মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


রাত পোহালেই ডাকসু নির্বাচন, পোস্টারময় ঢাবি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম:  আর মাত্র কয়েকটা ঘন্টার অপেক্ষা। রাত পোহালেই শুরু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।

সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহণ।ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার ১৭৩ শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছেয়ে গেছে পোস্টার ফেস্টুনে। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, প্রগতিশীল ছাত্রজোট, ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশনসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে।

দীর্ঘ ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙে হতে যাওয়া এ নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সবার মধ্যে বিশেষ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, মধুর ক্যান্টিন, টিএসসিসহ প্রতিটি চা স্টলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে নির্বাচনী আলাপ। এসব আলাপের সারাংশ, কোন প্রার্থী কেমন ফলাফল করবে।

ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পছন্দের বন্ধু-বড় ভাই যারা ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তাদের ভোট দেব।’

‘ক্যাম্পাসের সবখানে ডাকসুর নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। আশা করছি, কোনো রকম সংঘাতময় পরিবেশ ছাড়াই খুব সুন্দরভাবে আগামীকাল ভোট হবে।’

এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৭ প্রতিবন্ধী প্রার্থী ৭৩১ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৫টি পদের বিপরীতে ২২৯ জন লড়ছেন। ভিপি পদে ১১ জন, জিএস পদে ১৪ জন এবং এজিএস পদের প্রতিদ্বন্দ্বী ১৩ জন।

ডাকসুতে প্রার্থী হয়েছেন চারজন। তারা হলেন, বামজোটের সদস্য পদে আমজাদ হোসেন, ছাত্রলীগের যোশীয় সাংমা চিবল, স্বতন্ত্র রুবেল মিয়া ও সাহিত্য সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহীন আলম।

আবাসিক হলে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। এরা হলেন, সূর্যসেন হলে জিএস পদে শওকত হোসেন, সূর্যসেন হলে সমাজসেবা সম্পাদক পদে রবিউল ইসলাম রুবেল ও মুহসীন হলে সমাজসেবা সম্পাদক আবুল হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘নিরাপত্তা, ব্যালট, প্রার্থিতা, হল ম্যানেজমেন্ট, বুথ ও কেন্দ্র সব নির্ধারিত। আমাদের প্রস্তুতি শেষ। এখন অপেক্ষা করছি ভোটের।’

নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী, হাউস টিউটর, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, প্রক্টরিয়াল বডি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল টিম, মোবাইল পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবেন। সঙ্গে আর্চওয়ে, ক্যামেরা ও সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। এগুলোর মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে

১৯৭০ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের সহযোগী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ডাকসুতে আর কখনও জয় পায়নি। ১৯৭২-৭৯ সময়কালে ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে দায়িত্ব পালন করেন ছাত্র ইউনিয়নের মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও মাহবুব জামান।

১৯৭৩ সালের নির্বাচন ভণ্ডল হয়ে গিয়েছিল। ১৯৭৯, ১৯৮০ ও ১৯৮২ সালে ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। প্রথম ২ নির্বাচনে যথাক্রমে জাসদ-ছাত্রলীগের এবং বাসদ-ছাত্রলীগের প্রার্থী হয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জিতেছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না ও আখতারুজ্জামান।

১৯২২ সালে ডাকসু সৃষ্টি হওয়ার পর বিগত ৯৬ বছরে ডাকসুর ইতিহাসে পরপর দুটি মেয়াদে লাগাতার ডাকসুর ভিপি এবং জিএস পদে নির্বাচিত হন মাহমুদুর রহমান মান্না এবং আখতারুজ্জামান। যে দুটি মেয়াদে তারা নির্বাচিত হন সে দুটি মেয়াদ ছিল (১) ১৯৭৯-৮০, ১৯৮০-৮১ এবং ১৯৮১-৮২।

১৯৮২ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৯৮৯ পর্যন্ত ভিপি ও জিএস পদে যথাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন আখতারুজ্জামান ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। ১৯৮৯-৯০ সেশনে দায়িত্ব পালন করেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মুশতাক আহমেদ।

১৯৯০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৯৯০-৯১ সেশনের জন্য ভিপি ও জিএস পদে যথাক্রমে নির্বাচিত হন ছাত্রদলের আমানউল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন। এরপর আর ডাকসু নির্বাচন হয়নি।

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ