শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


যেসব কারণে জুমার বদলে ঘরে জোহর নামাজ পড়া যাবে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী ।।

ইমাম মুয়াজ্জিন ও মসজিদ-খেদমত কর্তৃপক্ষের কিছু লোক ছাড়া আজ বাকী সব মুসল্লী মসজিদে না গিয়ে জুমার বদলে ঘরে জোহর পড়তে পারবেন কেন? কোন কোন কারণে প্রতিটি মুসল্লি লকডাউনের সময় মসজিদে নামাজ না পড়ে নিজ ঘরে নামাজ আদায় করতে পারেন। আজ জুমার নামাজে না গিয়ে নিজ ঘরে জোহরের নামাজ আদায় করতে পারবেন।

প্রথম কারণ: কেউ যদি কোভিড ১৯ মহামারী রোগে নিশ্চিত আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তার জন্য জনঘনিষ্ঠতা, মসজিদে গমন বা জামাতে গিয়ে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ হারাম।

দ্বিতীয় কারণ: কেউ যদি ভাইরাস বহনের সম্ভাবনা আছে বলে গৃহরুদ্ধ বা কোয়ারেন্টাইনে থেকে থাকেন এবং তার জন্য অন্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে মসজিদে গমন করবেন না। তার জন্য জামাতে যাওয়া জায়েয হবে না। এ মুহূর্তে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা ওয়াজিব।

তৃতীয় কারণ: কেউ যদি অন্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় করেন, তাহলে তার জন্য নিজ ঘরে নামাজ পড়ার অবকাশ রয়েছে। 'কোভিড ১৯' এ ভাইরাসের সংক্রমণ কার হয়েছে সে-ও জানে না। কে কখন আক্রান্ত হচ্ছে তা-ও সে বোঝে না। না জেনেই একজন হাজারো মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে যায়। বাইরে থেকে রোগ বয়ে আনে, ঘরের বৃদ্ধ বাবা-মা, সব বয়সী নারী পুরুষ ও শিশুদের মাঝে একজন বাবা ভাই স্বামী সন্তান না বুঝেও মহামারী ছড়িয়ে দিতে পারে।

চতুর্থ কারণ: কেউ পূর্ণ সুস্থ-সবল আছেন, জানা মতে কোনো ধরনের আশঙ্কা কিংবা আতঙ্ক নেই। কিন্তু সরকার অধিক লোকসমাগম নিষেধ করে দিয়েছে, দু’জন একসাথে চলা মানা করেছে কিংবা বাইরে গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাস্তবতা বিবেচনায় বাস্তবেই ভয়াবহ প্রাণঘাতী মহামারী ছড়িয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা আছে বিধায় সরকারি বাধ্যবাধকতা মেনে নেয়া অপরিহার্য।

বিশ্বব্যাপী আলেমসমাজ এ মর্মে ফতওয়া এবং নির্দেশনা দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমার সাথে বড় বড় সবদেশ, মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে আল আজহার, দেওবন্দ, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ড, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানী, আল্লামা মুফতি তাকী উসমানীসহ দেশীয় সব নির্ভরযোগ্য ফিকহ ও ফাতাওয়া বিশারদগণের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। সকলের সিদ্ধান্তের আপডেটসহ প্রতিটি নির্দেশনা সার্বক্ষণিক পেয়ে চলেছি।

পঞ্চম কারণ: নিজের প্রাণ, পরিবার এবং দেশ ও বিশ্বের কোটি মানুষকে প্রাণঘাতী বিপদ থেকে রক্ষার জন্য কিছু সময় বা কয়েক দিন সরকারের ও স্বাস্থ্যবিভাগের নিষেধ মেনে (এবং যতক্ষণ সম্ভব গৃহে পরিপালিত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি অনুসরণ করে অতি সীমিত ও সতর্ক ব্যবস্থাপনায় মসজিদ, আজান, জামাত ও জুমা সচল রেখে) সর্বস্তরের মুসলমানদের মসজিদে জনসমাগম না করার বিধান শরীয়ত অনুমোদন করে।

লেখক: মহাপরিচালক, ঢাকা সেন্টার ফর দাওয়াহ রিসার্চ এন্ড কালচার।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ