শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


‘মুতা’ বিয়ে কি ইসলামে বৈধ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ‘মুতা’ বিয়ে। একটি স্বল্প সময়ের বিয়ের নাম। অর্থাৎ কোন নারী ও পুরুষ অল্প কিছু সময়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ বিয়ে করতে পারে। তবে এই সময় সম্পর্কে কোন সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ সময় ধরা বাধা নেই।

ইসলাম কি বলে এ মুতা বিয়ের ক্ষেত্রে? মুতা বিয়ে কি ইসলামে বৈধ? চলুন শরীয়তের আলোকে বিস্তারিত জানা যাক।

ইসলামে এক সময় মুতা বিয়ে জায়েজ ছিলো। কিন্তু পরে সেটা পুরাপুরিভাবে রহিত করা হয়। মুতা বিয়ে রহিত করার হাদিসগুলো হলো,

* ইবনু আবূ আমর‌ রা. বলেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগে নিরুপায় অবস্থায় তার (মুতা বিয়ের) অনুমতি ছিল। (যেমন নিরুপায় অবস্থায়) মৃত জীব, রক্ত ও শূকরের (গোশ্‌ত ভক্ষণের) ন্যায়। অতঃপর আল্লাহ‌ তার দীনকে শক্তিশালী ও সুদৃঢ় করলেন এবং তা নিষিদ্ধ করলেন। ইবনু শিহাব রহ. বলেন, রাবী’ ইবনু সাব‌রাহ‌ আল জুহানী আমাকে জানিয়েছেন যে, তাঁর পিতা বলেছেন, নবি করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে আমি দুটি লাল চাদরের বিনিময়ে আমির গোত্রের একটি স্ত্রীলোকের সাথে মুতা‌ করেছিলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মুতা ‌ করতে নিষেধ করেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩২০)

* আলী ইবনু আবূ তালিব রা. থেকে বর্ণিত, খাইবারের যুদ্ধের দিন নারীদের সাথে মুতা বিয়ে করতে ও গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস নং ১১২১)

* আবু যুবায়ের রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রা. কে বলতে শুনেছি, ‘আমরা এক মুঠো খেজুর অথবা ময়দার বিনিময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে এবং আবূ বকর রা. এর যুগে মতা বিয়ে করতাম। শেষ পর্যন্ত ওমর রা. আমর ইবনু হুরায়স এর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তা নিষিদ্ধ করেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩০৭)

* রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আওত্বাস যুদ্ধের বছর তিন দিনের জন্য মুতা বিয়ের অনুমতি দিয়েছিলেন। অতঃপর তিনি তা নিষিদ্ধ করেন । (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩০৯)

* সাবরাহ আল জুহানী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। তিনি বললেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের স্ত্রীলোকদের সাথে মুতা বিয়ের অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু অচিরেই আল্লাহ তায়ালা তা হারাম করেছেন কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত। অতএব যার নিকট এ ধরনের বিয়ের সূত্রে কোন স্ত্রীলোক আছে, সে যেন তার পথ ছেড়ে দেয়। আর তোমরা তাদের যা কিছু দিয়েছ তা কেড়ে নিও না । (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩১৩)

* নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুতা‌ (বিবাহ) করতে নিষেধ করেছেন । (সহিহ মুসলিম,হাদিস নং ৩৩১৭)

* রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুতা বিয়ে নিষিদ্ধ করেছেন ও বলেছেন, সাবধান! আজকের এ দিন থেকে কিয়ামাত পর্যন্ত মুতা বিয়ে হারাম। যে কেউ (ইতোপূর্বে) মুতা বাবদ যা কিছু দিয়েছে, সে যেন তা ফেরত না দেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩২১)

* আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি শুনতে পেলেন যে, ইবনু আব্বাস রা. নারীদের সাথে মুতার ব্যাপারে কিছুটা শিথিলতা প্রদর্শন করেছেন। আলী রা. বললেন, থামো, হে ইবনু আব্বাস! কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের যুদ্ধের দিন মুতা  ও গৃহপালিত গাধার গোশ্ত নিষিদ্ধ করেছেন । (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩২৫)

উপরোক্ত বিশুদ্ধ তথ্য থেকে আমরা জানতে পারলাম,
১/ মুতা বিয়ে প্রথমে বৈধ থাকলেও পড়ে সেটা কিয়ামত পর্যন্ত নিষেধ করা হয়।
২/ ইসলামে বিয়ের নীতি আছে। সে নীতির আলোকে বিয়ে করবে।
৩/ মুতা বিয়ে হারাম।
৪/ মুতা বিয়ে হালাল না।

এমডব্লিউ/

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ