজরে এলে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য ফ্যাক্টরির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়।

মাহবুব আলম জানান, ‘আজ (৫ আগস্ট) সকালে প্রশাসন ও এলাকাবাসীর অনুরোধে আমাদের মালিক তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এবং ফ্যাক্টরির পাঁচ তলায় শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের নামাজের ব্যবস্থা করে দেন। পাশাপাশি নতুন নোটিশ জারি করেন।’

নতুন নোটিশে বলা হয়, শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের জানানো যাচ্ছে যে, ইংরেজি ৩-৮-২১ তারিখের নোটিশের প্রেক্ষিতে বর্ণিত গার্মেন্টস-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে পুনরায় জানাচ্ছি যে, ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে নামাজ পড়া এবং পাঞ্জাবি, টুপি পড়া থেকে বিরত থাকার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল সিদ্ধান্ত ছিল, যার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।

‘আমার ফ্যাক্টরিতে শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ পূর্বের ন্যায় যার যার ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী পোশাকপরিচ্ছেদ পরিধানসহ স্বাধীনভাবে ইবাদত বন্দেগী করিতে পারিবেন। উল্লেখ্য যে, অত্র ফ্যাক্টরির ৫ম তলার দক্ষিণ পার্শ্বে অযু করার ব্যবস্থাসহ নামাজের জন্য নির্ধারিত স্থান রয়েছে’- বলা হয় নতুন নোটিশে।

নোটিশে আরো বলা হয়, ‘৯২% মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশ হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে অনিচ্ছাকৃত আঘাতের জন্য আমি বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থণা করছি।’

এদিকে, স্থানীয় এক মসজিদের খতিব মাওলানা মাহবুব নোমানী জানান, আজ বাদ ফজর আমরা সেই ফ্যাক্টোরি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম৷ সেখানে গিয়ে জানতে পারি, গতকাল কিছু মুসল্লি ফ্যাক্টোরিতে নামাজ পড়াকালে তাদের জায়নামাজ ছুড়ে ফেলা হয়৷ এবং সেখানে নামাজ, দাড়ি, টুপি, পাঞ্জাবির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়৷ তাৎক্ষণিকভাবে শ্রমিকরা এর প্রতিবাদ করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তাদের নামাজের অনুমতি প্রদান করা হয় এবং এ মর্মে আরেকটি নোটিশ টানানো হয়৷ নোটিশে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং ৫ম তলায় অজুর ব্যবস্থাসহ নামাজের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷

আমরা এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ফ্যক্টোরির মালিক খ্রিস্টানধর্মাবলম্বী৷ সে প্রতি রোববার সকল শ্রমিকদেরকে তাদের ধর্মীয় উপাসনায় শামিল করে এবং তা করতে বাধ্য করে। এটি অবশ্যই নিন্দনীয়৷ কোনো ব্যক্তিকে অন্য ধর্মের উপাসনায় বাধ্য করা আইনত অপরাধ- বলেন, মাওলানা মাহবুব নোমানী।

প্রতি রোববার সকল শ্রমিকদেরকে তাদের ধর্মীয় উপাসনায় শামিল করা এবং তা করতে বাধ্য করা হয় কিনা? জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির জিএম মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা শিকার করে আওয়ার ইসলামকে বলেন, সকল কর্মীকে বাধ্য করা হয় না। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনেকটা বাধ্য করা হয়।

আমাদের মালিক বাংলাদেশি নন। তিনি মূলত কোরিয়ান। তার নাম কুয়াক বু কিউন। তিনি একজন খ্রিস্টান ধর্মালম্বী। তাই আবেগের জায়গা থেকে তিনি এমনটি করে থাকেন। তবে এ বিষয়টিও কীভাবে বন্ধ করা যায়; সে বিষয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ ফিকির করছেন- বলেন, জিএম মাহবুব আলম।

প্রসঙ্গত, এস.এন্ড.পি বাংলা লিমিটেড’র জারিকৃত পূর্বের নোটিশে বলা হয়েছিল, ‘এতদ্বারা অত্র কারখানার সকল শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আমাদের ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে নামাজ পড়া যাবে না এবং ফ্যাক্টরিতে পাঞ্জাবি ও টুপি পড়া যাবে না। এই আদেশ মেনে ফ্যাক্টরির ভেতরে কাজ করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ করা হচ্ছে।’

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ