বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

শবে বরাত আসলে কী?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাফেজ মাওলানা আহসান জামিল।

যদিও ‘শবে বরাত’ সম্পর্কে আমাদের সমাজে কিছু এলোপাতারি কথা বিদ্যমান। অনেকে এটাকে খুব গুরুত্বপূর্ন রজনী তথা মুসলিম উম্মাহর জন্য শ্রেষ্ঠ রাত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আবার অনেকে এটাকে এড়িয়ে গিয়েছেন, এই ধরনের মতবাদ সৃষ্টি হওয়ার পিছনে যৌক্তিক কারন বিদ্যমান। কারন ‘শবে কদর’ সম্পর্কে সুস্পষ্ট আয়াতে কারিমা বিদ্যমান থাকার কারনে এ নিয়ে আমাদের কোন জল্পনা কল্পনা নাই। কিন্ত এই রাত্রটি সম্পর্কে মহাগ্রন্ত আল কুরআনে সরাসরি কোন আয়াত নেই। তবে প্রাসঙ্গিক একটি আয়াত আছে। আর তা হলো “ইন্না আনযালনাহু ফি লাইলাতিম মুবারকাতিন ইন্নাকুন্না মুনযিরিন”।

এতে মুফাসসিরিনে কেরাম মত প্রকাশ করেছেন, যে এটি শবে বরাত সম্পর্কে অবতীর্ণ আবার কেউ কেউ দ্বিমতও প্রকাশ করেছেন। যাই হোক, এমন একটি বরকতপূর্ণ রজনীর আবাস হাদীসের পাতায়ও পাওয়া যায়। আসলে এই রাতের প্রকৃত বিষয় কি সেটাই জানা আমাদের
কর্তব্য। ‘শবে বরাত’ কথাটি ফার্সি। ‘শব’ অর্থ রাত আর ‘বরাত’ অর্থ মুক্তি। অত এব ‘শবে বরাত’ অর্থ হল মুক্তির রাত। মহান আল্লাহ এই রাতে তার বান্দাদেরকে ডেকে ডেকে বলেন, যার পাপ আছে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থী হও আমি ক্ষমা করে দিবো। যারা রোগ গ্রস্থ আছ
মুক্তি চাও, আমি মুক্তি দিয়ে দিবো। যার অভাব অনটন আছে আমার কাছে চাও, আমি তার অভাব মিটিয়ে দিবো। এভাবে ফজর পর্যন্ত আমাদের মহান রব আহ্বান করতে থাকেন।

অন্য একটি হাদীসে এই রাত্রের আমল সম্পর্কে বলা হয়েছে, “ইযাকানাত লাইলাতুন নিসফিমিন শাবান কুমু লাইলাহা ওয়াসুমু নাহারাহা.......”। অথ্যাৎ , যখন শাবান মাসের অর্ধেক হয়ে যায় তখন, তোমরা সেই রাত্র জাগরন কর, আর পরের দিন রোজা রাখ। এরপর রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “ফা ইন্নাল্লাহা তায়ালা ইয়ানযিলু ফিহা লি গুরুবিশশামসি ইলা সামায়িদ দুনিয়া ফায়ে কুলু
আলা মিন মুসতাগফিরিন ফাগফির লাহু আলা মিন মুসতার যিকিন ফাআরজুক্বহু আলামিন মুবতালান ফাউয়াফিহি আলা কাজা আলা কাজা হাত্তা ইয়াতলুআল ফাজরু”। অর্থ্যাৎ আল্লাহ পাক এই রাতে প্রথম আসমানে চলে আসেন বা আল্লাহ তার বান্দার খুব কাছে চলে আসেন।

প্রিয় নবীজি (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ পাক প্রথম আসমানে এসে মানুষকে ডেকে ডেকে বলতে থাকেন , তোমরা কেউ গোনাহগার আছ আমার কাছে মাফ চাও আমি মাফ করে দিবো, কারো রিজিক চাওয়ার আছে আমার কাছে রিজিক চাও আমি রিজিক দিয়ে দিবো, রোগাক্রান্ত
থাকলে রোগ থেকে মুক্তি চাও মুক্তি দিয়ে দিবো, এভাবে আল্লাহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে বলতে থাকেন সুবহে সাদিক পর্যন্ত। এই হাদীস থেকে এটা প্রমান হয় যে এই রাত্রটা আসলে মহান আল্লাহর কাছে চাওয়া পাওয়ার রাত্র।

শবে বরাতে আমাদের কি কি করনীয় সে সম্পর্কে হাদীসের দ্বারা এবং ফিকাহ’র কিতাবে যা বলা হয়েছে তা থেকে কতিপয় আমল সম্পর্কে জানা যায়। আর তা হল এই রাত্রে নফল ইবাদাত বেশি করা। বিশেষ করে নামাজ বেশি পড়া। দু’আ করা আল্লাহর কাছে যা কিছু চাওয়ার সব কিছু চাওয়া। পরের দিন নফল রোজা রাখা কোন প্রকার আড়ম্বর ও ব্যাপক আয়োজন ছাড়া কবর যিয়ারত করা ইত্যাদি। অথ্যাৎ নফল ইবাদাতের মাধ্যমেই এই রাত্রটি অতিবাহিত করা। এই ধরনের কতিপয় আমলের কথাই আমরা হাদীসের মাধ্যমে জানতে পারি।

তবে অতিরঞ্জিত কোন কিছু করা এটা সম্পূর্ণ শরীয়ত বহির্ভূত কাজ। দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছুর আনয়ন এটা বেদাত আর সকল বিদাতই পথভ্রষ্ট। এই জন্য এই দিন সম্পর্কে সমস্ত কুসংস্কার থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের কে তাওফিক দিন আমীন।

লেখক: প্রভাষক, আইয়ুব হেনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। খতিব, আইয়ুব হেনা পলিটেকনিক জামে মসজিলেখক ও গবেষক

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ