বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’ মালয়েশিয়ার সিটি ইউনিভার্সিটিতে সম্পন্ন হলো বিয়াম'র চ্যাপ্টার কমিটি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জ্যামাইকার আগামীদিনে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হবে দেশের হজ ব্যবস্থাপনা: ধর্মমন্ত্রী সকালে ইসতিসকার নামাজ আদায়, রাতেই নামল স্বস্তির বৃষ্টি চাঁদ মামার বয়স হয়েছে! চাঁদের বয়স কত? বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার যোগাযোগ বন্ধ বাড়তে পারে তাপমাত্রা, দুপুরের মধ্যেই ঝড়-বৃষ্টির আভাস

‘একদিন ছুটি কাটালে ২৮ ছাত্রের পড়া বন্ধ থাকে, এজন্য ছুটি নেই না’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী
ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক>

নাম হাফেজ মাহমুদুল হাসান। পেশায় মাদরাসার শিক্ষক। প্রায় ছয় বছর যাবৎ হিফজ বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত আছেন একটি মাদরাসায়।

চাকরিতে প্রবেশের সময় বেতন ধার্য হয়েছিল পাঁচ হাজার পাঁচশো টাকা। অর্ধ যুগে বেতন বেড়েছে মাত্র পাঁচশো টাকা। সে হিসেবে বর্তমান বেতন ছয় হাজার টাকা।

বিয়ে করেছেন দুবছর হলো। এখনও ঘটা করে স্ত্রীকে নিজ বাড়িতে তুলতে পারেন নি। অন্যভাবে বললে তার শশুড়বাড়ি থেকে দেন নি। কারণ শশুড়বাড়ির মানুষের ধারণা ছয় হাজার টাকা দিয়ে স্ত্রী নিয়ে থাকা সম্ভব নয়।

এজন্য তার শশুর বলেছেন, আমরা ফাতেমাকে ( তাঁর স্ত্রী) এখনই আপনার ঘরে তুলে দিতে পারছি না। আরো কিছুদিন যাক। ততদিন আপনিও আমাদের এখানেই থাকবেন। মাদ্রাসা ছুটি হলে এখানে চলে আসবেন।

শশুরের কথায় তেমন অসঙ্গতি খুঁজে পাননি হাফেজ মাহমুদুল হাসান। আলাপ কালে তিনি বলেন, দুমাস আগে বাবা হয়েছি। যখন ইশা (তার মেয়ে) জন্মগ্রহণ করে, তখন দুদিন ছুটি কাটিয়েছিলাম। এরপর গতমাসের শেষের দিকে একবার গিয়েছি। এমাসের ২৭ তারিখ আজ। এখনও ছুটির নামগন্ধ নেই।

অবশ্য ছুটি চাইনি বড় হুজুরের কাছে। আমাদের হিফজ বিভাগে ছাত্র আছে সর্বমোট ২৮ জন। আমি একদিন ছুটি কাটালে একসঙ্গে ২৮ জন ছাত্রের পড়ার ক্ষতি হবে। একদিনের সবক, সাত সবক, আমুখতা বন্ধ থাকবে। এতে আমার অসুবিধার চেয়ে ছাত্রদের অসুবিধাটাই বড়।

তাই প্রতিমাসের নির্ধারিত দিন ছাড়া ছুটি কাটাতে পারি না। বা সম্ভব না। আগামীকাল বৃহস্পতিবার। বিকেল থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত মাসিক ছুটি। তাই কালকে যাবো।

ধামরাই এমদাদিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মাহমুদুল হাসানের সাথে সাক্ষাৎের সময় তিনি দুপুরের খাবারের আয়োজন করলেন। সে সময় তিনি আরও কিছু কষ্ট দায়ক কথা শুনালেন। যেগুলো এখন হয়ত তাঁর কাছে সয়ে গেছে, কিন্তু বাস্তবে বিষয়টা অমানবিক। তার ভাষায় তিনি বলেছিলেন,

ইশা হওয়ার সময় তার মাকে সিজার করাতে হয়। সাভারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সব কাগজপত্র দেখে ডাক্তার বললেন, আজকের ভেতর সিজার না করালে বিপদ হতে পারে। ডাক্তার জানালেন, পনের হাজার টাকা লাগবে অপারেশন করাতে।

সঙ্গে সঙ্গে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। এতো টাকা কোথায় পাবো? বেতন পাই ছয় হাজার টাকা। অপারেশন করতে প্রয়োজন পনের হাজার! বেতনের পুরোটা দিয়ে দিলেও তো হচ্ছে না। তারপর শশুরের কাছে একপ্রকার হাত পেতে টাকার ব্যবস্থা করেছিলেন।

খাওয়া দাওয়া শেষে উঠে আসবো, এমন সময় হাফেজ মাহমুদুল হাসান বললেন, আপনে আমার দুঃখ কষ্ট শুনতে আইছিলেন। এবার বুঝলেন তো ক্যামনে চলি?

ধামরাই এমদাদিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা থেকে প্রতি বছর পাঁচ থেকে ছয়জন ছাত্র কুরআনের হাফেজ হয়। এর ফলে প্রতি বছর পাঁচজন কুরআনের সেবক পায় পুরো সমাজ। তাদের পাগড়ি প্রদান উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় বিশাল মাহফিলের। এতে মাদরাসার আয় বাড়ে। কিন্তু বাড়ে না শুধু হাফেজ মাহমুদুল হাসানদের মতো মানুষের বেতন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ