শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


এসিল্যান্ডের নির্দেশে মসজিদ না ভাঙায় ২ জনকে আটক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: সুনামগঞ্জের ছাতকে এসিল্যান্ডের নির্দেশে মসজিদ না ভাঙার ঘটনায় ইউএনওর কার্যালয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক রাখা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার বিকালে এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি), ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনিয়া সুলতানাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান আটক দুই ব্যক্তির আইনজীবী মো. মঈনুল ইসলাম।

জানা যায়,  জানা যায়, ছাতক পৌরসভার অর্ন্তগত পূর্ব ও পশ্চিম নোয়ারাই মহল্লাবাসীর মধ্যে মসজিদে নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে রমজান মাসে দু’পক্ষের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা মোকদ্দমা ও শালিস বৈঠক হয়।

কিন্তু কোন মিমাংসা না হওয়ায় এক পর্যায়ে পূর্ব নোয়ারাবাসী স্থানীয় গাজীর মোকাম সংলগ্ন খাস ভূমিতে মসজিদ নির্মাণ করেন। পূর্ব নোয়ারাবাসীর দাবি তাদেরকে পঞ্চায়েতি মসজিদে নামাজ পড়তে বিভিন্ন সময় পশ্চিম নোয়ারাই এর লোকজন বাঁধা নিষেধ করার কারনে তারা বাধ্য হয়ে গাজির মোকামের ভূমিতে মসজিদ নির্মাণ করেছেন।

কিন্তু এতে প্রতিপক্ষের কতিপয় লোকজন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনিয়া সুলতানার সাথে যোগসাজসের আশ্রয় নিয়ে তাদের দু’জনকে আটক করা হয় বলে জানান গ্রামবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসিল্যান্ড সোনিয়া সুলতানা ও ভূমি অফিসের কর্মচারীরা রোববার দুপুরে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

এ সময় সরকারী ভূমিতে অনুমোদন ছাড়া মসজিদ নির্মানের দায়ে পূর্ব নোয়ারাই গ্রামের মৃত আকবর আলীর পুত্র আতিম শাহ ও নীরু মিয়ার পুত্র মঞ্জুকে তার কার্যালয়ে নিয়ে আসেন এবং মসজিদ ভাঙ্গার নির্দেশ দেন।

এ খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোব্ধ হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে শত শত লোক সহকারী কমিশনার সোনিয়া সুলতানার কার্যালয়ে জড়ো হন এবং তার অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করতে থাকেন। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে এসিল্যান্ড সোনিয়া সুলতানা আটককৃতদের নিয়ে ইউএনও আবেদা আফসারীর কার্যালয়ে চলে যান।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ও তার পিছূ পিছু ইউএন্ও কার্যালয়ে গিয়ে ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে বির্তকিত এসিল্যান্ডের অপসারনের দাবি করেন। পরে রাত ৯টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারীর নেতৃত্বে সরকারী কর্মকর্তারা বিক্ষোভকারীদের শান্তনা বক্তব্য দিয়ে তাদের সাথে বৈঠকে বসেন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে রাত ১১টার দিকে আটককৃতদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে তাদেরকে আত্মীয় স্বজনের জিম্মায় ছেড়ে দেন।

এ ঘটনায় সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ লংঘন হওয়ার অভিযোগ এনে প্রথমে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টের রিট করেন এই আইনজীবী। শুনানি শেষে গত মঙ্গলবার আদালত এ অদেশ দেন।

আরও পড়ুন: আহ আন্দালুস! আমাদের হারানো ফিরদাউস!


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ