শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ঋণের ভারে ন্যুজ দেশের অর্থনীতি: মির্জা ফখরুল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: দেশের অর্থনীতি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশি ঋণ নির্ভর হয়ে পড়ছে এবং এটা এখন শেষ সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থনীতিতে গত এক যুগ ধরে সরকারের ভ্রান্ত অর্থনৈতিক নীতির বাস্তবায়ন চলছে। যার প্রভাবে এক ধরনের মন্দাভাব চলছে, উৎপাদন খাত শ্নথ হয়ে পড়েছে। ফলে রাজস্ব আয় কাংখিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর সব ক্ষেত্রে আদায় কম। আয় কমে যাওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।’

সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকার এখন 'লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন' নীতিতে চলছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমান ধরা হচ্ছে, ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬.১ ভাগ। প্রতি বছর জুন মাসে দেশের মানুষ কল্পিত এক স্বপ্নের ফানুসে আবৃত বিশাল আকারের বাজেট দেখছে। আর নিজের অজান্তেই সদ্যজাত শিশুর মাথায় ঋণের বোঝা চাপছে। ইতোমধ্যে আজ যে শিশুটির জন্ম হয়েছে তার মাথায় ৮৪ হাজার ৭৭০ টাকা ঋণের দায় চাপছে। এরকম চলতে থাকলে আগামী অর্থবছরে ১ লাখ টাকার কাছে এই ঋণ চলে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘একগুচ্ছ বৃহৎ মেগা প্রকল্পের সঙ্গে বাড়ছে দৈনন্দিন খরচ। বছরের পর বছর ধরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ব্যয় অযৌক্তিকভাবে বাড়াচ্ছে সরকার। সব মিলিয়ে ব্যয় বেড়েই চলেছে।’

‘বৈশ্বিক মহামারী করোনার সর্বগ্রাসী ছোবলের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে দেশে দেশে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সুরক্ষা ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়গুলো। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় কাতার ও ভিয়েতনামসহ অনেক দেশই সরকারী ব্যয়ের খাত সংকুচিত করার পথ অনুসরণ করেছে। অন্যদিকে গণবিচ্ছিন্ন সরকার গত বছরের মতো এবারো সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বাবাদ ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। গত এক দশকে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির হার দাড়িয়েছে ২২১ শতাংশ।’ – যোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে বৈদেশিক অনুদান কমছে। বাড়ছে কঠিন শর্তের ঋণ। বৈদেশিক ঋণের বোঝা বেড়েই চলেছেছ। প্রত্যেক মানুষের মাথায় এই ঋণের বোঝা চাপবে। এখন মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা। প্রতি বছর সরকারের সুদ ব্যয় বেড়েই চলেছে। তিন বছরের সুদ ব্যয় হবে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সর্বাত্মক ঋণ গ্রহণের জন্য প্রধান দায়ী সরকারের ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতা। কর আদায় করতে না পারায় সরকারকে বেশি ঋণের আশ্রয় নিতে হচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের অব্যবস্থাপনা উন্নয়নে যদি সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয় তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব শীঘ্রই জটিল পরিস্থিতির মাঝে উপনীত হবে। বাংলাদেশ এখনো স্বল্পোন্নত দেশ। ফলে বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাক এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার মতো ঋণদাতাদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধায় ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আর থাকবে না। এই সামগ্রিক অর্থনৈতিক দুর্বলতা চিহ্নিত করে একটি সমন্বিত নীতি পরিকল্পনা গ্রহণ না করে তবে ঋণের ভারে দেশের অর্থনীতি বিকলাঙ্গ কাঠামোয় পরিণত হবে।’

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ