শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


১৫ বছর যাবৎ মাদকসেবক, গৃহহীন ও দরিদ্রদের সাহায্য করছেন তুর্কি এ ইমাম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কাজী আব্দুল্লাহ ।।

তুরস্কের এক মসজিদের ইমাম ইস্তাম্বুলে ১৫ বছর যাবৎ মাদকসেবক, গৃহহীন ও দরিদ্রদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

২০০৬ সালে তুরস্কের বৃহত্তম মহানগর ইস্তাম্বুলের বালাত পাড়ায় কাব মসজিদের ইমাম নিযুক্ত হন ইমিন কির। তারপর থেকেই তিনি মাদকাসক্তদের খারাপ অভ্যাস এবং মাদকাসক্তি নষ্ট করতে সাহায্য করার চেষ্টা করে চলেছেন।

দায়িত্ব গ্রহণ করার সাথে সাথেই মসজিদের আশেপাশে কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার পরে, কির তাদের খারাপ অভ্যাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সহানুভূতি বিকাশের সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি মাদক সেবনকারীদের মসজিদে মাদক নিয়ে না আসতে নিষেধ করেন এবং গৃহহীনদের জন্য দিনে তিনবার স্যুপ, আশ্রয়, পানি এবং জামাকাপড় সরবরাহ করেন।

কির আনাদোলু এজেন্সিকে জানান যে, তিনি মসজিদের দায়িত্ব গ্রহণের পরে দেখতে পান শহরের মানুষ মাদক সেবন এবং মসজিদের আশেপাশে মদ খাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল।

পরে তিনি মাদক ব্যবহারকারীদের একজনকে তার সাথে নিয়ে নিয়েছিলেন এবং তাকে এই কাজে রাজি করিয়েছিলেন যে লোকদের মাদক ব্যবহার বন্ধ করতে তিনি তাকে সাহায্য করবেন।

তিনি আমার প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং আমরা ২০১৮ পর্যন্ত একসাথে ছিলাম। তারপরে আমি তাকে তার শহরে পাঠিয়ে দেই এবং সেখানে তিনি একটি চাকরি পেয়েছিলেন।

তিনি কুসংস্কারহীন লোকদের কথা শুনেন এবং হাসি দিয়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান, কির বলেন, যারা মসজিদে আগমন করেন তারা আরও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং বিনা দ্বিধায় তাদের অতীত অভিজ্ঞতাগুলো ভাগ করে নেন।

এখানে মাদকাসক্ত শিশুরা ছিল। তারা সন্ধ্যা অবধি মাদক সেবন করত। সেখানে সব ধরণের লোক অ্যালকোহল পান করত। আমরা এই সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়েছিলাম। আমি জানতাম যে তাদের সাথে আমার একটি সংযোগ তৈরি করতে হবে এবং আমি তা করেছি, এর মাধ্যমেই তারা আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছিলো।

আইয়ুপসুলতান জেলা প্রশাসক এবং সেখানকার ফতোয়া কার্যালয় তার এই কাজকে ২০১৯ সালে সমর্থন জানায়, অনেক জনহিতৈষীও খাবার এবং অন্যান্য জিনিস দান করে তার সাথে ছিলেন।

ত্রিশ বছর বয়সী মুরাত আকর, যিনি এর আগে মাদকাসক্ত ছিলেন, তিনি বলেন যে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে তিনি পরিবার ছেড়ে রাস্তায় জীবনযাপন শুরু করেছিলেন।

আকার বলেন, কিরের সাথে দেখা হওয়ার তিন বছর কেটে গেছে এবং আমি তার পরে আর মাদক সেবন করিনি, তাই আমার পরিবারের সাথে আমার সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। নিজের জীবনকে সঠিক পথে ধরে রাখার পরে তিনি তার পুরোনো বন্ধুদের সহায়তা করা শুরু করেছিলেন।

অপর এক গৃহহীন ব্যক্তি গোখন ভারদার বলেন যে তিনি রাস্তায় ঘুমাচ্ছিলেন এমন সময় তাঁর জুতাগুলো চুরি হয়ে যায় এবং তিনি তা হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন। মসজিদের ইমাম তাকে দেখে মসজিদে আসতে বলেন।তিনি বলেন মসজিদে প্রবেশের পরে তাঁর জীবন সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিলো। এভাবেই ১৫ বছর যাবৎ ইমাম ইমিন কির অসহায়,গৃহহীন, মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করে যাচ্ছেন নিস্বার্থভাবে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ