শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ইলিয়াস রহ.-এর যাদুকরি মন্ত্র

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন
মুহাদ্দিস, কলামিস্ট ও গবেষক

জগতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মাওলানা ইলিয়াস রহ. এখন একটি মডেল। না, নোবেলের প্রস্তাব করছি না। আমরা অতটা নিচে নেমে যেতে কখনই অভ্যস্ত ছিলাম না। বরং অশান্তির আগুনে দগ্ধমান পৃথিবীর জন্যে এখানে হাতের নাগালে বাঁচার একটা পথ আছে। পথটা সরল সহজ এবং যুক্তিগ্রাহ্য।

মানুষ যখন একমুঠো শান্তির অভাবে পূর্ণযৌবন একটি জীবন চলন্ত গাড়ির নিচে ফেলে দিয়ে নিস্তার রোধ করে- তখন পৃথিবীটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কি শান্তিটা খুবই জরুরি নয়? অন্তত মুঠো মুঠো শান্তি।

মাওলানা ইলিয়াস রহ. দেখিয়েছেন- শান্তিটা অভিযান করে এখনো অনেক দূরে চলে যায়নি। শান্তিটা আছে এবং আমাদের ঘরের পাশেই আছে। নরোম করে ছোট ছেলেটাকে ডাকলে যতটুকু দূর থেকে শোনা যায়, শান্তিটা তারচে’ দূরে নয়। তবে তাকে ঘরে তুলতে হলে মমতাময়ী মায়ের মতোই ডেকে তুলতে হবে।

ইতিহাস এমনই বলে। ওকাজ বাজারে একবার যে শুনেছে প্রিয়তম নবী সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোমল আহ্বান- কণ্ঠের সে মমতা কোনোদিন সে ভুলতে পারেনি। সাধেই কি ওরা যাদুকর বলে চেচামেচি করেছে।

বেঈমানদের এই শব্দটার প্রতি আমার দুর্বলতা লুকাতে পারি না। আশ্চর্য হই, সেই যাদুটা এখনো সমানভাবে ফলবান। মাওলানা ইলিয়াস রহ. ওই পুরনো মন্ত্রটাকেই কাজে লাগিয়েছেন। কী দস্যি দস্যি ছেলেগুলো কোমল কোমল শান্ত দুলালের দলে পরিণত হয়েছে, হচ্ছে- দেখে চোখের আশ মিটে না!

দেশটার যারা কল্যাণ চায়, কল্যাণের জন্য গবেষণা করে যারা রাষ্ট্রের টনে টনে তেল বিদ্যুৎ আর গ্যাস জ্বালিয়ে লোডশেডিংটাকে আরো স্বাস্থ্যবতী করে তুলে- তারা চাইলেই কি এখান থেকে আঁজলা ভরে নিতে পারে না? এই তারুণ্যের মিছিলে ঢুকে আবিষ্কার করতে পারে না- কিসের ছোঁয়ায় উশৃংখলার অবাধ্য মুদ্রাগুলো এভাবে শিল্পের ছন্দে, রূপান্তরিত হলো!

কথাটা সত্য! সকল মানুষের চিন্তা কর্ম ও ভাবনার বিন্দু একটা। সৃষ্টিকর্তা! এক বিন্দুতে মিশে যাওয়ার শক্তি একবার যাকে নাড়া দিয়েছে সে কি আর সেই বিন্দু থেকে দূরে সরে থাকতে পারে? এই মিশে থাকাটাকেই তো সাম্য বলে, বলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন।

আমরা আলাদা করে এই বন্ধন পাতি না। এ আমাদের লালিত বিশ্বাসের বাইরের আদল। কোনো মানুষ তার হাত পা নাক মুখ মাথাকে যেমন আলাদা করে দেখে না- এই বিন্দুতে মিশে গিয়ে যারা শক্তি বোধ করে তারাও এই স্রোত ও দলের কোনো অংশকে আলাদা করে দেখে না। ফলে এখানে দারিদ্র আর প্রাচুর্যের কোনো আলাদা সূচক রেখা গড়ে ওঠে না।

অনেকদিন পরে, খুবই নরোম করে এই মন্ত্রটা আবার হাতে নিলেন মাওলানা ইলিয়াস রহ.। দেখে মুগ্ধ হই। সেই মন্ত্রে কিভাবে ছন্দময় হয়ে উঠছে আমাদের চারপাশ। ক্ষোভ খেদ আর অহঙ্কারের ভষ্মপ্রায় যৌবন ভদ্রতা শীলতা আর শৃংঙ্খলায় সবুজ হয়ে উঠেছে। সেই সবুজের দিকে তাকিয়ে কোন আজন্ম পাপীও মুগ্ধ না হয়ে পারে না।

এই সবুজের পরশ পৃথিবীব্যাপী ফেলেছে সবুজের ছায়া। নোবেল নয়, পৃথিবীকে যারা সবুজ দেখতে চায়, চায় শান্তির পরশে জীবন্ত দেখতে- তাদের সামান্য ঠাঁই হোক এই সবুজের ভিড়ে। পৃথিবী খুঁজে পাক হাতের কাছে লুকিয়ে থাকা শান্তির সন্ধান! প্রভুর দরবারে এই আমাদের মিনতি। -ইজতেমা প্রতিদিনে প্রকাশিত

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ