বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


আলেকজান্ডারের দেশে ধীরে ধীরে মুসলমানের সংখ্যা বাড়ছে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: মেসিডোনিয়া ইউরোপের অনন্য এক ঋতুর দেশ। প্রাতিষ্ঠানিক নাম ‘রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া’। ঋতু ও রূপবৈচিত্র্যের কারণে ইউরোপীয় পর্যটকদের কাছে মেসিডোনিয়া বেশ প্রিয়। বিশেষত প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলো দেশটিতে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

মেসিডোনিয়ায় আছে বিভিন্ন ধর্মের অসংখ্য প্রাচীন নিদর্শন। ইতিহাসখ্যাত ‘আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট কিং’-এর জন্ম এই মেসিডোনিয়াতেই। ২৫ হাজার ৭১৩ বর্গকিলোমিটারের দেশ মেসিডোনিয়ার জনসংখ্যা ২০ লাখ ৭৭ হাজার ১৩২ জন। রাজধানীর নাম স্কোপজে। ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯১ সালে যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করে দেশটি।

দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ অর্থডক্স চার্চের অনুসারী। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটেনিকা মতে, মেসিডোনিয়ার জনসংখ্যার ৩২ শতাংশ মুসলিম। তবে পিউ ফোরাম ডটঅর্গের তথ্য মতে, মুসলিমদের সংখ্যা ৩৯.৩ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে ৫৬.২ শতাংশে উন্নীত হবে। দেশটিতে এক হাজার দুই শ চার্চ, ৫৮০টি মসজিদ এবং একাধিক ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

স্পেনে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মুসলিম ধর্ম প্রচারক ও জ্ঞানান্বেষীরা ছড়িয়ে পড়েন। তাদের মাধ্যমে মেসিডোনিয়া সর্বপ্রথম ইসলামের পরিচয় লাভ করে। মুসলিম ধর্ম প্রচারকরা সেখানে মসজিদ ও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ১৩৮২ খ্রিস্টাব্দে উসমানীয় শাসকরা মেসিডোনিয়া বিজয় করেন এবং তাঁদের সহযোগিতায় সেখানে দ্রুত ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় পাঁচ শ বছর তা তুর্কি শাসনাধীন ছিল।

তা ইয়ালেত ও রুমেলিয়া প্রদেশের অংশ হিসেবে শাসিত হতো। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত প্রথম বলকান যুদ্ধ পর্যন্ত তুর্কিরাই কার্যত মেসিডোনিয়া শাসন করে। উসমানীয় শাসকরা মেসিডোনিয়ায় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

উসমানীয় শাসনামলে গড়ে তোলা পাঁচ শতাধিক মসজিদ এখনো মেসিডোনিয়ায় টিকে আছে। দেশটির উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিমের কিছু অঞ্চলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতাও রয়েছে। সেন্টার জুপা, দেবার, স্ট্রুগা ও প্লাসনিকা এর অন্যতম।

মুসলিম শাসনের অবসানের পর মেসিডোনিয়ার মুসলিম জনসংখ্যা ক্রমেই কমতে থাকে। ১৯২১ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত মুসলিম জনসংখ্যা ৩১ শতাংশ থেকে ২৪ শতাংশে নেমে আসে। ১৯৭১ সাল থেকে মুসলিম জনসংখ্যা আবারও বাড়তে থাকে। মেসিডোনিয়ার মুসলিম জনগণের বেশির ভাগ আলবেনীয় ও তুর্কি বংশোদ্ভূত।

বাকিরা বসনিক ও স্থানীয়। মেসিডোনিয়া ইউরোপিয়ান দেশ হলেও এখানকার মুসলিম জীবনে তুর্কি সংস্কৃতির প্রভাবই বেশি। খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে ধর্মীয় উদযাপন পর্যন্ত সব কিছুতেই তারা তুর্কি সংস্কৃতির অনুসারী। দীর্ঘদিন তুর্কি শাসনাধীন থাকাই এর প্রধান কারণ।

মেসিডোনিয়ান মুসলিমদের এক-তৃতীয়াংশই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলেন এবং তাদের প্রায় অর্ধেক গুরুত্বের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেন। দেশটির মুসলিম জনগণের সর্বোচ্চ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দারুল ইফতা মেসিডোনিয়া। সরকার ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান-সংস্থায় তারাই মুসলমানের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। সূত্র: আলজাজিরা

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ