বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলা কি নিছক বর্ণবাদী হামলা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কামরুল হাসান নকীব
আলেম ও গবেষক

নিউজিল্যান্ডের মর্মান্তিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে কোন পত্রিকা কী নিউজ করছে, সেটা খেয়াল করে করে পড়ছি। বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত একটি দৈনিকের অনলাইন সংস্করণের একটা রিপোর্ট পড়লাম সেখানে দেখানো হল, এই সন্ত্রাসী হামলাটা নিছক বর্ণবাদী হামলা।

অর্থাৎ তারা ধর্মের কোনো সম্পৃক্ততা খুঁজে পান নি। মানে উগ্র ইসলামবিদ্বেষিতার কোনো ট্রেইস পান নি। অথচ হামলাকারীর অস্ত্রে ক্রুসেড যুদ্ধের বহু নেতাদের নাম লিখিত ছিল।

যাই হোক বাদ দেন, যদি ধরেও নেই এটা বর্ণবাদী হামলা। ইসলামবিদ্বেষিতা নয়। তাহলে মসজিদের বাইরে কি কোনো অশেতাঙ্গ লোক নিউজল্যান্ডে বাস করে না? কেবল মসজিদেই কি অশেতাঙ্গ লোক থাকে? তাদের কাউকে সে হত্যা করল না কেনো? এতেই তো বোঝা যায় এটা কোনো বর্ণবাদী হামলা না।

দৈনিকগুলো ভাবে এসব করে তারা পার পেয়ে যাবেন! আমি তাদেরকে মধ্যযুগের নামজাদা কবি ভারতচন্দ্রের একটি বিখ্যাত উক্তি মনে করিয়ে দিতে চাই 'নগর পুড়লে দেবালয় কি এড়ায়!' অতএব আপনারাও বাঁচবেন কি?

কোনো এক মসজিদের শহরেই তো আপনার শিশুটি বেড়ে উঠছে। আপনার বৃদ্ধ বাবা কোনো এক মসজিদেই তো শেষজীবনের পাপক্ষয়ে মগ্ন। কিংবা আপনার মা প্রিয়তমা স্ত্রী, ভাই, বোন, তারাও তো মসজিদের শহরেই নিশিভোর শান্তির শ্বাস নিচ্ছে। ভুলে গেছেন কি?

ওয়ার অন টেরর বা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ( সহজ কথায় ইসলামের বিপক্ষে যুদ্ধ) বহু আগেই মোড়ল রাষ্ট্রগুলোর অধিকর্তাগণ নিজেদের ভিতর সীমিত না রেখে নাগরিকদের ভিতর ছড়িয়ে দিয়েছেন। সে নাগরিক হতে পারেন পশ্চিমের। কিংবা প্রাচ্যের। সহজ কথায় সবাই এর ভোক্তা ও গ্রাহক। নিউজিল্যান্ডের ঘটনা যার প্রমাণ।

বিশ্বমোড়লরা আর কতো পয়সা খরচ করে সেনাবাহিনি পালবে! তাই বিশ্বের প্রতিটি নাগরিককে আধুনিক সভ্য নাগরিক বানানোর অজুহাতে রিক্রুট করা হচ্ছে। তাদের বাহিনির সদস্য হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। তাদের মতার্দশে দীক্ষিত করা হচ্ছে। আর সেটা তারা করছেন মিডিয়ার সাহায্য। ইসলামোফবিয়া ছড়িয়ে অর্থাৎ ইসলামের বিরুদ্ধে আতঙ্ক ছড়িয়ে।

অহর্নিশি আমাদের অগোচরেই আমরা তাদের এই কলোনাইজেশন অব নলেজের শিকার হচ্ছি। জ্ঞানের উপনিবেশীকরণ বা কলোনাইজেশন অব নলেজ হচ্ছে বিশ্বমোড়লগণ যা যেভাবে দেখাবে তাকেই ধ্রুব সত্য মনে করা।

পোস্ট কলোনিয়াল বা সাম্রাজ্যবাদ-পরবর্তী যুগের এ হচ্ছে দাসত্বের নতুন 'বিজ্ঞান'। এ 'বিজ্ঞানে'র সাহায্যে সারা পৃথিবীর মানুষকে দাস বানানো যায়। দেশ দখল করে দাস বানানোর সময় ও স্টাইল এখন সেকেলে ও পুরোনো। সাম্রাজবাদ-পরবর্তী সময়ে মানুষের মাথাকে দখল করা হচ্ছে। এই 'বিজ্ঞান' কে বুঝতে শিখতে হবে। তারপর তার প্রতিরোধ কায়েম করতে হবে।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ