শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


বৈরুতের ধ্বংসস্তূপে ভয়াবহ আগুন, আতঙ্কিত বাসিন্দারা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ৪ আগস্ট লেবাননের বৈরুতের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়। দুইদিন আগেও সেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) আবারও ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বিধ্বস্ত বন্দরে। লণ্ডভণ্ড বৈরুতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। লেবাননের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বন্দরের শুল্কমুক্ত এলাকার একটি গুদামে আগুন লাগে। গুদামে তেল এবং টায়ার মজুদ করা ছিল।

এক প্রত্যক্ষদর্শী আল জাজিরাকে জানান, অগ্নিকাণ্ডের পরপরই মানুষজন উল্টোপথে দৌঁড়াতে থাকে। চারপাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। ঘটনাস্থলে থাকা গাড়ি দ্রুত সরিয়ে নিচ্ছিল লোকজন। ওই জায়গায় আগস্টের বিস্ফোরণে আহত হয় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয় কমপেক্ষে ৩ লাখ। কয়েকজন শ্রমিক স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, আগস্টের বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছিলেন তারা। এমন সময় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

৪ আগস্টের বিস্ফোরণে বিষয়ে কিছু না জেনেই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল ফায়ার সার্ভিস। বৃহস্পতিবারের আগুন নিয়ন্ত্রণ সমন্বয়কারী লেফটেন্যান্ট মিশেল মুর বলেন, আমার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ভেতরের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।

গেলো মাসে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ১০ জন সদস্য মারা যায়। বন্দরের যে গুদামে আগুন লেগেছে তার ভেতরে রাসায়নিক বা দাহ্য পদার্থ না থাকার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দিয়েছেন মুর। বলেন, থাকার সম্ভাবনা খুব কম।

খুব সাবধানতার সঙ্গে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। বলেন মুর। জানান, ফায়ার সার্ভিসের কেউ এখনো আহত হয়নি। স্থানীয় সময় আড়াইটায় আগুন লাগলেও এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার উদ্ধার সহায়তায় অংশ নিয়েছে।

মঙ্গলবার বৈরুত বন্দরে ছোট আকারের অগ্নিকাণ্ড ঘটে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা নিভে যায়। দু’দিনের ব্যবধানে আবারো অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। কয়েকদিন আগে সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, বৈরুত বন্দর থেকে আরো ৪ দশমিক ৩৫ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সেগুলো ধ্বংস করা হয় বলেও জানানো হয়।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৈরুতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ জরিপ করছেন তারা। কাজের অগ্রগতি বা সম্পূর্ণ হতে কতোদিন লাগবে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

বলা হয়, তাদের কার্যক্রম ব্যাপক আকারে চলছে। পুরো এলাকাকে জরিপের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে রাগ, ক্ষোভ, ভয় এবং হাতাশা ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা।

লেবাননের লেখক লিনা মৌনজের তার টুইটারে লেখেন, বৈরুত বন্দরে আবারো ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। আরেকটি বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে আমরা কি দরজা জানালা খুলে রাখবো? নাকি বিষাক্ত ধোয়া থেকে রক্ষা পেতে দরজা জানালা বন্ধ রাখবো? কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে গেছে। আমরা ফুসফুস ব্যথা করছে। আরেকজন লিখেছেন, বিস্ফোরণের তদন্ত বানচাল করার উদ্দেশে বন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

বৈরুতের বন্দর সরকারের অপরাধের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড কোনো দুর্ঘটনা হতে পারে না। স্থানীয় আইনজীবী এবং মানবাধিকারকর্মী কারিম নামৌর এ মন্তব্য করেন। বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনা অনুসন্ধানে আরেকটি তদন্ত দল গঠন করা উচিৎ। দায়ীদের খুঁজে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ