শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


করোনার ঝুঁকি ও আতঙ্ক কমাতে পারে কালোজিরা ও মধু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শাইখুল হাদীস মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ।।

করোনায় সারা বিশ্ব আজ তছনছ হয়ে পড়েছে।ইতিমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ লাখ ছাড়িয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আক্রান্তের সঠিক সংখ্যা কারোই জানা নেই। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে মৃত্যু বরণ করেছেন প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি মানুষ।তাই আমরা সকলেই রয়েছি আক্রান্তের ঝুঁকিতে ও আতঙ্কে। (আল্লাহ তায়ালা সকলকে হেফাজত করুন)।

এমতাবস্থায় আমি তিব্বে ইলাহী ও তিব্বে নববী সা. এর আলোকে মধু ও কালোজিরার কার্যকারিতা ও সেবনবিধি নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। পাশাপাশি কালোজিরার ক্ষতিকর দিকগুলোও তুলে ধরব।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা গাছ-পালা, লতা-পাতা, ফল, ফুল, মূল, দানা, বিজ ইত্যাদি ভেষজ সহ বিভিন্ন প্রানিজ ও খনিজ দ্রব্যকে ঔষধি গুণ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। হাজার হাজার বছর ধরে শুধু মানুষ নয়, অন্যান্য প্রাণিরাও এগুলো দিয়ে আরোগ্য লাভ করে আসছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানেও গবেষকগণ এগুলোর উপর গবেষনা করেই বিভিন্ন ঔষধ তৈরি করে আসছেন।

কালোজিরা: এর প্রধান সক্রিয় উপাদান হচ্ছে নাইজেলিন, নাইজেলন ও কারভোন। এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। ইহা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং জিবাণু প্রতিরোধে খুবই কার্যকর। তাছাড়া ঠান্ডা-সর্দি, কাশি, জ্বর, এলার্জি, অ্যাজমা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, বুকের ব্যথা, ডায়াবেটিস সহ অন্যান্য অনেক জটিল রোগ চিকিৎসায় ইহা অত্যন্ত কার্যকরী।

মাত্রা: কালোজিরা ১ থেকে ৭ গ্রাম পর্যন্ত সেবন করা যায়। আর কালোজিরার তেল চা-চামচের আধা চামচ সেবন করা যায়।

সাবধানতা: কালোজিরার তেল পুরোনো হয়ে গেলে সেবন করা যাবে না। আর গর্ভবতী নারীদের কালোজিরা বা কালোজিরার তেল কোনোটাই সেবন করা উচিত নয়। কারণ এতে গর্ভপাতের আশংকা রয়েছে। অতিরিক্ত মাত্রায় কালোজিরা বা কালোজিরার তেল পিত্ত ও মুত্রাশয়ের জন্য ক্ষতিকর।

কালোজিরা সম্পর্কে নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বাণী অবিস্মরণীয়। হযরত আবু সালামা রাযি. হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, তোমরা এই কালোজিরা ব্যবহার করবে, কেননা এতে একমাত্র মৃত্যু রোগ ব্যতীত সর্বরোগের শেফা (আরোগ্য) রয়েছে। -বুখারী ও মুসলিম।

মধু: মধু যেমনিভাবে ঔষধ তেমনি খাদ্যও বটে। সূরা নাহল-এর ৬৯ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেন: (তরজমা) "মধুর মধ্যে মানুষের জন্য শেফা রয়েছে।" অর্থাৎ মধু আরোগ্যকারী।তবে আমাদের মনে রাখতে হবে রোগ যেমন ভাইরাস বা জিবাণুর কারণে সৃষ্টি হয় না, আল্লাহর আদেশে হয়। ঠিক তেমনি আরোগ্যও কোনো ঔষধের কারণে হয় না, বরং আল্লাহর আদেশেই হয়।তাই রোগ মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং আরোগ্য লাভের জন্যেও আল্লাহর দরবারেই আবেদন করতে হবে।

কালোজিরা ও মধুর সেবনবিধি: ১ চা-চামচ কালোজিরা ও ১ টেবিল চামচ মধু একত্রে মিশিয়ে সকালে নাস্তার পরে ও সন্ধায় সেবন করতে হবে।আর কালোজিরার তেল ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে আধা চা-চামচ মিশিয়ে সেবন করতে হবে। খাঁটি মধু না পাওয়া গেলে ১ কাপ রঙ চা এর মধ্যে আধা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে পান করতে হবে। আর দৈনিক ৩ বার ১ কাপ ফুটন্ত গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে গরম অবস্থায় চায়ের মতো পান করতে হবে। অথবা ডি-শেফা ক্যাপসুল সকালে নাস্তার পরে একটি ও রাতে আহারের পর একটি সেবন করা যেতে পারে। যাতে রয়েছে ৫০০ মিঃ গ্রাঃ কালোজিরার তেল। প্রস্তুতকারক: ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল ইউনানী লিঃ।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা যেন আমাদেরকে ও বিশ্ববাসীকে করোনাভাইরাসের মহামারী থেকে ও অন্যান্য বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করেন। আমীন।

লেখক: চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কওমী কাউন্সিল।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ