শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


সন্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার সুবর্ণ সুযোগ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী।।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>

বন্ধ সারা দেশের সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অবসরে শিক্ষার্থীরা। পড়াশুনা না থাকায় নানাভাবে সময় পার করছেন তারা।

এদিকে কাজের পরিমাণ কমে যাওয়ায় অভিভাবকরাও দিনশেষে দীর্ঘ সময় পান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু সাধারণ সময় অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেভাবে কথোপকথনের সুযোগ হয়না, পিতার সঙ্গে সন্তানের আদর্শিক লেনাদেনা অচলাবস্থায় থাকে, মায়ের সঙ্গে ভালোবাসা বেড়ে ওঠে না -তাই করোনা ভাইরাসের এই সময়ে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং নীতি-নৈতিকতার প্রশিক্ষণে কাজ করতে পারেন।

যাত্রাবাড়ী মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী মনে করছেন পিতা-মাতার সঙ্গে সন্তানের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার এখনই সুবর্ণ সুযোগ।

তিনি বলেন, এই সুযোগে শিক্ষার্থীরা পিতা-মাতার সঙ্গে তাদের ভালোবাসা পূর্ণ সম্পর্কটাকে আরো গভীর করতে পারেন। বাড়িতে মায়ের কাজে সহযোগিতা করে তার মন পেতে পারেন। বাবার সঙ্গে মাঠ চষে মন জয় করতে পারেন।

"বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত মোহাম্মদ সা. বাবা মায়ের সঙ্গে সন্তানের ভালোবাসা পূর্ণ সম্পর্কের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। এবং বাবা মায়ের প্রতি অসদাচরণের কঠিন শাস্তির কথা মানবজাতির কাছে বলে গেছেন। এক হাদিসে বলা হয়েছে, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বাবা-মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবে, সে আখেরাতে শাস্তি তো পাবেই, দুনিয়াতে এসে শাস্তি ভোগ করবে। (তিরমিজী)

"সুতরাং আমাদের উচিত এই সুযোগে বাবা-মায়ের বাবা-মায়ের সঙ্গে ভালোবাসা আরো গভীর করে তোলা। ব্যক্তিবিশেষ কারো সঙ্গে বাবা-মায়ের দুঃসম্পর্ক থাকলে সেই সম্পর্কের পরিবর্তন করা।" যোগ করেন মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের সম্পর্ক উন্নয়নের পরামর্শ দিলেন।

আবার ইসলামের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, শুধুমাত্র এই সময়টাতেই নয়, বরং আমাদের উচিত বছরজুড়ে সন্তানদের সঙ্গে কিছুটা সময় ব্যয় করা। তাদের মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করা। নীতি নৈতিকতা শেখানো। অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা। যাতে তাদের মানসিক ডিপ্রেশনের কথা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার না করে বাবা-মায়ের সঙ্গে শেয়ার করার সুযোগ তারা পায়।

পিতা-মাতার সঙ্গে সন্তানের বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্কের ভালো দিক হলো, যখন তারা কোন ডিপ্রেশনে ভোগে, সাধারণত তারা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সেটা শেয়ার করে। কিন্তু বাস্তবে সেই বন্ধুবান্ধবরা তাকে সঠিক পথের দিশা দিতে পারেনা। কখনো কখনো বাজে বন্ধুর পাল্লায় পড়লে মাদকের দিকে টেনে নিয়ে যায়।

কিন্তু যদি পিতা-মাতার সঙ্গে সন্তানের বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক থাকে, অকপটে নিজের দুশ্চিন্তা ডিপ্রেশনের কথা বাবা-মাকে জানাতে পারার সাহস তার মনে থাকে, তাহলে বাবা-মার নিশ্চয়ই তাকে সু পরামর্শ দেবেন। এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত হওয়ার সকল প্রকার প্রক্রিয়া তারা সম্পন্ন করবেন। তাতে সন্তানের বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

এছাড়াও নীতি-নৈতিকতাপূর্ণ জীবন গঠনে শিক্ষার্থীদের এই মুহূর্তে ধর্মীয় বই পড়ানোর আহ্বানও জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই প্রফেসর।

তিনি বলেন, সর্বপ্রথম আমাদের সন্তানদের পরিপূর্ণ সহি শুদ্ধভাবে কুরআন শেখানো দরকার (যদি কারো কোরআন তেলাওয়াত সহি-শুদ্ধ না থাকে)। বাড়িতে বসে শয়তানকে কোরআন শিক্ষা নয় এই মুহূর্তে বাবা-মায়ের উপর সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।

এছাড়াও ধর্মীয় যেসকল বইগুলো শিক্ষার্থীরা করতে আগ্রহী সেগুলো ক্রয় করে এনে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দেয়া উচিত তাতে তারা নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শিক দেখতে পারবে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ