বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫


করোনার প্রভাবে যেভাবে বদলে যেতে পারে এবারের রমজান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ফরহাদ খান নাঈম।।

বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ এর তাণ্ডবে মুসলিম বিশ্বে এবারের রমজান মাসটি হতে পারে অনেকটাই অন্যরকম।

রমজানের পূর্ববর্তী এ দিনগুলোতে মুসলমানগণ সাধারণত এ পবিত্র মাসের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতে মুসলমানদের বসার ঘর থেকে শুরু করে রান্নাঘর পর্যন্ত বাসার প্রত্যেকটা স্থানেই পরিলক্ষিত হয় রমজানের প্রস্তুতির আমেজ।

কিন্তু করোনার কারণে এবছর বিভিন্ন দেশে লকডাউন ও জরুরি অবস্থা জারি থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলো দিনের অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকছে। ফলশ্রুতিতে আগত রমজান মাসের প্রস্তুতিতে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটছে। উদাহরণস্বরূপ মিসরীয় সরকার কর্তৃক দেশটিতে সকাল-সন্ধ্যা জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে। তারা এবার রমজানে তারাবির নামাজ আদায় না করারও ঘোষণা দিয়েছে।

এছাড়াও হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনের কারণে অনেক ব্যবসায়ীই বিপাকে পড়ছেন। সম্মুখীন হচ্ছেন বিরাট অংকের ব্যবসায়িক ক্ষতির। অর্থনৈতিক ভার্সাম্যতা হারিয়ে যেতে বসেছে।

শিশু, ঋতুবতী ও গর্ভধারণকারী নারী, অসুস্থ এবং সফররত ব্যক্তি ব্যতীত সকলের উপরই রমজানের রোজাকে ফরজ করা হয়েছে। এবছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে করোনা আক্রান্ত বহু লোকই শারীরিক অসুস্থতার দরুণ রোজা রাখতে সক্ষম হবেন না।

রমজান মুসলমানদের জন্য কেবল ইবাদতেরই নয়; বরং এ পবিত্র মাসজুড়ে সমস্ত মুসলমানের ঘরেই বিরাজ করে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। কিন্তু এবছর করোনা কবলিত অনেক পরিবারেই থাকবে না এই আনন্দ।

ইফতারি ও সাহরিতে সাধারণত মুসলমানগণ একত্রিত হয়ে পানাহার করেন। কিন্তু করোনার দ্বারা সংক্রমিত হবার ভয়ে এবছর সাহরি ও ইফতারিতে থাকবে না এই লোকসমাগম। রোজাদারগণ নিভৃতেই সেরে নেবেন রমজানের গুরুত্বপূর্ণ এই দু'টি কাজ।

রমজানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো সালাতুত তারাবিহ। রমজান মাসে সালাতুত তারাবিহ আদায় করার জন্য প্রতিটি মসজিদেই থাকে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু এবছর করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই মসজিদে নববিসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক মসজিদই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অন্যান্য দেশের মসজিদগুলোতেও সীমিত করে দেওয়া হয়েছে মুসল্লিদের উপস্থিতি। ফলে এবছর মসজিদগুলোতে সালাতুত তারাবিহ আদায় করার জন্য আগত মুসল্লিদের সংখ্যা থাকবে নিতান্তই কম।

রমজানের শেষে সারা বিশ্বের মুসলমানগণ অত্যন্ত আনন্দ ও ভাবগাম্ভীর্যতার সাথে পালন করেন তাদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদের দিন সকালবেলা ঈদের সালাত আদায়ের জন্য সর্বস্তরের মুসলমান স্থানীয় ঈদগাহ কিংবা মসজিদে ভিড় জমান। কিন্তু এবছর করোনার আবির্ভাবে লোকসমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকার কারণে ঈদের সালাত আদায়ের জন্য মুসলমানগণ ব্যাপকহারে মসজিদ কিংবা ঈদগাহে হাজির হতে পারবেন না।

শিশু পার্কসহ বিনোদনের সকল স্থানে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞার কারণে শিশু-কিশোরদের ঈদ উদযাপনেও ঘটবে বড় ধরনের বিপত্তি। তাই বলা যায়, এবার করোনার প্রভাবে বদলে যেতে পারে রমজান, ঈদ, রোজা ও তারাবি।

মিডল ইস্ট আই.নেট আবলম্বনে ফরহাদ খান নাঈমের অনুবাদ

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ