শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


বিশ্ব নেতাদের চোখে বঙ্গবন্ধু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

মুজিবশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে বাংলাদেশ। সরকারিভাবে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ বিদেশি অতিথিদের নিয়ে পালন করা হয়েছে স্বাধীনতা উৎসব ও মুজিব জন্মশতবার্ষিকী। একে একে এসেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট, শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী, নেপালের প্রেসিডেন্ট, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।

তবে করোনাকালে মুজিবশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সরাসরি যোগ দিতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ান। একই দিনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন,  জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছেন।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালার শেষ দিন শুক্রবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে এই ভিডিওবার্তা প্রচার করা হয়।

বাংলাদেশ  মানবিকতা ও উদারতার উদাহরণ:

শুভেচ্ছাবার্তায় জো বাইডেন বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক নজির হয়ে উঠেছে। মানবিকতা ও উদারতার উদাহরণ তৈরি করেছে দেশটি। লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে মানবাধিকারের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের জনগণের জন্য বাংলাদেশ একটি উদাহরণ।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় দুই দেশের প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করে একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

বিখ্যাত রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন বঙ্গবন্ধু:

মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান  বলেন, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ মহামারির জন্য আমার পক্ষে এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তবে যদি পরিস্থিতি ভালো হয়, বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা আমার আছে।

বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে এরদোগান বলেন, দুদেশের জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্বমূলক অনুভূতি আমাদের সম্পর্ককে আরও উন্নত করার জন্য ইচ্ছাশক্তিকে দৃঢ় করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, আপনার পিতা, বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জন্য সংগ্রাম ও ত্যাগের মাধ্যমে বিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে আমাদের সম্পর্ক ও সহযোগিতা আরও গভীর হবে।

সামাজিক উন্নয়ন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ অনন্য:

গত পাঁচ দশকে সামাজিক উন্নয়ন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যে ভূমিকা রেখে আসছে, তাকে অসাধারণ বলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

বাংলাদেশের নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে আসার পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামে ভূমিকা এবং মিয়ানমার থেকে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার প্রশংসা করেন তিনি।

টেকসই উন্নয়নে ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘ বাংলাদেশের পাশে রয়েছে বলে আশ্বস্ত করেন গুতেরেস।

বঙ্গবন্ধু একজন অসাধারণ রাজনৈতিক নেতা:

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুকে একজন অসাধারণ রাজনৈতিক নেতা অভিহিত করেন। দুই দেশের বন্ধুত্বের ঐতিহাসিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় গঠনমূলক এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদী।

সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি:

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করে জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহ বলেন, ‘গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। যার মাধ্যমে দেশের জনগণের সহনশীলতা ও নেতৃত্বের প্রজ্ঞা প্রতিফলিত হয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসী, শান্তি বজায় রাখা, আরও উন্নয়ন এবং জনগণের সক্ষমতা কাজে লাগানোর মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও বেশি অগ্রগতি অর্জন করবে বাংলাদেশ।’

বাংলাদেশের অসাধারণ অজর্ন:

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বাংলাদেশের অর্থনীতির দ্রুত অগ্রসর হওয়ার দিকটি তুলে ধরে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দেন। ভিডিও বার্তায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ১৯৭২ সালে স্বাধীন দেশে ফেরার সময় বঙ্গবন্ধুর যুক্তরাজ্য সফরের কথা তুলে ধরে  বলেন, জন্মের পর থেকে দেশটির মানুষ যতটা অর্জন করেছে, তা অসাধারণ।

যুক্তরাজ্যে নানা ক্ষেত্রে ছয় লাখ ব্রিটিশ বাংলাদেশির গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা বলেন তিনি। যুক্তরাজ্যে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশি চিকিৎসক ও নার্সদের ভূমিকার কথাও তিনি বলেন।

৫০ বছরে অভূতপূর্ব উন্নতি:

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘গত ৫০ বছরে দেশটি অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করেছে। এই সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, দারিদ্র্য কমেছে, শিক্ষার হার বেড়েছে এবং স্বাস্থ্য সেবার প্রসার ঘটেছে। এর ফলে দেশের জনগণের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ