শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


যে কারণে নারীরা কাজী বা নেকাহ রেজিস্টার হতে পারেন না!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিয়ের জন্য নারী কাজী। বা মহিলা নেকাহ রেজিস্টার। শুনেছেন কখনো? কিংবা দেখেছেন কেউ? যার প্রচলন নেই সেটা দেখবেন কী করে? বাংলাদেশে কেনো! বিশ্বের কোনো দেশেই নারীরা নেকাহ রেজিস্টার বা কাজী হতে পারেন না। নারী হলেই যে সব কাজ করতে হবে বিষয়টা মোটেও এমন নয়। বরং কিছু জায়গায় নারীদের বিরত থাকা জরুরি।

তবে শরীয়ত কী বলে নারী কাজীদের বিষয়ে। কিংবা শরীয়তে এর কী বিধান রয়েছে? জানতে চেয়েছিলাম দেশের বিজ্ঞ দুজন মুফতির কাছে। মুফতি মহোদয়দের সাথে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের নিউজরুম এডিটর মোস্তফা ওয়াদুদ

মূলত দেশের দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পূর্ব কাটাবাড়ীতে হোমিও চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন আয়েশা সিদ্দিকা। এলাকায় চিকিৎসক হিসেবে সুনামও আছে তার। এখনো তিনি সপ্তাহে চারদিন রোগী দেখেন। কিন্তু এই হোমিও চিকিৎসকই হতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী কাজি বা নিকাহ্ রেজিস্টার। বিবিসি বাংলা তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন করলে এ বিষয়ে জানতে পাঠকদের আগ্রহ বাড়ে। তাই আজ থাকছে ‘নারীর কাজী বা নেকাহ রেজিস্টার’ হওয়া বিস্তারিত আলোচনা।


এ বিষয়ে মারকাযুদ্দাওয়া আল ইসলামিয়া মাদরাসার মুফতি তাহমিদুল মাওলা বলেন, শরীয়তে বিয়ের জন্য কাজীর কোনো প্রয়োজন নেই। আর বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য কাজী থাকা শর্তও নয়। তবে রাষ্ট্রীয় বিধান মোতাবেক বিয়ের জন্য কাজী বা নিকাহ রেজিস্টারের প্রয়োজন। এটি একটি রাষ্ট্রীয় আইন। এটাকে শরীয়তের সাথে মিশানো নিষ্প্রয়োজন।

এরপর কথা হলো নিকাহ রেজিস্টার বা কাজী পুরুষ হবেন নাকি নারী হবেন? এর জবাব হলো, যে কাজ পুরুষের দ্বারা সম্পন্ন করা যায় তাতে নারীদের সংযুক্ত করার প্রয়োজন নেই। তাছাড়া বিয়ের ক্ষেত্রে নারীকে কাজী নির্বাচনে তিন ধরনের সমস্যার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রথমত বিয়ে-শাদিতে পুরুষের সাথে নারীদের সংমিশ্রণ তৈরি হবে। শরীয়ত যা কোনোভাবেই সমর্থন করে না। দ্বিতীয়ত বিয়ের কর্মক্ষেত্রটি নারীদের জন্য স্বাভাবিক নয়। তৃতীয়ত হলো, বিয়ে সংগঠনের জন্য যে আয়োজন করা হয়। সেখানে নারীদের উপস্থিতি ততটা নিরাপদ নয়। একজন পুরষ কাজীর জন্য যতটা নিরাপদ।

কথা বলেছিলাম রাজধানীর পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতীব আলহাজ্ব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজীর সাথে। তিনি বলেন, নারীর নেকাহ রেজিস্টার হলে নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। একজন হুজুর বা পুরুষ কাজীর কারণে বিয়ের অনুষ্ঠানে যে ধর্মীয় ভাবাবেগ তৈরি হয় সেটা কোনো নারী রেজিস্টারের দ্বারা সম্ভব হবে না।

তাছাড়া কাজীর জন্য আমাদের দেশে যথেষ্ট পুরুষ লোক রয়েছেন। নারী কাজীর তেমন প্রয়োজন আপাতত নেই। এরপর নারীরা কাজী হলে তাদের নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটতে পারে। কারণ শরীয়তে নারীকে মাহরাম পুরুষের সাথে চলার আদেশ দেয়। আর বিয়ের অনুষ্ঠানে সব সময় মাহরাম পুরুষ নিয়ে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে।

সর্বশেষ যে কারণটি এখানে ধর্তব্য সেটি হলো, একজন নারী মাসের ত্রিশ দিনই পবিত্র থাকেন না। তার অপবিত্রতার দিনগুলোতে যদি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে হয় তাহলে সে কিভাবে সেগুলোতে অংশ নিবে? ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পবিত্রতার বিষয়টি বিবেচনা করে হাইকোর্টও নারীকে কাজী হতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যেটা সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি।
আদালত নারীর কাজী না হতে পারার বিষয়ে বলছে, ‘মুসলিম বিবাহ অনুষ্ঠান একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। নিকাহ রেজিস্ট্রির আগে তিনি বর-কনের প্রস্তাব আদান-প্রদান ও গ্রহণের বিষয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন কর থাকেন। দিন-রাত যেকোনো সময় বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে হয়। তাই নারীদের দিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি করানো বাস্তবসম্মত না।’

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ