মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫


কওমি শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষা শেখার সুবর্ণ সুযোগ!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: কওমী মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আরবির সাথে মিল রেখে অনলাইনে ইংলিশ স্পোকেন কোর্সের আয়োজন করেছে আহমাদ’স এডুকেশন।

কোর্সটি পরিচালনা করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মেধাবী ছাত্র, আহমাদ’স এডুকেশনের স্বত্বাধিকারী যুবায়ের আহমাদ। ইতপূর্বে তিনি ঢাকার বিখ্যাত জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস শেষ করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে তার প্রদত্ত একটি ইংরেজি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুঁড়ায়।

যুবায়ের আহমাদ দেশের সনামধন্য বেশ কয়েকটি কোচিংয়ে ভার্সিটি এডমিশন ইংলিশের ক্লাস নিচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থিদের জন্য আরবির সাথে মিল রেখে ইংলিশ স্পোকেন কোর্সের আয়োজন করেছেন। কোর্সের খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয় যুবায়ের আহমাদের সাথে।

আওয়ার ইসলাম: কোন চিন্তা থেকে বা কেনো আপনি কওমি শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি ভাষা শিক্ষার কোর্সের আয়োজন করলেন?

যুবায়ের আহমাদ: ধন্যবাদ। মূলত কওমি শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রবল ভালবাসা এবং আমার আম্মুর একান্ত নির্দেশনা থেকেই এই কোর্সের উদ্যোগ নেওয়া। আমার মা মনে প্রাণে চান, ইলমি এবং দাওয়াতী ময়দানে আমাদের কওমী উলামাদের খেদমত যাতে পুরো বিশ্বব্যপি ছড়িয়ে যায়,পৃথিবীবাসি যেনো যুগ শ্রেষ্ঠ এই আলেমদের নিকট ফায়দা হাসিল করা থেকে কিছুতেই বঞ্চিত না হয়। আর আপনি এটা অবশ্যই জানেন, বর্তমান পুরো পৃথিবীব্যপি ছড়িয়ে পড়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ইংরেজি ভাষায় বুৎপত্তি অর্জন করা।

আওয়ার ইসলাম: আপনার স্পোকেন কোর্স সম্পর্কে যদি একটু বিস্তারিত বলতেন?
যুবায়ের আহমাদ: যদিও আমি এই কোর্সের নাম দিয়েছি “স্পোকেন কোর্স”, কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ ইংরেজির প্রায় সবগুলো বিষয় এই কোর্সে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

স্পোকেনকে মূল গুরুত্ব দিয়ে আমরা এখানে ছাত্রদের “ফনেটিক্স” অর্থাৎ সঠিক ইংরেজি উচ্চারণ নিয়ে কাজ করবো, রাইটিং অর্থাৎ ইংরেজি লেখার নিয়ম কানুন নিয়ে কাজ করবো,পাশাপাশি রিডিং এবং লিসেনিং নিয়েও কাজ করবো ইনশাআল্লাহ। এই প্রতিটি বিষয়ে দেশের প্রসিদ্ধ কোচিংগুলোতে আলাদা আলাদা কোর্স করতে গেলে একজন ছাত্রের প্রায় ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। আমার নিজেরও সেটা হয়েছে।

পাঠদান পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্য এই কোর্সগুলো আমি একাধিক প্রতিষ্ঠানে করেছি,সর্বপরি এখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশ সেরা বিদগ্ধ সব প্রফেসরদের নিকট প্রতিনিয়ত শিখছি। আমার জ্ঞানলব্ধ সকল সোর্স থেকে বাছাই করা সেরা পদ্ধতি এবং বিষয়গুলোকে একত্র করে আমি আমার চলমান কোর্সটি সাজিয়েছি।আলহামদুলিল্লাহ,কওমি শিক্ষার্থীদেরকে মাত্র ১,০০০/- এক হাজার টাকায় আমি এই কোর্সটি উপহার দিতে পারছি। শিক্ষার্থীদেরকে আমি এ ব্যপারে আশ্বস্ত করতে পারি, লক্ষাধিক টাকা খরচ করে যে সকল নামিদামি কোচিংয়ে আমি পড়েছি,তাদের থেকে কয়েকগুন বেশি মানসম্পন্ন সার্ভিস আমি আমার প্রিয় কওমি শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিনিয়ত দিতে পারছি। আলহামদুলিল্লাহ, দেশের শীর্ষস্থানীয় বহু কওমী মাদরাসার সম্মানিত আসাতিযায়ে কেরাম এবং ছাত্র ভাইরা আমার কোর্সটি করছে, প্রতিনিয়ত উপকৃত হচ্ছে।

আওয়ার ইসলাম: স্পোকেন, ফনেটিক্স, রিডিং, রাইটিং এতোগুলো বিষয় কীভাবে মাত্র ২৫টি ক্লাসে কমপ্লিট করবেন? এটা কি আদৌ সম্ভব?

যুবায়ের আহমাদ: যথার্থ একটি প্রশ্ন করেছেন। প্রথমত, সাধারণ কোচিংগুলোতে হোয়াইট বোর্ডের উপর মার্কার দিয়ে লিখে লিখে এরপর সেগুলো আবার মুছে আবার লিখে যে দীর্ঘ পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়, আমি প্রযুক্তির সহায়তায় পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড শো ব্যবহার করে তাদের সে ১ঘন্টার ক্লাস মাত্র ২০ মিনিটে শেষ করতে সক্ষম হই। আমি ক্লাসে নতুন করে কিছুই লিখি না বা মুছি না। লেখাগুলো সব আগে থেকেই সুবিন্যস্ত আকারে প্রস্তুত করা থাকে। আমি কী বোর্ডে একটি ক্লিক করা মাত্রই লেখাগুলো পরিবর্তন হয়ে পরবর্তি স্লাইড বা লেখা চলে আসে।

দ্বিতীয়ত, সাধারণ কোচিংগুলোতে ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তরে কিংবা বার বার চর্চা করার স্বার্থে ক্লাসে প্রায় সময় একই আলোচনার পুনরাবৃত্তি করা হয়। এক্ষেত্রে আমি প্রতিটি ক্লাস শেষ হওয়ার ২-৩ ঘন্টার মধ্যে পুরো ক্লাসের এইচ ডি কোয়ালিটির ভিডিও ফেসবুক প্রাইভেট গ্রুপে আপলোড দিয়ে দেই এবং সেটার গুগল ড্রাইভ ডাউনলোড লিংক দিয়ে দেই। একই সাথে ক্লাসে যা যা পড়ানো হয়েছে, বিভিন্ন উদাহারণ সহ তার পূর্ণাঙ্গ একটি শিট/নোট পিডিএফ আকারে গ্রুপে দিয়ে দেই।

ছাত্ররা সারা সপ্তাহ ক্লাসের ভিডিওটি শিটের সাথে মিলিয়ে বার বার দেখে এবং কোনো প্রশ্ন থাকলে প্রাইভেট মেসেঞ্জার গ্রুপে জিজ্ঞাসা করে। সেখানে সার্বক্ষণিক আমি শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকি। এর মাধ্যমে পরবর্তি ক্লাস শুরু হওয়ার পুর্বেই ছাত্রদের বিগত ক্লাসের সকল সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। তাই আমার এক ক্লাসের আলোচনা কখনোই আরেক ক্লাসে দ্বিতীয়বার পুনরাবৃত্তি করার প্রয়োজন হয় না।

তৃতীয়ত,আমরা ছাত্রদের প্রশ্নোত্তরের জন্য শেষ ৩০ মিনিট বরাদ্দ করেছি। যার কারণে মূল ক্লাসের ১.৩০ মিনিট সময়ে আমাদের কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় না।

আর এভাবেই সময়ের সঠিক ব্যবহার করে আমি মাত্র ২৫টি ক্লাসের মধ্যেই স্পোকেন,ফনেটিক্স, রাইটিং, রিডিং এবং লিসেনিং কে অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছি।

আওয়ার ইসলাম: ছাত্রদের প্রাকটিকাল ইংরেজি কথা বলার বা চর্চা করার কী কোনো সুযোগ আছে আপনার এই কোর্সে?
যুবায়ের আহমাদঃ ১২টি ক্লাস শেষ হওয়ার পর আমি শিক্ষার্থীদেরকে একটি আলাদা নাম্বার দিয়ে দেই। যেখানে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ফোন করে তারা আমার সাথে কোনো প্রকার লজ্জা এবং ভয় ছাড়া ইংরেজিতে কথা বলতে পারে।

ছাত্রদেরকে নিজেদের মধ্যে ইংরেজিতে কথা বলার তামরিন করার জন্য গ্রুপে গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হয়,যা তাদের অসামান্য উপকারে আসে। তাছাড়া শেষ ৬টি ক্লাস আমি সম্পূর্ণ ইংরেজিতে নিয়ে থাকি। যেখানে ছাত্রদের সাথে সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রশ্নোত্তর আদান প্রদান ইংরেজিতে হয়।

আওয়ার ইসলাম: অনেক শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পুর্ব অভিজ্ঞতা নেই, তারা জুম এপ ব্যবহার করতে জানে না। এ ব্যপারে আপনি কী বলবেন?

যুবায়ের আহমাদ: শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র প্লে স্টোর থেকে জুম এপটি ইন্সটল করতে পারলেই চলবে। বাকী কাজ খুবই সোজা। মোবাইল নাম্বারের মত একটি নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড আমরা দিয়ে দিবো,সেটা জুমে বসিয়ে দিলেই সে আমাদের সাথে যুক্ত হয়ে যাবে। এমনকি সাইন ইন বা জুমে আইডি খোলার কোনো প্রয়োজন নেই। এছাড়া আমরা একাধিক ইউটিউব ভিডিও দিয়ে দিবো,যেখানে স্পষ্ট করে বাংলা ভাষায় ব্যখ্যা করা আছে কীভাবে জুম এপ ব্যবহার করে আমাদের সাথে ক্লাসে যুক্ত হতে হবে।

আওয়ার ইসলাম: আপনার ক্লাস করতে হলে তো ইন্টারনেট প্যক ক্রয় করতে হবে, সেক্ষেত্রে তো ছাত্রদের অতিরিক্ত খরচ যাচ্ছে!
যুবায়ের আহমাদ: ২ঘন্টা ক্লাস করা এবং ক্লাস শেষে সেটা ডাউনলোড করা, পুরো কাজটি করতে সর্বোচ্চ ৬০০-৮০০ এমবি ডাটা খরচ হবে। প্রায় প্রতিটি অপারেটরেই এখন ৩/১ দিন মেয়াদে ৩০ টাকায় বা তারও কমে ১ জিবি ডাটা পাওয়া যাচ্ছে। কোনো একটি কোচিংয়ে গিয়ে কোর্স করতে গেলে প্রতিদিন যাতায়াত বাবদই শিক্ষার্থীদের এর সমপরিমান খরচ লেগে যায়। সেক্ষেত্রে তারা এটিকে ভাড়ার খরচ হিসেবে বিবেচনা করতে পারে।

আওয়ার ইসলাম: এবার একটি ভিন্ন প্রশ্ন। আপনি কওমী মাদরাসার পুর্ণাঙ্গ ছাত্র হওয়া সত্বেও কীভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পড়ছেন, সেই গল্পটা যদি একটু বলতেন!

যুবায়ের আহমাদ: জ্বি,এটি মোটেও শিক্ষণীয় কোনো গল্প না। তবুও আপনি যেহেতু প্রশ্ন করলেন,উত্তর দিতে হচ্ছে।আমি কওমী মাদরাসায় পড়াকালীন সময়ে একটি আলিয়া মাদরাসার সাথে চুক্তিবদ্ধ হই এভাবে যে, তারা আমাকে সরাসরি বোর্ড পরীক্ষার এডমিট কার্ড দিবে। এছাড়া কোনো ক্লাস,পরীক্ষা কিংবা মডেল টেস্টে অংশগ্রহণ করতে হবে না। এ পদ্ধতিতেই আমি জেডিসি, দাখিল এবং আলিম পরীক্ষায় কৃতকার্য হই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার পূর্বে আমার একটি দৃড় প্রতিজ্ঞা ছিলো,পড়লে শুধু ইংরেজি সাবজেক্টেই পড়বো অন্যাথায় পড়বোই না। পরীক্ষা শুরু হলে শীর্ষ ৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি, আল্লাহর রহমতে সবগুলোতেই চান্স পেয়ে যাই।

কিন্তু সেই ইংরেজির জন্য আমার বাসা ঢাকা হওয়া সত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হইনি। দূর্ভাগ্যজনক ভাবে আমার পজিশনের আগেই ঢাবি এবং জাবির ইংরেজি বিভাগের সিটগুলো শেষ হয়ে যায়। আপনি হয়তো জানেন, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল অনুসারে একেবারে টপ লেভেলের কিছু ছাত্রদেরকে ইংরেজি বিভাগে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। এ দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি সবগুলোতেই সাবজেক্ট হিসেবে ইংরেজি এসেছিলো,বেশ কিছু দিক বিবেচনা করে অবশেষে আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যাই।

আওয়ার ইসলাম: আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
যুবায়ের আহমাদ: আপনাকেও ধন্যবাদ।

যুবায়ের আহমাদ ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/jubayer.ahmad.35175633
আহমাদ’স এডুকেশন ওয়েবসাইট-https://ahmadseducation.com/
আহমাদ’স এডুকেশন ফেসবুক পেইজ-https://www.facebook.com/AhmadsEducation/

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ