শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


পেনশনের টাকায় ইসলামি গণ-পাঠাগার বানিয়েছেন ৬৭ বছর বয়সী কায়াম উদ্দিন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রফিকুল ইসলাম জসিম।।

পেনশনের টাকায় অনেকে করেন বাড়ি-গাড়ি। কেউ আবার টাকা জমিয়ে রাখেন বিপদ-আপদের কথা চিন্তা করে। কেউ হয়তো দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ান। কেউ আবার ব্যতিক্রমী কিছু করেন। এ ব্যতিক্রমী দলে প্রাক্তন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলহাজ্ব ডা. কায়াম উদ্দিন।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আদমপুর বাজারের ডা. কায়াম উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে তার নিজ বাসভবনে মাওলানা আব্দুস সুবাহান ইসলামি গণ পাঠাগার ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন৷ এই গণ-পাঠাগারটি এখন সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।

৬৭ বছর বয়সী বইয়ের মানুষটি সবার কাছে পরিচিত ‘ডাক্তার সাহেব’ হিসেবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্রখ্যাত আদমপুর বাজারের সর্বত্র যেখানে বৈষয়িক বিষয় নিয়ে সবাই ব্যস্ত; সেখানে ডাক্তার সাহেব জ্বালিয়ে রেখেছেন জ্ঞানের প্রদীপস্বরূপ তার বাবার নামে গড়া গন পাঠাগারটি।

ডাক্তার সাহেবের বাড়ির গেইট সংলগ্ন গ্যারেজের উপরের তলায় দেখা মিলে পাঠাগারের বড় করে নাম লেখা ব্যানার তাতে লেখা আছে- মাওলানা আব্দুস সুবাহান ইসলামি গণ-পাঠাগার। সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে দেখা গেল, বিভিন্ন ইসলামিক ও চিকিৎসা বিজ্ঞান সহ অন্যান্য নানারকম বই, এছাড়াও পাঠাগারের অনন্য একটা বৈশিষ্ট হলো-পুরাতন ইসলামি বইয়ের সংগ্রহ ।

এই ডাক্তার সাহেব সবসময় অন্যদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন দিনের পর দিন। তিনি সমাজিক সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত এবং সামাজসেবা মূলক বিভিন্ন কাজে সবসময় নিয়োজিত রয়েছেন। তা ছাড়া কারো কোনো বিশেষ তথ্যের প্রয়োজন হলে সেটা কোথায় কিভাবে পাওয়া যাবে তাতেও সহযোগিতা করেন। তার এই পাঠাগার সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।

মণিপুরি মুসলিম সমাজের প্রথম এমবিবিএস ডাক্তার আলহাজ্ব ডা. কায়াম উদ্দিন ২০১১ সালে চাকুরি থেকে অবসরের পর প্রতিদিন চেম্বার করেন আদমপুর বাজারে। এছাড়া অনেক সময় রোগীরা চলে আসেন ডা. সাহেবের বাড়ীতে।

ডা. কায়াম উদ্দিন বলেন, লাইব্রেরী উদ্বোধনের পর নিয়মিত পাঠকদের জন্য হালকা চা নাস্তার ব্যবস্থা রাখবেন। তবে নিজেরা বানিয়ে খেতে হবে। পাঠাগারে বই পড়বে, চা খাবেন। কিছুটা সময় হলেও পাঠাগার থেকে মানুষ উপকৃত হবে। এভাবেই জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়বে সর্বত্র ।

গণ-পাঠাগারে প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার সাহেব আরোও বলেন, কারো কাছে পরাতন ধর্মীয় বই সংগ্রহ করে থাকেলে গণ পাঠাগারের দান করতে পারেন৷ আমি ‘ভাবতাম, সমাজের জন্য কিছু করব। প্রত্যন্ত এলাকায় পাঠাগার না থাকায় বইপড়ার সুযোগ নেই। বই কিনে পড়ার সামর্থ্যও নেই। মানুষ অবসরে বিনামূল্যে বই পড়ানোর পরিকল্পনা করি।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, ‘শরীর সুস্থ রাখতেও বই পড়ার অভ্যাস দারুণভাবে মানুষকে সাহায্য করে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, বই পড়ার সাথে শরীর এবং মনোজগতের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ফলে বই পড়লে অবশ্যই শারীরিক ও মানসিক সুফল পাওয়া যায়।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ