বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’ মালয়েশিয়ার সিটি ইউনিভার্সিটিতে সম্পন্ন হলো বিয়াম'র চ্যাপ্টার কমিটি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জ্যামাইকার আগামীদিনে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হবে দেশের হজ ব্যবস্থাপনা: ধর্মমন্ত্রী সকালে ইসতিসকার নামাজ আদায়, রাতেই নামল স্বস্তির বৃষ্টি চাঁদ মামার বয়স হয়েছে! চাঁদের বয়স কত?

রমজানেই আল্লাহর রঙে রঙিন হতে হবে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জামীল আহমাদ

ইসলাম ও মুসলমানদের ব্যাপারে ইহুদি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় সব সময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকতো। সে প্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে তাদের ঈমানের বিদ্বেষ পোষণকারী চক্রান্তকারীদের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইয়াহুদি ও নাসারাগণ প্রতিনিয়ত এ অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে যে, তোমাদেরকে তাদের মতাদর্শের রঙে রঙিন করে দিবে।

খ্রিস্টানরা বলতো আমাদের এক প্রকার রঙ আছে যা মুসলমানদের নেই। তাদের স্থিরকৃত রং ছিল হলুদ। তাদের নিয়ম ছিল, যখন কোনো শিশুর জন্ম হতো, অথবা কেউ যখন তাদের দ্বীনে দীক্ষিত তখন তাকে সে রঙে ডুব দেয়ানো হতো।

তারপর তারা বলতো এবার সে খাঁটি খ্রিস্টান হয়ে গেল। আল্লাহ বলেন দিলেন, হে মুসলমানগণ! তোমরা বলে দাও, তাদের পানির রং ধুলে তা শেষ হয়ে যায়। ধোয়ার পর এর কোনো প্রভাব বাকি থাকে না। বরং প্রকৃত রং তো হলো আল্লাহর দ্বীন ও মিল্লাতের রং; আমরা আল্লাহর দ্বীনকে গ্রহণ করেছি। এ দ্বীন যে গ্রহণ করে সে সর্ব প্রকার মলিনতা থেকে পবিত্র হয়ে যায়।

দ্বীনকে রং বলে এ দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, রং যেরূপ চোখে অনুভব করা যায়; অনুরূপ মুমিনের ঈমানেরও আলামত রয়েছে, যা তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এবং সকল কাজ-কর্মে ফুটে উঠা উচিত। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বান্দাদের তার রঙে রঙিন হওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন- তোমরা বলো, আমরা গ্রহণ করেছি আল্লাহর রং। আল্লাহর রঙের চেয়ে কার রং উত্তম? এবং আমরা তাঁরই ইবাদত করি। (সুরা বাকারা: ১৩৮)

ক্ষণস্থায়ী এ পৃথিবীতে মানুষের হায়াত খুবই অল্প। এ সময়ে মানুষের কর্তব্য কী? আল্লাহতায়ালাই ঘোষণা করছেন- ‘সময়ের শপথ, নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মধ্যে আছে, কিন্তু (তারা নয়) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে এবং যারা পরস্পরকে সত্যের তাকিদ দিয়েছে ও পরস্পরকে ধৈর্যের সবক দিয়েছেন (সুরা আসর)। অর্থাৎ বিশ্বের সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে যদি তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে পরিচালিত না হয়। আল্লাহর রঙে রঞ্জিত না হয়।

তাছাড়া রোজার সামগ্রিক শিক্ষাও এটি। মানুষের ঈমান আমলের সংশোধন, ব্যক্তিজীবনে তার প্রতিফলন, পরোপকার ও হিতকামী মনন ও দুঃখ-কষ্টে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ঈমান রাখা এগুলোর প্রশিক্ষণই নিতে হয় রমজানে। রোজায় নিজের দেহ ও মনকে পূর্ণভাবে আল্লাহর রঙে রাঙিয়ে নিতে হবে।

নবীজি (সা.) বলেন, তোমরা আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হও। আল্লাহর রং বা গুণ কী? তা হল আল্লাহতায়ালার গুণবাচক ৯৯ নাম। আল্লাহর নামাবলী আত্মস্থ করার বা ধারণ করার অর্থ হল সেগুলোর ভাব ও গুণ অর্জন করা এবং সেসব গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য কাজকর্মে, আচরণে প্রকাশ করা তথা নিজেকে সেসব গুণের অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা।

আল্লাহ তাআলা যে রং দ্বারা সমগ্র পৃথিবীকে রাঙিয়ে তুলতে চান, তা হলো- মানবমণ্ডলীর কাছে তিনি যে আসমানি গ্রন্থসহ শেষ রাসুল প্রেরণ করেছেন, তার মাধ্যমে কুরআনের মতাদর্শ দ্বারা সারা পৃথিবী জুড়ে একটি ঐক্যবদ্ধ মানবতাবোধ গড়ে তোলা।

যেখানে থাকবে না কোনো হিংষা-বিদ্বেষ, গোত্র প্রীতি ও স্বজন প্রীতি, থাকবে না কোনো বর্ণ প্রীতি; সমাজের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত হবে ন্যায় ও ইনসাফ। সবার মাঝে বিরাজ করবে এক আল্লাহর গুণগান।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামের রঙে রঙিন হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক: উস্তাযুল হাদীস, দারুল উলূম রামপুরা বনশ্রী মাদরাসা, ঢাকা

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ