শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


প্রবাসে ইসলাম ও দেশীয় সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছে 'আল নূর কালচারাল সেন্টার'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী
ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক

আল নূর কালচারাল সেন্টার। ইসলামি শিক্ষা, সমাজব্যবস্থা, সুস্থ সস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যন্য প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি সংগঠন। প্রবাসীদের মাঝে দেশীয় সংস্কৃতি  ও ইসলামের অনুপম আদর্শ নিরলসভাবে কাজ করেছে চলেছে সংগঠনটি।

পারস্য উপসাগরের দেশ কাতারে ‘আল নূর কালচারাল সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সেই সময় থেকেই নিয়মিত নানান কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে সংগঠনটি।

বর্তমানে আমেরিকা ও বাংলাদেশে আল নূরের শাখা রয়েছে। ওই শাখা দু’টি থেকে শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মসূচি পরিচালিত হয়ে থাকে। বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও বিশেষ দিনকে কেন্দ্র করে বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও ওলামায়ে কেরামের মাধ্যমে সেমিনারের আয়োজন করে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

পাশাপাশি প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশুদের মাঝে দেশীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের ইতিহাসের পাঠ বিস্তৃত করতে নানারকম শিশুতোষ আয়োজন করা হয়। যাতে প্রবাসে থেকেও দেশের কথা স্মরণ রাখে এবং অকপটে বলতে পারে নিজের শেকড়ের কথা।

এমনই একটি পোগ্রাম ছিলো গত ২২ মার্চ। মহান স্বাধীনতার মাস উপলক্ষ্যে আল নূরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ইসলামী মহাসেম্মলন ও কুইজ প্রতিযোগিতা। সর্বমোট তিন ভাষায় কুইজের ব্যবস্থা করা হয়। এটাই কাতারের মাটিতে তিন ভাষায় ( আরবি, ইংরেজি ও বাংলা) আয়োজিত প্রথম কোন অনুষ্ঠান।

প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। কুইজের প্রতিটি প্রশ্নই ছিলো দেশ ও ইসলাম কেন্দ্রিক। কুইজে বিজয়ীদের ল্যাপটপ,আইপ্যাড, মোবাইল, স্কুল ব্যাগ, গৃহসামগ্রী, নগদ অর্থ, বোরকা, বইপত্র ও সার্টিফিকেটসহ আকর্ষণীয় সব পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়াও অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিযোগিকে দেয়া হয় শান্তনা পুরস্কার।

অপরদিকে একই সময়ে অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলনে তরুণ আলেমদের পাশাপাশি কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রমকাউন্সিলর, বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক ও প্রফেসরবৃন্দ, কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক ও সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় । এটি আলনূরের সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ বহন করে।

সম্মেলনে আল নূর যুক্তরাষ্ট্র শাখার নির্বাহী পরিচালক তরুণ ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি ইসমাইলের অংশগ্রহণ সদস্যদের উজ্জীবিত করেছে সন্দেহ নেই । প্রতিযোগীদের পুরস্কৃত করার পাশাপাশি কমিউনিটি নেতৃবৃন্দকে সম্মাননা উপহার প্রদান ও আল নূরের সর্বাধিক সক্রিয় সদস্য ও সদস্যাকে ধন্যবাদপত্র প্রদান ছিল এক নন্দিত প্রয়াস।

সম্মাননা ও মূল্যায়ন পরিচালকমণ্ডলীর উদারতা ও মহানুভবতার স্মারক। সম্মেলন নারী পুরুষের বিশাল উপস্থিতির পাশাপাশি শিশু কিশোরদের উচ্ছাস সকলকে বিমোহিত করেছে।

স্থানীয় কয়েকজন প্রবাসী অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, কাতারের মাটিতে এই প্রথম এতো সুন্দর আয়োজন আমাদের চোখে পড়েছে। আমরা প্রবাসে থেকে দিনদিন ভাষা ও সাংস্কৃতি ভুলতে চলেছি। আল নূরের আয়োজনটি আমাদের মাঝে নতুন করে প্রেরণা সৃষ্টি করেছে। বিশেষত, আমাদের সন্তানরা সাংস্কৃতি ও ইসলাম শেখার সুযোগ পেয়েছে একটু ভিন্ন মাত্রায় অনুষ্ঠিত হওয়ার ফলে শিশুদের মাঝেও বেশ আগ্রহ দেখেছি।”

তারা বলেন, আল নূরের প্রতিটি কর্মসূচি আমাদেরকে মা-মাটি ও ইসলামকে স্বরণ করিয়ে দেয়। আমরা সেন্টারটির সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করছি।

আল নূর ইসলামি মহাসেম্মলন ও কুইজ পোগ্রামের প্রতি সমর্থন ও ভালোবাসা ব্যক্ত করে বাংলাদেশ সরকারের ধর্মমন্ত্রী বার্তা প্রেরণ করেন। তাতে তিনি আল নূরের প্রতি সমর্থন ও প্রবাসীদের দেশ, ইসলামের প্রতি ভালোবাসা দেখে আনন্দ প্রকাশ করেছেন।

বাণীতে তিনি বলেন, কুইজের মাধ্যমে প্রবাসী শিশুদের মনে ইসলাম ও দেশ সম্পর্কে ভালোবাসা তৈরি নিঃসন্দেহে একটি উত্তম কাজ। আমি এই অনুষ্ঠানের সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করছি।

গত ২২ তারিখের অনুষ্ঠানটি ছাড়াও আল নূরের প্রতিটি আয়োজন প্রাণবন্ত হয়ে থাকে। যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, সংগঠনটি সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের উপস্থিতি ও সংযুক্ত করে থাকে।

আল নূরের মহিলা সদস্যদের জন্য মহিলা কর্ণারের আয়োজন থাকে। যেখানে আলেমাগণ নসিহত ও আলোচনা করে থাকেন।

আলনূর ইসলামী সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে নিঃসন্দেহে। এর প্রতিটি কাজ ও কর্মপন্থায় সচেতনতা ও দূরদর্শিতার ছাপ স্পষ্ট। সমাজের প্রতিটি মানুষকে আল নূরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাহী পরিচালক মাওলানা ইউসুফ নূর।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর