শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে আক্রমণ করেনি করোনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৭ লাখেরও বেশি মানুষ, প্রাণ হারিয়েছে ৩৭ হাজারের বেশি। তবে এখনও পৃথিবীর দুর্গম কিছু অঞ্চলে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়নি একজনও।

এর মধ্যে একটি হলো উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্র পালাউ। এর জনসংখ্যা মোটে ১৮ হাজার। সেখানকার একজনও কোভিড-১৯ টেস্টে ইতিবাচক হননি।

নিকটতম প্রতিবেশী থেকেও কয়েকশ কিলোমিটার দূরে প্রশান্ত মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত পালাউ দ্বীপের জন্য সমুদ্র নিজেই যেন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কঠোর ভ্রমণ নিষেধাধা টঙ্গা, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ও মাইক্রোনেশিয়াসহ ওই অঞ্চলের কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্রকে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি থেকে নিরাপদ রাখতে সহায়ক হয়েছে।

করোনার প্রাদুর্ভাবে এখনও আক্রান্ত হয়নি সামোয়া, তুর্কমেনিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও এন্টার্কটিকা মহাদেশ।

দুর্গম হলেই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে এমন নয়। উত্তর মেরিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের (পালাউয়ের উত্তরে) ভাইরাসটিতে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিকে গত সপ্তাহের শেষে শনাক্ত করা হয়, সোমবার তার মৃত্যু হয়েছে।

পালাউয়ের বাসিন্দা শিল্পী ক্ল্যামিয়োকল টিউলপ সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, পালাউতেও ক্রমশ উত্তেজনা ও উদ্বেগ টের পাচ্ছি। উহান, নিউইয়র্ক ও মাদ্রিদের মতো দুর্দশা পালাউয়ের ভাগ্যে ঘটবে না বলে আমি আশাবাদী।

আক্রান্ত সন্দেহে পালাউয়ের এক বাসিন্দাকে কর্তৃপক্ষ করোনা পরীক্ষার ফল না আসা পর্যন্ত সঙ্গরোধে রেখেছিল। এ ঘটনায় বেশ ভীতির সঞ্চার করে ছোট্ট দ্বীপটিতে। রোগটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় ইতোমধ্যে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দ্বীপ রাষ্ট্রটি।

দেশের বৃহত্তম শহর করোরের সুপারমার্কেটে আতঙ্কিত জনতা ব্যাপকহারে কেনাকাটা করায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক ও অ্যালকোহলের সংকট সৃষ্টি হয়। দ্বীপটি পণ্যসামাগ্রীর জন্য জাহাজ ও প্লেন চলাচলের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বভাবতই দ্বীপটিতে পণ্য সরবরাহ কমে গেছে।

ইউনাইটেড এয়ারলাইনস নিকটবর্তী গুয়াম থেকে সপ্তাহে ছয়টি ফ্লাইট পরিচালনা করত। গুয়ামে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে ৫০ জন। এখন সেখান থেকে সপ্তাহে একটি মাত্র ফ্লাইট পালাউ দ্বীপে চলাচল করছে।

দ্বীপবাসীর অনেকেই পর্যটনের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন, ইতোমধ্যে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে অনেক বাসিন্দা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন।

দ্বীপটির চিকিৎকরা তাইওয়ান থেকে করোনা পরীক্ষার কিট আসার অপেক্ষায় রয়েছেন। সরকার পাঁচটি আইসোলেশন কক্ষ নির্মাণ করেছে, যাতে ১৪ জন রোগীকে চিকিৎসা দিতে সক্ষম হবে।

আজকের দুনিয়ায় করোনাভাইরাসমুক্ত একমাত্র মহাদেশ এন্টার্কটিকা, যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজনই নেই। সেখানে উপস্থিত অভিযানকারীরা নিরাপদ রয়েছেন, তবে তারা কিভাবে প্রিয়জনদের কাছে ফিরবেন সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।

কোথাও করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি মানে এই নয় যে, সেখানে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। প্রতিবেশী চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনার ব্যাপক প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও ভাইরাসটি থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে সফল দাবি করছে উত্তর কোরিয়া। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তথ্য গোপনকারী সরকার প্রকৃত সত্য হয়তো বলছে না।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ