শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


বিতর্কিত ডিসি-এসপিদের বদলির দাবি ২০ দলের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: বিতর্কিত ডিসি-এসপিদের বদলির দাবি জানিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

রোববার বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান জোটের মুখপাত্র ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।

তিনি এ সময় পক্ষপাতদুষ্ট, বিতর্কিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি এবং বাকিদের বদলির দাবি জানান।

একইসঙ্গে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপ-মন্ত্রীদের পিএস, এপিএসদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ না দেয়ারও দাবি জানান কর্নেল অলি।

জোটের প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে তিনি বলেন, আমরা বিতর্কিত কর্মকর্তাদের শাস্তি চাই না, বদলি চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে এক জেলার কর্মকর্তাদের অন্য জেলায় বদলি করা জরুরি। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে এখনও সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। পুলিশ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। ইসির নির্দেশনা এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে প্রতিফলিত হচ্ছে না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, আজকের দিন পর্যন্ত প্রমাণ করতে পারেনি ইসি সুষ্ঠুভাবে কাজ করছে বা তারা নিরপেক্ষ। তাদের সীমাবদ্ধতা আছে, সেটা আমরা জানি। তবে আমরা যে ১৩টি প্রস্তাব এনেছি, তাতে নির্বাচন কমিশনাররা একমত হয়েছেন। তারা বলেছেন, প্রস্তাবনাগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

বৈঠকে ইসির কাছে লিখিত দাবিনামা তুলে দেয় ২০ দলীয় জোটের প্রতিনিধিরা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় ঐক্যফন্টের পক্ষ থেকে কয়েক দিন আগে নির্বাচন কমিশনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের তালিকা দেয়া হয়েছিল, তাদের নির্বাচনকালীন সময়ে অন্যত্র বদলির দাবি জানাচ্ছে ২০ দলীয় জোট। তারা দাবি করেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য অতীতে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে ইসি।

লিখিত বক্তব্যে ‍উল্লেখ করা হয়, রিটার্নি কর্মকর্তাদের দায়িত্বপালন করা অনেক কর্মকর্তাই সরকারি দলের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য রাতের আধারে ব্যালট পেপারে ভোট কাস্ট করে রাখেন।

চাকরির রক্ষার জন্য অনেক সময় তারা এই রকম অনৈতিক কাজে আত্মসমর্পণ করেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড এড়াতে ইসির আগে থেকেই ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

সরকার একটি দুরভিসন্ধি ও নীলনকশার নির্বাচন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিনিয়তিই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরে গ্রেফতার করছে, ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। এই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে নির্বাচন কমিশনকে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে। এভাবে চললে নির্বাচন বানচাল হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা সত্ত্বেও সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। কমিশনকে এক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

২০ দলের দাবি করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার এএসপির স্ত্রী ফাতেমা তুজ জোহরা আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি। সম্প্রতি সন্তানসহ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি ছবি তুলেছেন। এ অবস্থায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তার পক্ষে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না।

নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারি রেডিও ও টেলিভিশন ইসির নিয়ন্ত্রণে থাকা বাঞ্চনীয় বলে মনে করে ২০ দলীয় জোট। বেসরকারি গণমাধ্যমের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ইসির তরফ থেকে একটি গাইডলাইন করা প্রয়োজন।

নির্বাচনকালীন সময়ে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের গ্রেফতারের ক্ষমতা দিয়ে পুলিশের মতো সশস্ত্র বাহিনীকেও দায়িত্ব দেয়া দরকার।

১৫ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা প্রয়োজন। প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় পূর্ণ ক্ষমতাসহ ১১ ডিসেম্বর থেকে ম্যাজিট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন। ভোটের দিন এই সংখ্যা বাড়ানো দরকার।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়ম মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের ভোট হবে। এর আগে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা, ২ ডিসেম্বর বাছাই ও ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় রয়েছে।


সম্পর্কিত খবর