ইশতিয়াক সিদ্দিকী, হাটহাজারী প্রতিনিধি>
দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামিম, আল্লামা আহমদ শফী বলেন, দীনি শিক্ষা না থাকায় দূর্নীতিতে দেশ ও জাতির অকল্পনীয় ক্ষতি হচ্ছে।
আজ (১৭ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার, সকালে বাংলাদেশের দ্বীনি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বিত প্রাথমিক শিক্ষার বৃহত্তম বোর্ড ‘নূরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ড চট্টগ্রাম বাংলাদেশ’ এর অধীনে দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষায় এ+ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটি বোর্ডের মহাসচিব আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীনের সভাপতিত্ব ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আনাস মাদানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বোর্ডের চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, নৈতিকতাসম্পন্ন সুশিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। এ কথাটি এখন আর উচ্চারিত হয় না। শুধু শিক্ষিত হলে চলবে না আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা সম্পন্ন সুশিক্ষিত করতে হবে। তবেই তারা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তারা কখনো দুর্নীতিগ্রস্ত হবে না, অন্যের হক নষ্ট করবে না।
তিনি আরো বলেন, অভিভাবকগণ একবুক প্রত্যাশা ও বিশ্বাস নিয়ে সন্তানদের সুনাগরিক হিসেবে তৈরি করার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠায়। তাদের আশা, আমার সন্তান শিক্ষিত হবে, মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করবে, সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। অথচ সেই শিশুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক দ্বারা অথবা সহপাঠি দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে।
ফলে স্বপ্নগুলো চুরমার করে দিচ্ছে। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও লজ্জাজনক। এসব থেকে আগামীর ভবিষ্যৎকে পরিত্রাণ দিতে হলে পাঠদান পদ্ধতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিন্নতা আনতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক শিক্ষিত ব্যক্তি আছে যারা তাদের কর্মক্ষেত্রে বসে প্রতিনিয়ত মানুষ হয়রানি করছে প্রতারিত করছে, নৈতিক ও আর্দশিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হওয়ার কারণে দূর্নীতির মাধ্যমে দেশ ও জাতির অকল্পনীয় ক্ষতি সাধন করছে। মনে রাখতে হবে দেশকে সুসন্তান, সুনাগরিক উপহার দিতে হতে হলে অবশ্যই সুশিক্ষিত হতে হবে।
আল্লামা শফী আরো বলেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরাজমান অরাজকতা ও অনৈতিক কাজগুলো আমাকে ভীষণভাবে আহত করছে। আমি বারবার এসব দূরিকরণের লক্ষে কথা বলে যাচ্ছি দেশে ও জাতির স্বার্থে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষাক্রমে দ্বীনি শিক্ষার প্রতি আরো গুরুত্ব দিতে হবে। প্রকৃত আলেম দ্বারা দ্বীনি ও নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। পত্রিকায় পাতায় যখন আমার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বীয় শিক্ষক দ্বারা নির্যাতনের খবর পড়ি তখন আহত বোধকরি।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মেখল মাদরাসার পরিচালক ও বোর্ডের সহসভাপতি আল্লামা নোমান ফয়জি, মাওলানা জমিরউদ্দীন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেপুরী, মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমী, মাওলানা মীর আনিস, মাওলানা আবুল হাশেম, মাওলানা এমদাদ, মাওলানা মঞ্জুর ও মাস্টার আনিস প্রমুখ।
প্রধান অতিথি আল্লামা শাহ আহমদ শফী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে উত্তীর্ণ শিক্ষাথীদের পুরস্কার তুলে দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষায় নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ড, চট্টগ্রাম বাংলাদেশ এর অধীনে সারা দেশ হতে দুই লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। গত ২৪ডিসেম্বর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পাশের হার ছিলো ৯০.২%।
-এটি