বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

‘করোনা ভাইরাসের মহামারির সাথে দেশে দুর্নীতির মহামারি চলছে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেছেন, করোনা ভাইরাসের মহামারির সাথে দেশে দুর্নীতির মহামারি চলছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাজারো মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। আর দুর্নীতির মহামারিতে দেশের স্বাস্থ্য খাত, অর্থ খাত, জননিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরার উপক্রম হয়েছে।

আজ শুক্রবার খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার এক ভার্চূয়াল অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, করোনার টেস্টের মিথ্যা রিপোর্ট ও জালিয়াতি থেকে বোঝা যায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কোন অবস্থায় আছে। দেশের খেটে খাওয়া মানুষ আজ কর্মহীন, লাখ লাখ শিক্ষিত যুবক আজ বেকার। দেশের নাগরিকরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা এ বিচারবহির্ভূ হত্যাকান্ডের সর্বশেষ শিকার। এ অবস্থায় একটা দেশ চলতে পারে না। দেশেবাসীকে চলমান দুর্নিিত, অন্যায়, অবিচার, জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

আজ সকাল ৯টায় থেকে সংগঠনের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ ভার্চুয়াল অধিবেশনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও সারা দেশের মজলিসে শূরার সদস্যগণ সংযুক্ত ছিলেন।

অধিবেশনে একটি শোক প্রস্তাবসহ বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও জনজীবনে স্থবিরতা প্রসঙ্গ, বন্যা পরিস্থিতি ও বন্যা দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ প্রসঙ্গ, অর্থনৈতিক দূরাবস্থা ও বেকার সমস্যা প্রসঙ্গ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ প্রসঙ্গ, ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের স্থানে জোরপূর্বক রাম মন্দির নির্মাণ প্র্রসঙ্গে ৬টি প্রস্তাব গ্রহীত হয়।

অধিবেশনে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও জনজীবনে স্থবিরতা প্রসঙ্গে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা দুনিয়ার মানব সমাজ আজ বিপর্যস্ত। বিশ্বের প্রায় সকল রাষ্ট্রই এ ভাইরাসের আক্রমণের শিকার হয়েছে। ভেঙ্গে পরেছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। অধ্যাবধি ২ কোটির অধিক মানুষ করোনা ভাইরাস সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছে সাড়ে ৭ লক্ষাধিক মানুষ। করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছে। এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থতার পর্যবসিত হয়েছে।

এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে মুক্তির জন্য আমাদেরকে মহান আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে। গুনাহ থেকে তাওবাহ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী চলমান জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। একই সাথে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। এ অধিবেশন বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে সাড়ে ৭ লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং নিহতদের আত্বীয়-স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। আক্রান্তদের আশু আরোগ্য কামনা করছে। একই সাথে করোনাভাইরাসের সম্ভব্য টিকা নিয়ে যাতে কোন ধরণের হীন রাজনীতি বা মনোপলি আচরণ করা না হয় তার জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়।

বন্যা পরিস্থিতি ও বন্যা দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ প্রসঙ্গে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, করোনাভাইরাসের মহাদুর্যোগের মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বন্যাদুর্গত ও পানিবন্দী লাখো মানুষ চরম দুভোগের মধ্যে রয়েছে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুরসহ দেশের ৩০-৩৫টি জেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।

বিশেষ করে নিম্ন ও চরাঞ্চলের মানুষ অসহায় অবস্থায় রয়েছে। যেসব এলাকায় পানি মেনে যাচেছ সেখানে বিভিন্ন রোগ-বালাই ছড়িয়ে পরছে। রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে একাকার। এ সব বন্যা প্লাবিত এলাকার মানুষের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরণের তৎপরতা নেই। সরকার করোনায় বিপর্যস্ত কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে যেমন ব্যর্থ হয়েছে তেমনি চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্যও সরকারের বিশেষ কোন তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

এ অধিবেশন দেশের বন্যা কবলিত জেলাসমূহে বন্যা দুর্গত মানুষের সাহায্যার্থে সরকারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে যথাযথভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু করার দাবী জানাচ্ছে। বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কর্মসূচীর প্রতি জোর দেয়ার দাবী জানাচ্ছে। একই সাথে সমাজের সামর্থবান মানুষদেরকেও অসহায় বন্যা দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।

অর্থনৈতিক দূরাবস্থা ও বেকার সমস্যা প্রসঙ্গে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের মহাদুর্যোগের ও বন্যার কারণে মধ্যে দেশের কয়েক কোটি মানুষ হঠাৎ বেকার হয়েছে। চাকুরী ও কর্মহীন হয়ে পড়েছে প্রবাসীসহ দেশের অধিকাংশ মানুষ। এ সব কর্মহীন ও চাকুরীহীন মানুষের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুররু দিকে সরকারের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ বিতরনের কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছিলো তার অধিকাংশই দুর্নীতিবাজদের পেটে চলে গেছে।

প্রভাবশালীদের গুদাম থেকে শত শত বস্তা ত্রাণের চাল, ডাল উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান, মেম্বার দেশের ঘরে, ঘাটের নিচে তেলের খনি আবিস্কৃত হয়। এর পর ঈদুল ফিতরের পূর্বে সরকারের দেয়া দেড় হাজার টাকার সহযোগিতার টাকা চলেগছে বিভিন্ন প্রভাশালীদের বিকাশ নম্বরে। প্রকৃত গরীবরা তেমন কোন সহযোগিতা পায়নি। এরপর সরকারী প্রনোদনার নামে হাজার হাজার কোটি টাকার যে ঋণ বিতরণের কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছিলো সেগুলিও সরকার দলীয় প্রভাবশালীদের কাছে চলে গেছে।

বিশেষ করে কৃষি ঋণের জন্য বিতরণকৃত টাকা সরকার দলীয় স্থানীয় প্রভাবশালীরা লুফে নিয়েছে। প্রকৃত কৃষকরা ওই কৃষি ঋণ পায়নি বলেই চলে। সরকাররের তদারকী আর ব্যর্থতার করণে এ বচল কোরবানীল চামড়ার ন্যূনতম মূল্যটুকু পায়নি গরীভ- ইয়াতিমরা। এদিকে স্বাস্থ্য খাতে সাহেদ কান্ডের মত বহু ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র সবাইকে হতবাক করেছে।

খেলাফত মজলিসের আজকের এ অধিবেশন দেশে চলমান সর্বগ্রাসী দুর্নীতি বন্ধ, বেকার সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনে সরকারের প্রতি দাবী জানাচ্ছে। এবং দেশের কর্মহীন বেকার মানুষদের জন্য বেকার ভাতা চালুর জোর দাবী জানাচ্ছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ প্রসঙ্গে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমান সরকারের আমলে বিগত ১০ বছরে প্রায় ৩ হাজার মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। আর গুম অপহরণ আর হামলা, মামলারতো সীমা নেই। সরকারের পুলিশ বাহিনীর সর্বশেষ বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ডের নির্মম শিকার হচ্ছেন অবসর প্রাপ্ত সেনা অফিসার মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান। টেকনাফে ওসি প্রদিপ কুমারের ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যার সর্বশেষ শিকার হন মেজর সিনহা। আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীণতাকে হরণ করা হয়েছে।

সাংবাদিক ও সংবাদ কর্মীরা যাতে অন্যায় ও অপকর্ম তুলে ধরতে না পারে সে জন্য এ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে গ্রেফতার নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এ অধিবেশন সরকারের বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধের জোর দাবী জানাচ্ছে। একই সাথে বিগত সময়ে সংঘটিত সকল বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের সুষ্ঠূ ও ন্যায় বিচার দাবী করছে ও বাক-স্বাধীনতা বিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলে জোর দাবী জানাচ্ছে।

ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের স্থানে জোরপূর্বক রাম মন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গে গ্রহীত প্রস্তাবে বলা হয়, বিগত ৫ আগস্ট ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকার অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের জায়গা রাম মন্দির নির্মাণ কাজ শুরুর করেছে। ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের জায়গা রাম মন্দির নির্মাণ ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজিপি সরকারের এক ঐতিহাসিক ভুল। একদিন এ ভুলের খেসারত দিতে হবে ভারতকে। ইতিহাস সাক্ষী পৃথিবীর বহু মসজিদে মূর্তি ঢুকানো হয়েছিলো কিন্তু তা স্থায়ী হয়নি।

পবিত্র কা’বা আঙ্গিনায়ও ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিলো কিন্তু তা অপসারিত হয়েছে। এ অধিবেশন আরো বলতে চায় অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের জায়গা রাম মন্দির নির্মাণের রায়ে মুসলমানরা ন্যায় বিচার পায় নি। সুপ্রীম কোর্ট রায়েই বলেছে, ‘ভারতের প্রত্নতাত্বিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী এখানে কোন হিন্দু মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে তার কোন প্রমান নেই’। অথচ রায়ে জায়গাটি মন্দির নির্মাণের জন্যে দিয়ে দিয়ে দেয়া হলো। আসলে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর প্রদত্ত ভারতীয় সুপ্রীম কোর্টের ঐ রায়টি ছিলো ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজিপি সরকারের মনোভাব ও পরিকল্পনারই প্রতিফলন।

রাম জন্মভূমির কল্পিত দাবীকে কেন্দ্র করে ভারতের অযোধ্যায় ১৫২৯ সালে নির্মিত প্রায় পাঁচশত বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ১৯৯২ সালে উগ্র হিন্দুরা ভেঙ্গে ফেলে। বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পরপর সেসময়ে ভারতে হাজার হাজার মুসলমানকেও হত্যা করা হয়। ভারতীয় সুপ্রীম কোর্ট ভেঙ্গে ফেলা বাবরী মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের অন্যায্য রায় দিয়ে ভারতসহ সারা দুনিয়ার মুসলমানদের যেভাবে ব্যাথিত করেছে, আজকে বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ করে বিশ্ব মুসলিমের অন্তরে আঘাত হানা হয়েছে। বাবরী মসজিদ ধ্বংস ও মসজিদের জায়গায় মন্দির নির্মাণ বিশ্ব মুসলিম কোনভাবই মেনে নেবে না। জোর করে ও অন্যায়ভাবে কোন কিছু চাপিয়ে দেয়ার পরিনাম শুভ হয় না।

অধিবেশন অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের জায়গা রাম মন্দির নির্মাণ বন্ধ করার জোর দাবী জানান এবং ১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বর উগ্রবাদী কর্তৃক ভেঙ্গে ফেলা অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ স্বস্থানে পুন:নির্মাণের জোর দাবী পুর্নব্যক্ত করছে একই সাথে ভারতের সংখ্যা লঘু মুসলামনদের উপর হত্যা, নির্যাতন পীরন বন্ধের জোর দাবী জানাচ্ছে।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ