শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ‘ঘর’ পাচ্ছে লামার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ২৪ পরিবার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

এম. মিজানুর রহমান
লামা বান্দরবান>

বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ২৪টি দরিদ্র পরিবারকে বিশেষ ডিজাইনের সেমি পাকা ঘর দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের আশ্রায়ন প্রকল্পের আওতায় এই ঘর দেয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ‘যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ’ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। প্রতি ঘরে ৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা হারে এতে মোট ব্যয় হচ্ছে ১ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৭১২ টাকা। বাস্তবায়ন করছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এরই ধারাবাহিকতায় লামা উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ২৪টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রতিটি ঘরে থাকছে ৩টি কক্ষ ও বারান্দাসহ রান্না ঘর।

আরও জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক সুপারিশকৃত উপকারভোগীদের তালিকা অনুযায়ী গৃহ নির্মাণের স্থান নির্বাচন ও জমি পরিদর্শনের কাজ শেষে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১০টি কাজ শেষ, ১১ টি চলমান রয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা পরিবহন ব্যবস্থার বিঘ্নতার কারনে কি ৩টি ঘরের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি।

যারা ঘর পেয়েছেন- আজিজনগর ইউনিয়নের তেলুনিয়া পাড়ার মংশে মার্মা, চিউনী কাঠতলি পাড়ার গুনা চরণ ত্রিপুরা, সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি পাড়ার চন্দ্রমান ত্রিপুরা, ক্যয়াজুপাড়ার চন্দ্রজন ত্রিপুরা, রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দরদরী নয়াপাড়ার আছিংমে মার্মা, বৈদ্য ভিটা পাড়ার আলুংমে মার্মা, চামং উ মার্মা, ফাইতং ইউনিয়নের রোয়াজাপাড়ার উশৈইমং মার্মা, মংচিন্তা মেম্বার পাড়ার মাছিং মার্মা, হেডম্যান পাড়ার মং নুচিং মার্মা, পৌরসভা এলাকার শীলেরতুয়া পাড়ার মং চাচিং মার্মা ও বড় নুনারবিল পাড়ার থোয়াই চাহ্লা মার্মা।

এছাড়াও গজালিয়া ইউনিয়নের আকিরাম পাড়ার বিশাইরুং ত্রিপুরা, হেডম্যান পাড়ার উস্রাচিং মার্মা, গাইন্ধা পাড়ার এসাইনু মার্মা, চিন্তাবর পাড়ার তংইয়া মুরুং, লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা পাড়ার হ্লাঅং প্রু মার্মা, মাএনু মার্মা, উস্রাচিং মার্মা, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বড় পাড়ার উমে মার্মানী, ক্যচিং পাড়ার ইয়াসানু মার্মা, রাজা পাড়ার চ্যংপাত স্রো, কাঠালছড়া ত্রিপুরা পাড়ার চন্ডি চরণ ত্রিপুরাও ঘর পেয়েছেন।

উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের আছিংমে মার্মা, সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি পাড়ার চন্দ্রমান ত্রিপুরা জানান, অভাবের সংসার। ভালো ঘর নেই। প্রধানমন্ত্রীর কারণে নতুন করে সেমি পাকা ঘর পাচ্ছি। বাচ্চাদের নিয়ে একটু ভালো করে থাকতে পারব।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লামা উপজেলা প্রকৌশলী মুহা. নাজিম উদ্দিন বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ডিজাইনের ২৪টি ঘর। এক্ষেত্রে ১০টি কাজ শেষ, ১১ টির কাজ চলমান রয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা পরিবহন ব্যবস্থার বিঘ্নতার কারনে ৩টি ঘরের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন উপজেলা কমিটির সভাপতি মুহা. রেজা রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে দেয়া উক্ত প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এতে করে দরিদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ সুবিধা পাবেন।

লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহা. মোস্তফা জামাল বলেন, যারা ঘর পাচ্ছেন তারা একেবারেই হতদরিদ্র। তারা এক সময় বেড়ার ঘরে জরাজীর্ণ জীবনযাপন করতেন। আশা করি আগামী দু’এক মাসের মধ্যেই উপকার ভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে সবাই উঠতে পারবেন। ঘর পাওয়ার পর অনেকটাই ভালোভাবে থাকতে পারবেন তারা।

রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা ও লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, গৃহহীন পরিবারগুলো ঘর পেয়ে অনেক খুশি। আরো যারা হতদরিদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে, তাদের কথা বিবেচনা করে আরো বরাদ্দ প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবেন বলে জানিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ