মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


এবার কি প্রধানমন্ত্রিত্ব হারাচ্ছেন থেরেসা মে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে বিশাল ব্যবধানে হেরে এখন আস্থা ভোটের মুখে পড়তে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। আস্থা ভোটের মধ্য দিয়ে মীমাংসা হবে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন কিনা।

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্ধারিত হবে থেরেসা মে’র ভাগ্য।  মে যদি আস্থা ভোটে হেরে যান তবে নতুন করে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। তবে তিনি টিকে গেলেও পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নেওয়া তার জন্য কঠিনই হবে।

মঙ্গলবার রাতে ব্রিটেনের সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে সদস্যদের ভোটাভুটিতে ২৩০ ভোটে হেরেছেন তিনি। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ৪৩২ জন এমপি চুক্তির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর পক্ষে ছিলেন ২০২ জন। ব্রিটেনের ইতিহাসে ক্ষমতাসীন কোনো দলের জন্য এটিই সবচেয়ে বড়ো পরাজয় বলে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ানের খবর বলছে, থেরেসা মের এই পরাজয়ের পর ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশটি। ইতোমধ্যে বিরোধী নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন।

তবে ভোটের ফল যে থেরেসা মের বিপক্ষে যাবে –এমনটি আন্দাজই ছিল। অনেকেই এই ফলাফলে মোটেও বিস্মিত হচ্ছেন না।

এ চুক্তি প্রত্যাখাত হওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছরের বিতর্ক, সমঝোতা এবং দরকষাকষির সব কিছুই ভেস্তে গেল। আর অনিশ্চিত হয়ে গেল ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ। এখন তিন দিনের মধ্যে সরকারকে নতুন প্রস্তাব নিয়ে হাজির হতে হবে।

এদিকে, বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন থেরেসা মে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। চুক্তি পাশে ব্যর্থ হওয়ার খবর আসা মাত্রই তিনি অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এখন এই আস্থা ভোটের দিকেই সবার নজর। বুধবারই এই আস্থা ভোট হতে পারে।

প্রসঙ্গত ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন হলে আগামী ২৯ মার্চ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ব্রিটেনের।

ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া প্রশস্ত করতে থেরেসা মের চুক্তি বাস্তবায়নের জন্যই ছিল এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠান। থেরেসা মের প্রস্তাবিত চুক্তিটি অধিকাংশ সাংসদরা বাতিল করায় তার সামনে এখন দু’টো পথ খোলা আছে। প্রথমত, চুক্তির নতুন খসড়া তৈরি করা। দ্বিতীয়ত, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের সময় বাড়িয়ে নেওয়া। তা না হলে কোনো রকমের চুক্তি ছাড়াই ২৭টি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে ব্রিটেনকে। এতে বেশ বড়োসড়ো সংকটে পড়বে দেশটির অর্থনীতি তথা সামাজিক অবস্থা।

ব্রেক্সিট চুক্তির অন্যতম বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আলোচিত ৩৯ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ কীভাবে পরিশোধ করবে যুক্তরাজ্য। এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত জোটের অন্য দেশগুলোর প্রায় ৩২ লাখ মানুষের অবস্থান কী হবে কিংবা ইউরোপের অন্য দেশগুলোতে থাকা যুক্তরাজ্যের প্রায় ১৩ লাখ নাগরিকের ভবিষ্যৎই বা কী হবে –এগুলোও চুক্তির মধ্যে ছিল। এগুলো ছাড়া নর্দান আয়ারল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যেকার সমস্যার বিষয়টি তো ছিলই। এসব বিষয়ে চুক্তিতে যেসব সমাধান দিয়েছেন থেরেসা মে, তা বেশিরভাগ সদস্যদেরই পছন্দ হয়নি।

তবে এই ভোটাভুটিতে হেরে যাওয়ার পর, থেরেসা জানিয়েছেন, তিনি অনাস্থা ভোটের জন্য প্রস্তুত।

কেপি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ