শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

শিক্ষার্থীদের এ ভোগান্তির শেষ কোথায়!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আমিনুর রহমান হাসান।।

বর্তমান বিশ্ব এক আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। করোনার প্রভাব পুরো বিশ্বে বিস্তার লাভ করেছে। বাংলাদেশও সেটা থেকে মুক্ত নয়। করোনা মহামারির আকার ধারণ করায় গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পনেরো মাস পূর্ণ হতে চলছে।

দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে, পড়াশোনা থেকে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গিয়েছে। অনেকে আবার পড়াশোনা নিয়ে আশা-নিরাশার মাঝামাঝি আছে।

গত ১৪ জানুয়ারি ২০২১ জাগো নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ‘করোনা মহামারির সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর মাঝে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই রয়েছে ১১ জন। কিন্তু এসব শিক্ষার্থী কেন আত্মহত্যা করেছে, তা জানতে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। পরামর্শদান দফতর থাকলেও সেখানে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না। তবে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবার ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিষণ্নতা, শিক্ষাজীবন নিয়ে হতাশা, সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে তারা আত্মহননের পথ বেছে নেন।’

এটা আমাদের দেশের সর্বোচ্চা বিদ্যাপীঠ চিত্র। এছাড়াও অনেক কলেজ ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা আর্থিক সমস্যা, হতাশা, আরও বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। কিছু খবর তো পত্রিকার পাতায় চোখ বুলালে জানা যায়। অনেক সংবাদ জানা যায় না।

প্রাথমিক লেভেলের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন খারাপ পথ বেছে নিচ্ছে। ধনী বাবা-মায়ের সন্তানরা তো নানারকম গেমসে আসক্ত হচ্ছে। ‘দিন এনে দিন খায়’ এরকম পরিবারের সন্তানরা তো অসৎ সঙ্গে খারাপ হচ্ছে। গ্রামের ছেলেরা ইন্টারমেডিয়েট লেভেল পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার জন্য শহরে আসে। থাকার জন্য মেস বা বাসা ভাড়া নেয়। পার্টটাইম জব বা টিউশনি করে থাকা-খাওয়ার খরচ জোগাড় করে। অনেকে আবার নিজের খরচের পাশাপাশি বাড়িতেও টাকা পাঠায়।

করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা বাধ্য হয়েই কাঙ্ক্ষিত পড়াশোনা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে নতুন জীবনের সূচনা করছে।

একটা জাতির উন্নতি নির্ভর করে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। শিক্ষা ব্যবস্থা যতো ভালো হবে, সে জাতি ততো উন্নত হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে দিলে সে জাতির উন্নতি আশা করা যায় না। জ্ঞানীরা বলেন, ‘একটা দেশকে ধ্বংস করতে পারমাণবিক বোমার প্রয়োজন নেই, সেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্ট করে দিলেই দেশ ধ্বংস অনিবার্য’।

মহামারি করোনার প্রকোপ থেকে বিশ্বের কোনো দেশই ছাড় পায়নি। তবে আমাদের দেশের মতো অন্য কোনো দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এতো দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকেনি।

অনলাইন ক্লাসের যতোই ব্যাবস্থা করা হোক, সকল শিক্ষার্থীরা সেটা করতে পারছে না। বিশেষ করে গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা বহুমুখী সমস্যার কারণে অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত। তাছাড়া অনলাইন ক্লাসের দোহাই দিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা আসক্ত হচ্ছে স্মার্টফোনে। এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে মাতাপিতাদের দুশ্চিন্তা আর উদ্বিগ্ন যেনো প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে।

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশের শিক্ষামন্ত্রনালয় এবং স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি অনুরোধ করবো, শিক্ষার্থীদের কোনোধরণের হয়রানি বা ভোগান্তি ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া হোক সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা ফিরে পাক শিক্ষার আলো।

লেখক: স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ