শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


ঈদের সুন্নাতসমূহ ও জরুরি মাসআলা-মাসাইল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শাইখুল হাদিস মুফতি মনসূরুল হক
প্রধান মুফতি, জামিয়া রাহমানিয়া আলী এন্ড নূর ঢাকা

দুই ঈদের রাত্রের ফযীলত: নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ঈদের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদতে নিমগ্ন থাকবে তার অন্তর সেই দিনও মৃত্যু বরণ করবে না যে দিন সকলের অন্তর মৃতপ্রায় হয়ে যাবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং-১৭৮২)

তাকবীরে তাশরীক

যিলহজ্জ মাসের নয় তারিখ ফজরের ফরয নামাযের পর হতে ১৩ তারিখ আসরের ফরযের পর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয নামাযের পর সকল সাবালক পুরুষ, মহিলার যিম্মায় উক্ত তাকবীর একবার বলা ওয়াজিব। তিনবার বলা ওয়াজিব নয়। পুরুষগণ উচ্চস্বরে আর মহিলাগণ নিম্নস্বরে পড়বে।

তাকবীরে তাশরীফ এই- اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ

ঈদের সুন্নাতসমূহ

১. অন্য দিনের তুলনায় সকালে ঘুম থেকে উঠা। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-২৮৫৯, বাইহাকী হাদীস নং-৬১২৬)

২. মিসওয়াক করা। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-২৮৯)

৩. গোসল করা। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নাম্বার-১৩১৫)

৪. শরী‘আত সম্মত সাজ-সজ্জা করা। (সহীহ বুখারী শরীফ হাদীস নাম্বার-৯৪৮)

৫. সামর্থ অনুযায়ী উত্তম পোষাক পরিধান করা। উল্লেখ্য, সুন্নাত আদায়ের জন্য নতুন পোষাক জরুরী নয়। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-২৮৯)

৬. সুগন্ধি ব্যবহার করা। (আদ্দুররুল মুখতার-২/১৬৮)

৭. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে মিষ্টি জাতীয় জিনিস, যেমন খেজুর ইত্যাদি খাওয়া। তবে ঈদুল আযহাতে কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া এবং ঈদের নামাযের পর নিজের কুরবানীর গোশত দ্বারা আহার করা উত্তম।(সহীহ বুখারী হাদীস নং-৯৫৩, আদ্দুররুল মুখতার-২/১৬৮)

৮. সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নাম্বার-১১৫৭)

৯. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সাদাকায়ে ফিতর আদায় করা। (আদ্দুররুল মুখতার-২/১৬৮)

১০. ঈদের নামায ঈদগাহে আদায় করা সুন্নাত। বিনা উযরে মসজিদে আদায় করা উচিত নয়। (সহীহ বুখারী হাদীস নাম্বার-৯৫৬)

১১. যে রাস্তায় ঈদগাহে যাবে সম্ভব হলে ফেরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরা। (সহীহ বুখারী হাদীস নাম্বার-৯৮৬)

১২. পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-২৯০)

১৩. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার সময় আস্তে আস্তে এই তাকবীর বলতে থাকা (اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ)

তবে ঈদুল আযহাতে যাওয়ার সময় এই তাকবীর উচ্চস্বরে পড়তে থাকবে। (বাইহাকী হাদীস নং-৬১৩০)

ঈদের মুস্তাহাবসমূহ

১. সাধ্যানুযায়ী অধিক পরিমাণে দান খয়রাত করা। (আদ্দুররুল মুখতার-২/১৬৯)

২. আল্লাহর পক্ষ থেকে ঈদ মনে করে আনন্দ এবং খুশি প্রকাশ করা। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-২৮৯)

৩. নিজ মহল্লার মসজিদে ফজরের নামায আদায় করা। ফজরের নামায জামা‘আতের সাথে সর্বদা আদায় করা অত্যন্ত জরুরী এবং ওয়াজিব। তবে দুই ঈদের ফজরের নামায মহল্লার মসজিদে জামা‘আতের সাথে আদায় করা অতি উত্তম। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-২৮৯-২৯০)

ঈদের নামাযের তরীকা

প্রথমে কান বরাবর উভয় হাত তুলবে। তারপর এই ভাবে নিয়ত করবে যে “আমি ঈদুল ফিতর বা ঈদুল আযহার দুই রাকা‘আত ওয়াজিব নামায এই ইমামের পিছনে পড়ছি।” অতঃপর তাকবীরে তাহরীমা বলে হাত নাভির নিচে বাঁধবে এবং ছানা “সুবহানাকা...” পুরা পড়বে। তারপর আরো তিন বার তাকবীর বলবে। প্রথম দুইবার হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে হাত ছেড়ে দিবে। এরপর তৃতীয় বার হাত কান পর্যন্ত তুলে আল্লাহু আকবার বলে হাত বেঁধে চুপ করে ইমামের কিরাআত শ্রবণ করবে।

এভাবে প্রথম রাকা‘আত আদায়ের পর দ্বিতীয় রাকা‘আতের কিরাআতের পর তিন বার হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে প্রত্যেকবার আল্লাহু আকবার বলে হাত ছেড়ে দিবে। এরপর চতুর্থ বার হাত না তুলে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবে এবং অবশিষ্ট নামায অন্যান্য নামাযের ন্যায় সম্পন্ন করবে। (ফাতাওয়ায়ে শামী-১/১৭২)

ঈদের মাসআলা-মাসাইল

১. মসজিদের বিছানা, চাটাই, শামিয়ানা ইত্যাদি ঈদগাহে নিয়ে যাওয়া দুরুস্ত। (ফাতাওয়ায়ে শামী-৩/৩৫৯)

২. যে ব্যক্তি দাড়ি মুন্ডায় অথবা একমুষ্ঠির কম রেখে কর্তন করে তাকে ইমাম বানানো জায়েয নেই। ঈদ এবং অন্যান্য নামাযের ক্ষেত্রে একই হুকুম। ইমামতের বেলায় উত্তরাধিকারীর দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। বরং শরী‘আতের দৃষ্টিতে ইমামতীর যোগ্য হওয়া জরুরী। (আদ্দুররুল মুখতার-২/৫৫৯)

৩. ঈদের নামাযের পূর্বে নিজ ঘরে বা ঈদগাহে ইশরাক ইত্যাদি নফল পড়া নিষিদ্ধ। ঈদের জামা‘আতের পরেও ঈদগাহে নফল নামায পড়া মাকরূহ। হ্যাঁ, ঘরে ফিরে ইশরাক, চাশত নফল পড়তে কোন অসুবিধা নেই। (আদ্দুররুল মুখতার-২/১৬৯)

৪. ঈদের নামাযের সালাম ফিরানোর পর মুনাজাত করা মুস্তাহাব। ঈদের খুতবার পরে মুনাজাত করা মুস্তাহাব নয়। (মুসনাদে আহমদ হাদীস-২২১৮)

৫. শর‘ঈ ওযর ব্যতীত ঈদের নামায মসজিদে আদায় করা সুন্নাতের খেলাফ। (আদ্দুররুল মুখতার)২/১৬৯)

৬. যদি ইমাম অতিরিক্ত তাকবীরসমূহ ভুল বশতঃ না বলে, আর ঈদের জামা‘আত অনেক বড় হয়, তাহলে ফেতনা ফাসাদের আশংকায় সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয় না। সুতরাং সিজদায়ে সাহু করবে না। আর যদি এমন হয় যে উপস্থিত সকলেই সিজদায়ে সাহু সম্পর্কে অবগত হতে পারে তাহলে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। (আদ্দুররুল মুখতার-২/৯২)

৭. ঈদের দ্বিতীয় রাকা‘আতের রুকুর তাকবীর ওয়াজিব। যদি কোন ব্যক্তি দ্বিতীয় রাকা‘আতের রুকুতে শরীক হয় তাহলে সে প্রথমে দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলবে। অতঃপর দাঁড়ানো অবস্থায় হাত তুলে অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলবে। এরপর রুকুর তাকবীর বলে রুকুতে শামিল হবে। (আদ্দুররুল মুখতার-২/১৭৪)

৮. যদি কেউ প্রথম রাকা‘আতে রুকুর পূর্বে জামা‘আতে শরীক হয় এবং তাকবীরে তাহরীমার পর দাঁড়ানো অবস্থায় হাত তুলে অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলার সুযোগ না পায় তাহলে রুকুতে গিয় অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলবে। তবে সে ক্ষেত্রে কান পর্যন্ত হাত উঠাবে না। (আদ্দররুল মুখতার-১/২৭৪)

৯. যদি প্রথম রাকা‘আত ছুটে যায় তাহলে ইমামের সালামের পর দাঁড়িয়ে প্রথমে, সূরা, কিরাআত পড়বে। অতঃপর রুকুর পূর্বে তিন বার হাত তুলে তিন তাকবীর দিবে। তারপর রুকুর তাকবীর বলে রুকু সিজদা করে যথা নিয়মে নামায সম্পন্ন করবে। (রুদ্দুল মুহতার-২/১৭৪)

১০. ঈদের ময়দানে জানাযার নামায পড়া জায়েয। প্রথম ঈদের নামায অতঃপর জানাযার নামায এরপর খুতবা হবে। (রদ্দুল মুহতার-৪/৩৫৬)

১১. বর্তমানে খতীব সাহেবগণ ঈদের খুতবার শুরুতে ও মাঝে মাঝে যে তাকবীরে তাশরীফ বলে থাকেন নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহে তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। বরং এ ব্যাপারে সঠিক মাসআলা হলো, প্রথম খুতবার শুরুতে নয় বার, দ্বিতীয় খুতবার শুরুতে সাত বার এবং দ্বিতীয় খুতবার শেষে মিম্বার থেকে নামার পূর্বে চৌদ্দ বার শুধু “আল্লাহু আকবার” বলবে। এটাই মুস্তাহাব। খুতবার সময় বা খুতবার মাঝে তাকবীরে তাশরীক বলবে না। হ্যাঁ, ঈদের নামায শেষে সালাম ফিরিয়ে তাকবীরে তাশরীক একবার বলবে। (আদ্দুররুল মুখতার-২/১৭৫)

১২. নামাযের পর ঈদের দুই খুতবা শ্রবণ করা ওয়াজিব। যদি খুতবা শোনা না যায়, তাহলে চুপচাপ বসে থাকবে। অনেক লোক সালামের পর খুতবা না শুনেই চলে যায়। যা সুন্নাতের খেলাফ। (আদ্দুররুল মুখতার-২/১৫৯)

১৩. খুতবার মধ্যে মুসল্লীদের কথা বার্তা বলা নিষেধ। এমন কি নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম উচ্চারিত হলে মুখে দরূদ পড়া নিষেধ। তবে অন্তরে পড়তে পারবে।

তেমনিভাবে খুতবার মধ্যে দান বাক্স বা রুমাল চালানোও নিষেধ এবং গুনাহের কাজ। (মুসনাদে আহমদ হাদীস নং-১০১৪০, আদ্দররুল মুখতার-২/১৫৯)

১৪. উভয় খুতবা শেষ হলে ঈদের নামাযের সকল কাজ শেষ হল, এরপর ঈদের আর কোন কাজ বাকী নাই। সুতরাং খুতবা শেষ হলে সকলেই নিজের বাড়িতে ফিরে আসবে। বর্তমানে দেখা যায় যে ঈদের খুতবার পরে লম্বা মুনাজাত হয়। এটা মুস্তাহাব নয়। তারপর লোকদের মধ্যে মু‘আনাকা বা কোলাকুলীর ভীড় লেগে যায় অথচ ঈদের সুন্নাতের মধ্যে কোলাকুলী করার কথা নাই।

সুতরাং এটা ঈদের সুন্নাত মনে করা ভুল। বরং এটা দেখা-সাক্ষাতের সুন্নাত। কোন ভাইয়ের সাথে অনেক দিন পরে সাক্ষাত হলে প্রথমে সালাম বিনিময় করবে। তারপর মুসাফাহা করবে। তারপর কোলাকুলী করবে। সুতরাং ঈদের নামাযের পূর্বে সাক্ষাত হলে তখনই এটা সেরে ফেলবে। আর যদি ঈদের খুতবার পর এরূপ কারোর সাথে সাক্ষাত হয় তাহলে কোলাকুলী করবে। এরূপ করবে না যে, সাক্ষাত হলো নামাযের পূর্বে কিন্তু কোলাকুলী করা হলো খুতবার পরে।(ফাতাওয়ায়ে শামী-৬/৩৮১, আহসানুল ফাতাওয়া-১/৩৫৪, সিলসিলাতুল আদাবিল ইসলামিয়াহ (মাকতাবায়ে শামেলা থেকে)

ঈদের নামায সম্পর্কিত আরো জরুরী দুটি মাসআলা

১. যদি কেউ ঈদের নামাযের প্রথম রাকা‘আতে রুকুর পূর্ব মুহূর্তে ইমামের সাথে শরীক হয় তাহলে যদি তার ধারনানুযায়ী তাকবীরে তাহরীমা পড়ার পর অতিরিক্ত তিন তাকবীর বললেও রুকু পাওয়ার আশা থাকে তাহলে নিয়মানুযায়ী অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলে রুকু করবে। আর যদি অতিরিক্ত তাকবীর তিনটি বললে রুকু পাবে না বলে ধারনা হয় তাহলে রুকুতে গিয়ে অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলবে।

যদি প্রথম রাকা‘আতই না পায় তাহলে ইমাম সাহেবের সালাম ফিরানোর পর ছুটে যাওয়া নামাযের জন্য দাঁড়িয়ে সানা পড়ার পর অতিরিক্ত ৩ তাকবীর বলবে। (আদ্দুররুল মুখতার:১/১৫০, আল বাহরুর রায়িক:২/২৮২)

২. বর্তমানে ঈদের খুতবার শুরুতে ও মাঝে মাঝে খতীব সাহেবগণ যে তাকবীরে তাশরীক বলে থাকেন; নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহে তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। বরং এ ব্যাপারে সঠিক মাসআলা হল: প্রথম খুতবার শুরুতে ৯ বার, দ্বিতীয় খুতবার শুরুতে ৭বার এবং দ্বিতীয় খুতবার শেষে মিম্বর থেকে নামার পূর্বে ১৪বার শুধু “আল্লাহু আকবার” বলবে। এবং এটাই মুস্তাহাব।

খুতবার সময় তাকবীরে তাশরীক বলবে না। হ্যাঁ! ঈদের নামায শেষে সালাম ফিরিয়ে তাকবীরে তাশরীক একবার বলবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-৪/২৫২, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/২৯০, বাইহাকী সুনানুল কুবরা-৩/৪২০, ফাতাওয়ায়ে শামী:২/১৭৫, আহসানুল ফাতাওয়া:৪/১২৭)

ব্যবসার হিসাব নিয়ে জটিলতা আর নয় (কল- 01771 403 470) ক্লিক করুন

নিজের আমলের হিসাব নেয়া

কুরআনে আছে, তোমার কিতাব অর্থাৎ তোমার আমলনামা তুমি পড়। ইক্বর কিতাবাক। হাশরের ময়দানে আল্লাহ বলবেন, তোমার হিসাব তুমি করো, তুমি কিসের উপযুক্ত, জান্নাত না জাহান্নাম। আর হাদীসে আসছেঃ “তুমি নিজে নিজের হিসাব নাও আল্লাহর হিসাব নেয়ার আগে।” প্রত্যেক ব্যবসায়ী নিজের ব্যবসার হিসাব রাখে। বছর শেষে সে হিসাব করে দেখে তার ব্যবসা ক্ষতির মধ্যে আছে না লাভের মধ্যে।

যদি লাভের মধ্যে থাকে তাহলে আরো লাভ কিভাবে হয় তার ফিকির করে, অন্যদের সাথে পরামর্শ করে। আর যদি ক্ষতির মধ্যে থাকে তাহলে ক্ষতি থেকে বের হয়ে লাভবান কিভাবে হওয়া যায় তার ফিকির করে, অন্যদের সাথে পরামর্শ করে।

আমরা যারা যিলহজ্জ মাস পেলাম এর মানে আমাদের জীবন থেকে এক বছর শেষ হয়ে গেল। আমরা প্রত্যেকে দিলকে স্বাক্ষী রেখে আমাদের সারা বছরের আমলের হিসাব বের করি। পাঁচ জিনিসের নাম দীন। ঈমান সহী শুদ্ধ করা এবং রাখা, ইবাদত সুন্নত তরীকায় করা, রিযিককে হালাল করা, মা-বাবার হক সহ বান্দার হক আদায় করা, আত্মশুদ্ধি তথা নিজের দিলকে পাক করার মেহনত করা।

ঈমানঃ হিসাব করা গত বছরের তুলনায় আমার ঈমান বাড়লো না কমলো, তাওয়াক্কুল তথা আল্লাহর উপর ভরসা বাড়লো না কমলো, তাকদীরের উপর একীন বাড়লো না কমলো ইত্যাদি ।

ইবাদতঃ আমার নামায আগের থেকে সুন্দর হলো কিনা, কুরআন তিলাওয়াত আগের থেকে সহী সুদ্ধ হলো কিনা ইত্যাদি।

রিযিক হালাল করাঃ আমার কামাই রোযগারের ব্যাপারে আমি আগের থেকে বেশী সচেতন কিনা, আমি কতটুকু যাঁচাই-বাঁছাই করে কামাই রোযগার করছি তার হিসাব নেয়া। খাতায় লিখে লিখে করা।

বান্দার হকঃ আমি বান্দার হকের ব্যাপারে গত বছরের তুলনায় কতটুকু সচেতন হয়েছি। আগের থেকে বেশী না কম, হিসাব নেয়া।

আত্মশুদ্ধিঃ দশটা গুন আমার হাসিল হলো কিনা। আমার সবর-শোকর কতটুকু বেড়েছে। আবার আমার দিলের যে দশটা রোগ তা কমেছে কিনা। তাকাব্বুর দূর করা, কূ-দৃষ্টি দূর করা, অন্যের মেয়েকে বা বিবিকে দেখা, গুনাহ বর্জন করছি কতটুকু, নাচ-গান করা বা দেখা বন্ধ করেছি কিনা।

এক হাদীসে এসেছে, এই উম্মতের এক দল সারা রাত নাচ-গান করবে তারপর সকালে উঠে দেখবে কেউ শুকর, কেউ বানর হয়ে গেছে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহ ‘আলাইাহ ওয়া সাল্লামের কথা কখনো মিথ্যা হয় না। যেহেতু হাদীসে এসেছে সুতরাং তা হবে। তাই সকলের সাবধান হওয়া চাই এবং অন্যকে সাবধান করতে হবে।

আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে যিলহজ্জ মাসের সকল আমল যার যা সাধ্য অনুযায়ী করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

আগের পর্ব: যিলহজ্জ মাসে করণীয় ও বর্জনীয়

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ